সিলেটের বিভিন্ন রোডে শামীমের টুকেন বানিজ্য : ঘটছে দূর্ঘটনা-প্রাণহানী

received_1662764680519318বিশ্বনাথ  (সিলেট) প্রতিনিধি :: মনরফাঁদ সিলেটের বিভিন্ন হাইওয়ে রোড ও জেলায় বিভিন্ন রোডে প্রতিটি অটোরিকশা গাড়ির সামনের গ্লাসে বিভিন্ন নামের স্টিকার রয়েছে। যেমন- দৈনিক আজকের জনবাণী, ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস্ অফ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, দক্ষিণ সুরমা ভূইয়ার পাম্প ভার্থখলা, দক্ষিণ সুরমা সিলেট ইত্যাদি। অহরহ ঘটছে দূর্ঘটনা এবং ঝরছে বনি-আদমদের তাজাপ্রাণ। আর এর মূলে রয়ে অবৈধ যান চলাচল। টুকেনবাজ, চাঁদাবাজ ও স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতির কারণে বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ যান চলাচল। বন্ধ হচ্ছে না সড়ক দূঘর্টনা ও লাশের মিছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিলেট- ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ হাইওয়ে রোডে যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাস ও মালবাহী ট্রাক ছাড়া যাত্রীবহনকারী অন্য কোন যানবাহন চলাচলের অনুমতি নেই। যেমন সিএনজি অটোরিক্সা, লেগুনা, ইমা ও নাসিমন প্রভৃতি ছোট গাড়ির যাত্রী সার্ভিস সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা লংঘন করে যাত্রী বহনের ফলেই অহরহ ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা, ঘটে চলেছে যাত্রীদের প্রাণহানী। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ যানবাহন রোধে দায়িত্বরত প্রশাসনিক কর্তা-ব্যক্তি, চাঁদাবাজ ও টুকেনবাজরা এ রোডে অবৈধ যানব্হান চলাচলের সুযোগ করে দিয়েছেন। বিনিময়ে প্রতিমাসে অবৈধ যানবাহন থেকে কামাই করছেন লাখো-কোটি টাকা।

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সিলেট ওসমানীগর,বিশ্বনাথ রোডে বৈধ যানবাহনের তিনগুন বেশি অবৈধ যানবাহন। যার সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। এগুলোর মধ্যে সিএনজি অটোরিক্সার সংখ্যা প্রায় দেড়হাজার। বাদ বাকি অবৈধ লেগুনা ইমা, ও নাসিমন। এসব যানবাহনের মধ্যে অধিকাংশের রেজিস্ট্রেশন পর্যন্ত নেই, নেই চালকদের ড্রাইভিং লইসেন্সও। শুধুমাত্র ‘পরিটিতি টুকেনই’ এসব যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও চালকদের মূল লাইসেন্স।

অভিযোগে প্রকাশ, সিলেট পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের অসাধু কর্তা-ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে চাঁদাবাজ দৈনিক আজকের জনবাণীর সাংবাদিক পরিচয় দানকারী মোস্তফা কামাল শামীম সিএনজি অটোরিক্সাসহ নিষিদ্ধ গাড়িগুলো চলাচলের ‘পুলিশের পরিচিতি টুকেন’ ব্যবসা করে থাকে। শামীমের দেয়া টুকেন দেখলেই কোন গাড়ি আর আটকায় না ট্রাাফিক, হাইওয়ে পুলিশ সহ দায়িত্বরত জেলা ও এসএমপি পুলিশ। পুলিশের টুকেন বানিজ্যের মূল হোতা শামীম -এর বাড়ি সিলেটের কানাইঘট এলাকায়।

