কলকাতা, ২৫ সেপ্টেম্বর- ওঁদের দাবি শুধু সাড়ে তিন মিটার জায়গা। গোটা কলকাতা জুড়ে রাস্তার ধারে ছাড় দেওয়া হোক ওই সাড়ে তিন মিটার জায়গা। এই দাবি শুধুমাত্র শহরকে বাঁচানোর জন্য। দূষণ কমানোর জন্য। ওঁরা কলকাতা সাইকেল সমাজ। সাইকেল লেনের দাবীতে বহু দিন ধরে কাজ করে চলেছে এই সংস্থা। একই দাবীতে হাইকোর্টের একটি জনস্বার্থ মামলায় সমর্থন করছে সাইকেল সমাজ। বছরের শুরুতে চিংড়িঘাটায় পথ দুর্ঘটনায় দুই সাইকেল আরোহী ছাত্রের মৃত্যুর পরে ওঁদের সংস্থার দাবী আরও জোড়ালো হয়েছে। বছর প্রায় শেষের দিকে। পরিবর্তন হয়নি পরিস্থিতির। উলটে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বেড়ে চলেছে বড় গাড়ির ধাক্কায় সাইকেল আরোহীর মৃত্যু। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দূষণের পরিমান। যদি শহরে দূষণের পরিমান কমাতে হয় তাহলে একমাত্র পদ্ধতি সাধারণ মানুষকে সাইকেল চালানোয় অনুপ্রাণিত করা৷ পাশাপাশি সাইকেল আরোহীদের জন্য রাস্তার ধারে ছাড় দেওয়া হোক সাড়ে তিন মিটার অর্থাৎ ১১ফুট তিন ইঞ্চির সাইকেল লেন যেখান দিয়ে সাইকেল আরোহীরা স্বাভাবিক ভাবে যাতায়াত করতে পারবেন। সাইকেল সমাজের দাবি, এতে একদিকে যেমন দূষণের পরিমান কমবে, পাশাপাশি সাইকেল আরোহীদের পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ যাবে না।একইসঙ্গে তাঁরা মনে করেন সারা বিশ্বে ক্রমে কমে আসছে জ্বালানীর পরিমান। সেটাও বাঁচাতে পারে পরিবেশ বান্ধব যান সাইকেল। দিন দুয়েক আগে এই শহরেরই ২০০-র বেশি সাইকেল আরোহীকে নিয়ে পথে নেমেছিলেন তাঁরা। উদ্দেশ্য, পরিবেশ বান্ধব সাইকেলের জন্য লেন তৈরি। অজয়নগর থেকে সল্টলেক হয়ে ফের অজয়নগর পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার পথে এই দাবী নিয়ে ঘুরে বেড়ায় তাঁরা। আট থেকে আশি , বিভিন্ন বয়সের সাইকেল আরোহী যোগদান করেছিলেন এই যাত্রায়। উদ্যোক্তাদের প্রধান রঘু জানা বলেন, চীন,জাপান আমস্টারডাম, প্যারিসের মতো দেশ শহরে সাইকেল লেন রয়েছে। বিদেশ যদি ভাবতে পারে তাহলে সিটি অফ জয় কেন ভাবতে পারবে না? একইসঙ্গে তিনি বলেন, জনপ্লাবনের দেশে ক্রমে দূষণ বাড়ছে। গাছ কাটা পড়ছে। পরিবেশ বাঁচাতে রাজ্য একটুও তৎপর হবে না? কেন পরিবেশবান্ধব যান সাইকেল চালকদের জীবন হাতে নিয়ে পথে চলতে হবে? পরিবেশকে যাঁরা বাঁচাচ্ছে তাঁরাই পথে ঘাটে মরবে! এ কেমন শহর। কেমন এই সরকার? এমন নানাবিধ প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজ সাথী প্রকল্প বানিয়েছেন। সাইকেল দিচ্ছেন ছাত্র ছাত্রীদের। রঘু জানা বলেন, প্রকল্প তেমন ভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। আরও বেশি উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দিয়েও কাজ হয়নি। তাই পথে নেমেছি। আগামী দিনে আরও বড় পদক্ষেপ নেবে সাইকেল সমাজ। যাত্রায় সাইকেল সমাজের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা সুপ্রিয়া চৌধুরী। তিনিও বলেন, আমি বিদেশে পড়াশোনা করেছি। তখন আমরা সাইকেলে চড়েই কলেজ যেতাম। অনেক অধ্যাপককেও দেখেছি সাইকেলে চড়ে ইউনিভার্সিটিতে আসতে। অনেকদিন আগেই বিদেশ এগিয়ে গিয়েছে সাইকেল নিয়ে। আমরা অনেক পিছিয়ে। তবু শুরুটা হওয়া প্রয়োজন। ক্যারাটে প্রশিক্ষক প্রসেনজিৎ সাহা বলেন, সাইকেল নিয়ে মাউন্ট ফুজির বেস ক্যাম্প গিয়েছি। সাইকেলের মতো পরিবেশবান্ধব যান নেই। দূষণে ভরতি কলকাতায় এর প্রয়োজন রয়েছে। শুধু পাটুলিতে ওই সাড়ে তিন মিটার জায়গা রয়েছে। সেটারও রক্ষণাবেক্ষণ নেই। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের শহরকে বাঁচাতে সাইকেলই হতে পারে একমাত্র হাতিয়ার। তথ্যসূত্র: কলকাতা২৪৭ একে/০২:৩৫/২৫ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2xNsDrg
September 25, 2018 at 08:34PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন