সিলেটের লালাবাজারে স্পিড ব্রেকার স্থাপনের দাবী

road-picবিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে, মো. আবুল কাশেম ::সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার এলাকায় আশঙ্কাজনক হারে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে। সড়ক দুর্ঘটনা যেন গোটা এলাকায় নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের লালাবাজার এলাকায় বেপরোয়া বাস চালকদের দৌরাত্ম্য না থামায় বাড়ছে দুর্ঘটনা। নিয়ন্ত্রহীনভাবে গাড়ী চালাতে গিয়ে বাস-ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ পথচারী ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের। অনেক সময় ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষকে চাপা দিচ্ছে বেপরোয়া গাড়ী। তাই অত্র এলাকার জনগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজের তাগিদে যাতায়াত করছেন এসব এলাকায়। কিন্তু বেপরোয়া গাড়ী তাদেরকে নিস্তার দিচ্ছে না। ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে প্রাণ ঝরছে অনেকের। প্রিয়জন হারানোর বেদনায় শোকাহত অত্র এলাকার অধিবাসীগণ।

লালাবাজারের গত ১৫ আগস্ট ট্রাক চাপায় বিশ্বনাথের এক ব্যক্তি নিহত হন। ১৮ আগস্ট দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুরের এক ব্যবসায়ী, অপর আরেক দুর্ঘটনায় ট্রাক চাপায় নিহত হন একজন। গত ২৮ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে সিলেটগামী মামুন পরিবহনের বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে লালাবাজার ল্যান্ডমার্ক শপিং সেন্টারের শিফা ফার্মেসীর ম্যানেজার কামরুল ইসলাম নিহত হন। তিনি সিলাম ইউনিয়নের গোয়ালগাঁও গ্রামের মৃত মনির মিয়ার ছেলে। সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ দিনের মধ্যে একই স্থানে ৪টি প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে।

লালাবাজার এলাকায় ঘন ঘন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটায় মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে স্প্রীড ব্রেকার স্থাপন ও ধীর গতিতে যানবাহন চলাচলের দাবী দীর্ঘদিন থেকে জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। দাবীগুলো পূরণ না হওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনায় প্রাণহানী ঘটছে। অথচ গত মঙ্গলবারের দুর্ঘটনার পর সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরুধের খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এলাকার জনগণের ৩টি প্রাণের দাবী বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। ঘটনার দু’দিন পর সাময়িকভাবে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত হলেও বাস চালক আটক হয়নি। এমনকি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবী লালাবাজার এলাকায় স্পীড ব্রেকার স্থাপনের ব্যাপারে এখনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

লালাবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, লালাবাজার এলাকায় বর্তমানে বেপরোয়া ঘাতক চালকের জন্য দুর্ঘটনার পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। এলাকাবাসীর জীবন রক্ষার্থে স্পিড ব্রেকার বসানো দরকার। এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

দক্ষিণ সুরমা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমদ শফি সাংবাদিকদের বলেন, লালাবাজার সড়ক দুর্ঘটনা ঠেকাতে হলে ট্রাফিক পুলিশের টহল বাড়াতে হবে। স্পিড ব্রেকার যাথাযথ স্থানে স্থাপন হলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এ ব্যাপারে লালাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পীর ফয়জুল হক ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, বেপরোয়া বাস-ট্রাকের কারণে লালাবাজার এলাকায় অহরহ দুর্ঘটনা হচ্ছে। লালাবাজার এলাকার চারটি জায়গায় স্পিড ব্রেকার বসানো হলে এ অঞ্চল দুর্ঘটনা মুক্ত হবে। বাজারের কেন্দ্রস্থল ও স্কুলের সামনে এই জায়গাগুলোতে স্পিড ব্রেকার বসানো অতিব জরুরি।

দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ খায়রুল ফজল সাংবাদিকদের বলেন, লালাবাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ইতিমধ্যে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রশাসন এবং এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণকে সাথে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।



from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ https://ift.tt/2LzL9YZ

August 30, 2018 at 07:56PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top