মোস্তফা কামাল শামীম নিজেকে অনটেস্ট ও রেজিস্ট্রিবিহীন সিএনজি অটোরিক্সার লাইসেন্স দাতা দাবি করে থাকে। ভুয়া ও বেআইনী টুকেন দিয়ে এ রোডে সিএনজি অটোরিক্সার অবৈধ চলাচল ও যাত্রীবহন চালু করে রেখেছে। তার দেয়া ‘পুলিশ পরিচিতি’ টুকেন গাড়ির গøাসে লাগানো থাকলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারীদের কোন সংস্থাই এ গাড়ি আটকায় না। বিগত কয়েক মাস ধরে এভাবে ‘পুলিশ পরিচিতি টুকেন’ দিয়ে শামীম প্রত্যকটি অটোরিক্সা থেকে প্রতিমাসে ৭শ’ ও ১হাজার থেকে ১৫ শ’ টাকা করে আদায় করে থাকে। শামীমের দেয়া টুকেন দেখলে পুলিশ গাড়ি না আটকালেও পুলিশ স্বীকার করে না এ টুকেন তাদের। শমীম নিজেকে সাংবাদিকরে গড ফাদার দাবি করে থাকে। অথচ অনুসন্ধানে সে কোন সাংবাদিক কিংবা কোন পত্রিকার দাইয়ত্বশীলও নয়। একটি লাঠিয়াল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে রাহাজানি করে অবৈধ যানবাহন থেকে জোর করে আদায় করে থাকে সে। এমনকি টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে টুকেন না নিয়ে কোন গাড়ি পাম্প থেকে তেল-গ্যাসও নিতে পারে না। শামীম নিজেকে পুলিশ-প্রশাসনের এজেন্ট দাবি করে থাকে। এজেন্ট দাবিতে দেদারছে চাঁদাবাজি ও টুকেন বানিজ্য করলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। দ্বিতীয়ত সাংবাদিক শামীমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে, তিনি জানান- ১২ শত টাকা দিয়ে ১ মাসের জন্য একটি স্টিকার দেওয়া হয়। যদি নিতে চান, তাহলে বিকাশে টাকা পাঠাতে হবে। পরে বিশ্বনাথ একটি দোকান থেকে স্টিকার সংগ্রহ করতে হবে। ঐ দোকানে ফোন করে জানিয়ে দিবেন। তিনি আর বলেন- যদি সার্জেন্ট গাড়ি ধরে- বড় ভাই সাংবাদিক শামীমের গাড়ি বলে দিলে সার্জেন্ট গাড়ি ছেড়ে দিবে।

তবে দৈনিক আজকের জনবাণী সম্পাদক মোস্তফা কামালের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে, প্রথমে বলেন- এই স্টিকার আমার ছোট ভাই দিতে পারে। পরে আমাকে চিনে পেলার পর বলেন- স্টিকার বিক্রির বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে এরকম স্টিকার বিক্রি করছে হাইওয়ে পুলিশ সহ অনেকে সার্জেন্টের নাম প্রকাশ করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়- দৈনিক আজকের জনবাণী, ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস্ অফ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন স্টিকারের মধ্যে মোস্তফা কামাল শামীমের মোবাইল নাম্বার রয়েছে। অটোরিকশা মালিক ও চালকের মধ্যে অনেকে জানান- এই সব স্টিকার না হলে বিশ্ব রোড ও শহরে গাড়ি চালানো যায় না। তাই প্রতি মাসে ৫শত টাকা থেকে ১২শত টাকা দিয়ে দালাল দের মধ্যে স্টিকার কিনে নিতে হয়। তাহলে নিশ্চিন্তে গাড়ি চালানো যায়। আর কোন ট্রাফিক বা সার্জেন্ট আমাদের কে সিগন্যাল করবে না।

আমাদের সিলেট জেলায় প্রায় ৪০ হাজার অটোরিকশা আছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সিলেট অফিস থেকে জানা যায়- ২১ হাজার ২৩২ টি অনটেস্ট রয়েছে। তালিকা ভুক্ত ছাড়া তো আরো অনেক রয়েছে। যদি গড় ২৫ হাজার অটোরিকশা ১ হাজার টাকা করে একটি স্টিকার ক্রয় করে, তাহলে প্রতি মাসে আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ট্রাফিক সার্জেন্টের কর্মকর্তারা। সারা বাংলাদেশ থেকে সরকার একদিকে রোড পারমিট, ফিটনেস, ড্রাইভিং লাইসেন্সের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কয়েক হাজার কোটি টাকা হতে পারে? সরকার এই সব গাড়ি রেজিস্টেশন বন্ধ করায় যেমন অটোরিকশা গাড়ির মালিকরা চরমভাবে ভোগান্তি করছেন। মধ্যভাগে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র।



from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ https://ift.tt/2nFYXaR

August 15, 2018 at 06:13PM
15 Aug 2018

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top