ঢাকা, ২৯ আগস্ট- আমার না জ্বর আইছে। বুঝছছ লালাই, খাওয়া-দাওয়া ঠিকভাবে করবা। এই যে আমি খাওয়া-দাওয়া ঠিকভাবে করি নাই। আমার জ্বর আইছে। পোষা প্রাণীটির গায়ে হাত বুলাতে বুলাতে পরম মমতায় উপরের কথাগুলো বলছিলেন লালাই নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা আফরান নিশো। কৃষকের সঙ্গে তার পোষা প্রাণীটির ভালোবাসা ঠিক কতখানি গভীর, এই দৃশ্যটি তা বলে দেয়। নাটকটি দেখতে হলে যেতে হবে ইউটিউব চ্যানেল ধ্রুব টিভিতে। চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন মাবরুর রশিদ বান্নাহ। আর আফরান নিশোর সঙ্গে অভিনয় করেছেন তানজিন তিশা। আমাদের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি। জীবিকার তাগিদে কৃষক গরু-ছাগল পালন করে। এই পোষা প্রাণীটির প্রতি কৃষকের যে ভালোবাসা এবং সেটা যে তার নিজের সন্তানের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়, সেটা নিয়েই চমৎকার গল্পটি লিখেছেন আনিসুর বুলবুল। একবারের বসায় লালাই নাটকটি দেখে শেষ করতে কোনো রকম বেগ পেতে হয়নি। এমনকি দম ফেলার মতো ফুসরত মেলেনি। এবারের ঈদুল আযহা উপলক্ষে নির্মাণ করা এই নাটক দর্শকের মনে প্রভাব ফেলতে বাধ্য। দর্শক কখনো আবেগে কুঁকড়ে উঠবে আবার কখনো তাদের চোখে পানি ছলছল করবে বলেই মনে হচ্ছে। ক্যামেরা সঞ্চালনা এককথায় অসাধারণ। প্রতিটি দৃশ্যে পরিচালক বেশ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। অভিনেতা নিশোকে যে পাত্রে রাখা হয় তিনি খুব সহজেই সে পাত্রের আকার ধারণ করতে পারেন। তাছাড়া এ ধরনের চরিত্র এতো সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হতো না। নাটকটিতে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সমালোচনার জায়গা আছে। প্রথমেই আসি নাটকটির কিছু অসঙ্গতির ব্যাপারে। ১। যিনি গরুর দুধ দোয়ালেন, ওই চরিত্রের সঙ্গে তার চকচকে চেহারা ঠিক যায় না। ২। ৩০ হাজার টাকার গরুতে ৪ হাজার টাকার হাসিল বোধহয় বাংলাদেশের কোথাও নেই। ৩। নিশোর হাত-পা বাঁধাটা বেশ সাবলীল মনে হয়েছে। ওই দৃশ্যে মজার বা হাসির কিছুও দেখানো যেত। ৪। কোনো কোনো দৃশ্যে অভিনয়শিল্পীদের সংলাপ বলার ক্ষেত্রে দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সামান্য এই অসঙ্গতিগুলোর দিকে আরেকটু বাড়তি নজর দিলে নাটকটি আরো প্রাণবন্ত হতে পারতো। এবারে আসি অন্য প্রসঙ্গে। কোমরে ব্যথা থাকার পরেও মেয়ের লজেন্স কেনার বায়না মেটাতে তাকে কাঁধে করে হাঁটার দৃশ্যটি দর্শকদের আবেগী করে তোলে। মেয়ের বায়নার কাছে পৃথিবীর সব বাঁধা-ই যে তুচ্ছ, সেটা চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মাতা। সন্তান এবং গরু দুটি চরিত্র পাশাপাশি এগিয়ে চলেছে। নাটকটি দেখার পর দর্শকদের মনে জীবের প্রতি ভালোবাসা আরো বাড়বে বলেই মনে হয়। গরুকে মশার কামড় থেকে বাঁচাতে ধোঁয়া দেওয়ার দৃশ্যটাতে নির্মাতা বেশ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। নাটকের সর্বশেষ দৃশ্যে, গরুকে উদ্দেশ্য করে কালু যখন বলে ওঠে, তুই একটা ভালো কাজে যাচ্ছিস, তোকে কোরবানি দেওয়া হবে। কথাগুলো শোনার পর যে কোনো দর্শকের মনে কোরবানি সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। প্রিয় পোষা প্রাণীটিকে কোরবানির মাধ্যমে নিজের মেয়ের চিকিৎসা যেমন হলো, আল্লাহর আদেশও পালন করা হলো। এত সুন্দর একটি থিম নিয়ে এর আগে কখনো এ ধরনের আয়োজন চোখে পড়েনি। নাটকের শেষে টাইটেল কার্ডের সঙ্গে আবহসঙ্গীতে পোড়া মন তোমায় ভাবিয়া, চোখ বুইজা-ও থাকে জাগিয়া দর্শকের আবেগকে আরেকটু বাড়িয়ে দেয়। ফলে নাটকটি শেষ হয়ে গেলেও তার রেশ দর্শকের মনে থেকে যাওয়ার কথা। সমালোচক : এসএম নাহিদুর রহমান সূত্র: জাগোনিউজ২৪ আর/১৭:১৪/২৯ আগস্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2LAKK8x
August 30, 2018 at 12:07AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন