আবু ধাবি, ২৫ সেপ্টেম্বর- বাংলাদেশকে তাহলে বড় একটা কাজই করে দিয়েছে ভারত! টানা দুই ম্যাচে বিধ্বস্ত করে ভারতীয়রা পাকিস্তানিদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে! বুধবার বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সুপার ফোরের শেষ ম্যাচটি রূপ নিয়েছে অলিখিত সেমি-ফাইনালে। যারা জিতবে, তারাই ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারতের। ভারত-ধাক্কার প্রভাবে মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে ভয়ে কাঁপছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ ম্যাচকে সামনে রেখে পাকিস্তানের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ মিকি আর্থার স্পষ্ট করেই বললেন, পাকিস্তান শিবিরে ভয় ঢুকে গেছে! ভয়ের জন্মটা আত্মবিশ্বাস সঙ্কটের কারণে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে কোনো রকমে জিতলেও ভারতের কাছে দুই ম্যাচেই অসহায় আত্মসমর্পন করেছে পাকিস্তান। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করা দূরের কথা, ন্যুনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়ে তুলতে পারেনি। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই ফুটে উঠেছে পাকিস্তানীদের অসহায়ত্ব। অথচ ১৫ মাস আগে পাকিস্তানের এই দলটিই ভারতকে হারিয়ে প্রথম বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছিল। কেন দলের এমন ছন্নছাড়া অবস্থা? পাকিস্তান কোচ বললেন, আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে দল। এখন ভয় ঢুকে গেছে, সত্যি বলতে, এই মুহূর্তে খেলোয়াড়দের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের সঙ্কট চলছে। ব্যর্থতার ভয় কিছুটা হলেও ড্রেসিংরুমে গ্রাস করেছে। ক্রিকেট দল হিসেবে এখন আমরা কি অবস্থায় আছি, সেটা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি আমরা। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের বড় নায়ক ছিলেন ওপেনার ফখর জামান এবং দুই পেসার মোহাম্মদ আমির ও হাসান আলি। কিন্তু বর্তমানে এই তিনজনেই খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করা ফখর জামানের ব্যাট একেবারেই হাসছে না। এশিয়া কাপে এ পর্যন্ত খেলা তিন ম্যাচের দুটিতেই ডাক মেরেছেন। অন্য ম্যাচটিতে করেছেন ৩১ রান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী পেসার হাসান আলির বোলিংয়ের ধার কমে গেছে। এশিয়া কাপের তিন ম্যাচে তিনি নিয়েছেন মাত্র ১ উইকেট। দলের প্রধান স্ট্রাইক বোলার মোহাম্মদ আমির তো সর্বশেষ ৫ ওয়ানডেতেই উইকেটশূন্য। তারকা খেলোয়াড়দের এমন বাজে পারফরম্যান্স দলে ভয় তো ঢোকাবেই। আত্মবিশ্বাস নড়ে যাওয়ার কারণেই যে এমনটা হচ্ছে, সেটা বোঝাতে মিকি আর্থার উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন ফখর জামানকে, ক্রিকেট আত্মবিশ্বাসের খেলা। অথচ ফখর জামানকে দেখুন। আমরা সবাই জানি ও কতটা অবিশ্বাস্য খেলোয়াড়। ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়া খেলোয়াড় সে। আমাদের প্রত্যাশা থাকে ও ভালো শুরু এনে দেবে দলকে। কিন্তু এই মুহূর্তে নিজের খেলা নিয়ে ওর মধ্যে যেন দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে। শুধু হতাশার গান নয়। আশার গানও শুনিয়েছেন পাকিস্তান কোচ। দিয়েছেন ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানোর ঘোষণা। রোববার ভারতের কাছে ৯ উইকেটে হেরেছে পাকিস্তান। এই ম্যাচের উদাহরণ টেনে বলেছেন, ৯ উইকেটে হেরে যাওয়াটা পাকিস্তানের জঘন্য পারফরম্যান্সগুলোর একটি হয়ে থাকবে। তবে আমাদের তো এখানেই থেমে যাওয়ার উপায় নেই। এগিয়ে যেতে হবে। আশা করি দ্রুতই আমরা ঘুরে দাঁড়াব। এবং আরও ভালো এবং শক্তিশালী দল হিসেবে ফিরে আসব। মিকি আর্থারকে হতাশ হতে হবে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের সর্বশেষ ম্যাচগুলোর দিকে তাকালেও। আগে যাই ঘটুক। দুই দলের সর্বশেষ তিন ওয়ানডেতেই জয়ী দলের নাম বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে নিজেদের মাঠে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ করেছিল পাকিস্তানকে। এর পর দুই দল আর মুখোমুখি হয়নি। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর বুধবার আবার মুখোমুখি হবে দুই দল। তার আগে পাকিস্তান শিবিরের ভয়ের সংবাদটা মাশরাফিদের আত্মবিশ্বাস নিশ্চয় আরও বাড়িয়ে দেবে। রোববার আফগানিস্তানের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয়ের পর বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস এমনিতেই এখন টগবগে। টানা দুই হারে পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। রোববার জয় সেখান থেকে শুধু ফিরেই আনেনি, দলের মধ্যে আমরা পারব বিশ্বাসটাও বুনে দিয়েছে। এখন প্রয়োজন শুধু নিজেদের এই টগবগে আত্মবিশ্বাস আর প্রতিপক্ষের ভয়কে কাজে লাগানো। মাশরাফিরা তা পারবেন? আরএস/ ২৫ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2zsV7Z8
September 26, 2018 at 12:25AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন