ঢাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর- ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সুরকার ও সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম। মাঝখানে প্রায় এক মাসের বেশি সময় চলে গেল। এখন তিনি কেমন আছেন? চিকিৎসা করেছেন? এসব খবর জানতেই রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, বাংলাদেশের নাম খ্যাত সুরকারের সাথে যোগাযোগ করি। মুঠোফোনে সুজেয় শ্যাম জানান, চিকিৎসার জন্য গেল ৪ আগস্ট বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন তিনি। ক্যানসারের অপারেশন হয় ২২ আগস্ট। অপারেশন শেষে ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফিরেছেন। আবার অক্টোবরের ১০ তারিখে বেঙ্গালুরুর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ছাড়বেন তিনি। এবার যাওয়ার পর রেডিও থেরাপি দিবে ডাক্তাররা। প্রায় দুই মাস সেখানে চিকিৎসা শেষে ডিসেম্বরের শেষের দিকে দেশে ফিরবেন। অপারেশনের পর শরীরের বর্তমান অবস্থা জানিয়ে স্বাধীন বেতার বাংলার এই শিল্পী বলেন, আমার অপারেশনটা একেবারে লাস্ট স্টেজে হয়েছে। ডাক্তাররা আমাকে জানিয়েছে, যদি আর কয়েকদিন পরে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিতাম তাহলে নাকি সারা শরীরে ছড়িয়ে যেত ক্যানসারটি। সেই হিসেবে আমি মোটামুটি ভাগ্যবান। আর অপারেশনের পর শরীর কিছুটা দুর্বল হয়েছে। এমনিতেইতো বৃদ্ধ হয়েছি। বয়সতো আর কম হয়নি। সবার আশির্বাদ আর দোয়াতে আমি এখনো ভালো আছি। আশা করি সামনেও ভালো থাকবো। ক্যানসারের চিকিৎসা, অপারেশন এবং সামনে রেডিও থেরাপি। এগুলোতো বেশ ব্যয়বহুল, কীভাবে সামলাচ্ছেন?-এমন প্রশ্নে সুজেয় শ্যাম বলেন, আমার ক্যানসারের খবর শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেকেছিলেন। ডেকে নিয়ে আমাকে বললেন, আপনি বাংলাদেশের একজন মুক্তিযোদ্ধা, আপনি চিকিৎসা খরচ এগুলো নিয়ে কোনো চিন্তা করবেন না। তারপর প্রধানমন্ত্রী আমার নামে সঞ্চয়পত্র করে দিয়েছেন এবং চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন। একজন শিল্পীর পাশে এভাবে দাঁড়ানোয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আপ্লুত সুজেয় শ্যাম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন আপনারা শিল্পী, মুক্তিযোদ্ধা। আপনারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। আপনাদের ভালো মন্দ আমরা দেখবো। এমন কথা যখন একজন শিল্পীকে দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখনতো এমনিতেই আমি সুস্থ হয়ে গিয়েছি। আমার তখন এমনই মনে হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী দুঃখপ্রকাশ করে বলেছেন আপনাদের মতো শিল্পীদের এই দেশে আরো বহুদিন বেঁচে থাকা দরকার। নিজেকে ভাগ্যবান দাবী করে সুজেয় শ্যাম বলেন, আমি খুব ভাগ্যবান একজন মানুষ। আমার অসুস্থতার খবরে দেশের প্রতিটি সংবাদ মাধ্যম যেভাবে এগিয়ে এসেছে এটা অভাবনীয় ব্যাপার। একজন শিল্পীর জন্য এটা আত্মতৃপ্তির। কথা প্রসঙ্গে বাংলাদেশকে সত্যিকার অসাম্প্রদায়িক একটি রাষ্ট্র দাবী করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই কণ্ঠযোদ্ধা বলেন, আমাকে বাংলাদেশের মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান সবাই সমান ভালোবাসে। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওনা। আমি বহু আগেই বলেছিলাম, এই দেশ আমার। এটা আমার বাংলাদেশ। এই দেশ ছেড়ে আমি কখনোই যাবো না। আমাকে লন্ডন, আমেরিকা ও ইন্ডিয়াতে রাখতে অনেক কাছের স্বজনেরা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমি তাদের বলেছিলাম, আমার দেশ ছেড়ে অন্যকোথাও আমি থাকতে পারবো না। এই দেশে আমার জন্ম, এই দেশেই আমার মৃত্যু হোক। এমএ/ ১১:১১/ ১৫ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2xm1RWN
September 16, 2018 at 05:54PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন