ক্রিকেট বলের আঘাত থেকে বাঁচতে ব্যাটসম্যানদের জন্য বেশকিছু সুরক্ষার ব্যবস্থা আছে। আঘাত থেকে মাথার সুরক্ষায় আছে হেলমেট। একই কারণে হেলমেট ব্যবহার করেন উইকেটকিপার, এমনকি এখন ফিল্ড আম্পায়ারদেরও হেলমেট পড়তে দেখা যায়। কিন্তু বোলারদের জন্য তেমন কোনো সুরক্ষার ব্যবস্থা এতদিন ছিল না। বিশেষ করে স্ট্রেইট ড্রাইভ থেকে অনেক সময় আঘাত পেতে দেখা যায় বোলারদের। দীর্ঘদিন এই বিষয়ে আলোচনার পর একটা সুরাহা এসেছে। চলে এসেছে বোলারদের জন্যও হেলমেট। বোলারদের ফলো-থ্রুর পর অনেক সময় ব্যাটসম্যানদের সপাটে মারা স্ট্রেইট ড্রাইভ বোলারদের জন্য বিপদ ডেকে আনে। সেকেন্ডের ভগ্নাংশে একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আর তা থামানোর কোনো উপায় থাকেনা। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই যুগে ব্যাটসম্যানরা অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন। বিপদটা তাই এই ফরম্যাটেই বেশি। আর তাই বোলারদের জন্য হেলমেট প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেওয়া। বোলারদের সুরক্ষায় হেলমেট তৈরির উদ্যোক্তা অস্ট্রেলিয়ার ক্রীড়াসামগ্রী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোকাবুরা স্পোর্টস। বোলারদের জন্য বিশেষ এই হেলমেট বানানোর চিন্তাকে সমর্থন জানিয়েছে এমসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি। গত সপ্তাহে লর্ডসভিত্তিক মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসিসি) এবং ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে এক আলোচনায় বিষয়টি উঠে আসে। এমসিসিসির প্যানেলে সভাপতি ছিলেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইক গ্যাটিং এবং তার সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত হন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক রিকি পন্টিং ও সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। আলোচনা শেষে তারা একটি মিডিয়া রিলিজ প্রকাশ করেন। সেখানে তারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাটসম্যানদের স্ট্রেইট ড্রাইভে বোলারদের আঘাত পাওয়ার কিছু ভিডিও ফুটেজ নিয়ে তারা আলোচনা করেন। সেই ফুটেজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গত বছর নটিংহ্যামশায়ারের লুক ফ্লেচারের ঘটনা, যা চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে ক্রিকেট বোলারদের হেলমেট ব্যবহারের ঘটনা একেবারে নতুন নয়। নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ওটাগোর হয়ে খেলা ওয়ারেন বার্নস নিজের বোলিং অ্যাকশনের কারণে নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে হেলমেট পরিধান করেছিলেন। বোলিংয়ের ফলো-থ্রুর সময় মাথা অনেকটা নিচু হয়ে যাওয়ায় স্ট্রেইট ড্রাইভের সময় মাথায় আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই তার অমন ব্যবস্থা নেওয়া। তার মানে প্রথম বোলার হিসেবে হেলমেট পড়ার অভিজ্ঞতা এরইমধ্যে হয়ে গেছে বার্নসের। ওই হেলমেট তিনি নিজে তার কোচ রব ওয়াল্টার মিলে ডিজাইন করেছিলেন। তারা দুজন বেসবল আম্পায়ার আর ট্র্যাক সাইক্লিস্টদের ব্যবহৃত হেলমেটের আদলে তৈরি করেছিলেন। সেই ডিজাইন নিয়েই কাজ করবে কোকাবুরা। ক্রিকেট মাঠে বোলারদের সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকার ফলে বহু দুর্ঘটনা ঘটার উদাহরণ আছে। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পেসার জো মেন্নি একবার নয়, দুইবার এই ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। একবার সিডনি সিক্সার্সের নেট অনুশীলনের সময় বল লেগে তার মাথা ফেটে যায়, আরেকবার চলতি বছরের শুরুর দিকে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সময়। দ্বিতীয়বারের ঘটনায় তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারই হুমকির মুখে পড়ে যায়। বোলারদের আঘাত পাওয়ার এমন ঘটনায় জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নামও। তবে এই ক্ষেত্রে আঘাতপ্রাপ্ত বাংলাদেশি নন, জিম্বাবুইয়ান। ২০১১ সালের ২১ আগস্ট বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের ইনিংসের পঞ্চাশতম ওভারে বল করতে আসেন জিম্বাবুইয়ান পেসার কিগান ম্যাথ। ওভারের শেষ বলটা হয় ফুলটস আর তা সপাটে মারেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান নাসির হোসেন। সেই বল আঘাত হানে বোলারের মুখে। বোলার মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আর টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায় আঘাতে কয়কটি দাঁত হারিয়েছেন কিগান ম্যাথ। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্যই বোলারদের জন্য হেলমেটের ব্যবস্থা করা ছিল সময়ের দাবি। সূত্র: বাংলানিউজ২৪ এমএ/ ০৪:৩৩/ ১৩ আগস্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2KOq5gT
August 13, 2018 at 10:40PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন