লাহোরে জন্মগ্রহণকারী পাকিস্তানের প্রথিতযশা সাবেক ক্রিকেটার তিনি। পাকিস্তান জাতীয় দলের ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক ছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। স্বল্পসংখ্যক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তিনিও ছিলেন একজন, যিনি পাকিস্তান ক্রিকেট দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। অথচ অভাবের তাগিদে রিকশাও চালিয়েছেন এই খ্যাতনাম ক্রিকেটার। ইউসুফ নিম্নশ্রেণীভূক্ত হিন্দু বাল্মিকি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন যারা পরবর্তীতে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন। বাবা ইয়োহানা মাসেহ রেলওয়ে স্টেশনে কাজ করতেন ও রেলওয়ে কলোনিতে বসবাস করতো তাদের পরিবার। শৈশবে তিনি ব্যাট চালাতে পারতেন না; তাই তার ভাইয়েরা টেনিস বলের সাহায্যে তাকে সাহস যোগাতেন। ১২ বছর বয়সে গোল্ডেন জিমখানা দলের দৃষ্টিতে পড়েন ও ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ত হন। লাহোরের ফরম্যান ক্রিস্টিয়ান কলেজে অধ্যয়ন করেন ও সেখানেই ১৯৯৪ সালের শুরুর দিক পর্যন্ত খেলতে থাকেন। একসময় তিনি ভাগ্যান্বেষণে ভাওয়ালপুরে রিকশাও চালাতেন। ১৯৯৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ডারবানে অনুষ্ঠিত টেস্ট ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটে ইউসুফের। ৫০-এর অধিক গড়ে সাত সহস্রাধিক রান করেন যা যে কোনও পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বেশি। এছাড়াও তার ২৪টি সেঞ্চুরিও রয়েছে। ২৭ বলে অর্ধ-শতক করেন যা বিশ্বের তৃতীয় দ্রুততম অর্ধ-শতক। ২০০৪ সালের বক্সিং ডে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১১১ রান করেন। ডিসেম্বর, ২০০৫ সালে লাহোরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৩ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার লাভ করেন। সাত মাস পর ২০০৬ সালের জুলাইয়ে সালে ইংল্যান্ড সফরে একই দলের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ২০২ ও ৪৮ রান করে পুণরায় ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার লাভ করেন। হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে ১৯২ ও ওভালের চূড়ান্ত টেস্টে ১২৮ রান সংগ্রহ করেন। ১৯৯৮ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। ওডিআইয়ে ৪০-এর অধিক গড়ে নয় সহস্রাধিক রান করেন যা বিখ্যাত ব্যাটসম্যান জহির আব্বাসের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড়। ২০০২-২০০৩ মৌসুমে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ৪০৫ রান সংগ্রহ করেন আউট না হয়েই। ২৩ বলে অর্ধ-শতক এবং ৬৮ বলে সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ২০০২ এবং ২০০৩ সালে ধারাবাহিকভাবে বিশ্বের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ছিলেন। ২০১০মসালের ১০ মার্চ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ইউসুফকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ২০০৯-১০ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের পরাজয়ের পর তদন্ত কমিটির সুপারিশই এর প্রধান কারণ। পিসিবির আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানানো হয় যে, তিনি পুনরায় দলের পক্ষ হয়ে খেলতে পারবেন না। এরপর তিনি এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ২০১০ সালের ২৯ মার্চ তারিখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তর থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। কিন্তু জুলাই/আগস্ট, ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের মারাত্মক বিপর্যয়ের পর অবসর ভেঙ্গে তাকে পুণরায় দলে যোগদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ আরএস/০৮:০০/ ১০ আগস্ট



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2MEs496
August 11, 2018 at 12:30AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top