কলকাতা, ১০ আগস্ট- পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ভারতের আসামের নাগরিকপঞ্জী নিয়ে সাংবাদ সম্মেলন করেছেন বুদ্ধিজীবীরা। এসময় তারা তাদের ক্ষোভের কথা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিভাস চক্রবর্তী, সুবোধ সরকার, শুভাপ্রসন্ন, আবুল বাশার, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, প্রতুল মুখোপাধ্যায়রা। মোদি সরকারের পঞ্জীকরণের কঠোর বিরোধীতা করেন তারা। বিভাস চক্রবর্তী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ দেশে থাকার পরেও কেন দেশের নাগরিকদের ভয় দেখানো হবে, কেন বলা হবে যে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে? এমনটা তো হিটলারের জার্মানিতে হতো, এখন ট্রাম্পের আমেরিকায় হচ্ছে। আমরা নিজেরা কবে বাংলাদেশ থেকে এখানে চলে এসেছি। সেই সময়ে ভারতের নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট বের করেছিলাম। কিন্তু এখন তো সেসব দেখাতে পারবো না। আমার ভোটার কার্ড আছে, আধার কার্ড আছে, কিন্তু এখন এই বয়সে এসে বার্থ সার্টিফিকেট কোথায় পাবো? আমরা শঙ্কিত, আমাদের কী তাহলে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে? একই সুরে কথা বলেন চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন। কবি সুবোধ সরকার বলেন, আজ পর্যন্ত কোনওদিন জল আর পানি কে আলাদা করা যায়নি, আর যাবেও না। বিজেপি নেতার নাম না নিয়ে তিনি বলেন, টিভিতে বিজেপি নেতারা বলছেন, গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেবেন। কতবড় সাহস, এটা কী তাঁদের বাপের জমিদারি। একই সুরে কথা বলেছেন সাহিত্যিক আবুল বাশার। তিনি শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উক্তি উল্লেখ করে বলেন, আর কতো বার বাস্তুহারা হতে হবে এই কথাটা শীর্ষেন্দুদার মতো প্রবীণ সাহিত্যিক বলছেন। কতটা যন্ত্রণা থাকলে একথা বলা যায়। মোদি সরকার মানুষের অন্তরের কোন যন্ত্রণায় আঘাত করেছে, সেটা একবার ভেবে দেখুন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, প্রতুল মুখোপাধ্যায়রা। তাদের মুখেও ছিল মোদি সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে কঠোর সমালোচনার ভাষা। পাশাপাশি, দেশে একমাত্র রাজনৈতিক নেত্রী হিসাবে মমতা ব্যনার্জি যে এই লড়াইয়ে লড়ছেন, তাও একবাক্যে প্রায় সকলের স্বীকার করেছেন। সম্প্রতি ভারতের ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) আসাম রাজ্যে নাগরিকপঞ্জির সংশোধিত খসড়া তালিকা প্রকাশ করে। তাতে ওই রাজ্যের ৪০ লাখের বেশি বাসিন্দা তালিকা থেকে বাদ পড়ায় সেখানে চলছে উত্তেজনা। এর আগে আসাম সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যেই এএনআরসির নাগরিকপঞ্জি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য বাসিন্দাদের আবেদনপত্রের সঙ্গে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকে রাজ্যে বসবাস করছেন এমন প্রমাণপত্রও জমা দিতে হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রথম তালিকায় মাত্র এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের নাম ছিল। সংশোধিত তালিকায় আরও এক কোটির নতুন নাম যোগ হয়েছে। কিন্তু তারপরও বাদ পড়েছে ৪০ লাখের বেশি মানুষ, যা নিয়ে বাংলাভাষীদের মধ্যে রয়েছে উৎকণ্ঠা। সূত্র: সমকাল আর/১০:১৪/১০ আগস্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2nteJpa
August 11, 2018 at 04:33AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন