থিম্পু, ৩০ সেপ্টেম্বর- বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন তার দলের পাওয়া বলে থাকেন সিরাত জাহান স্বপ্নাকে। কোচ কেন তাকে এই তকমা দিয়েছেন তা সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলে নিজেরে প্রথম ম্যাচেই প্রমাণ করে দিলেন রংপুরের মেয়ে। রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। আর এই ম্যাচে একাই ৬ গোল করেছেন বাংলাদেশী এ কিশোরী। বাংলাদেশের কিশোরীদের মাঠে নামা আর গোল উৎসব অনেকটা সমার্থক হয়ে গেছে। এই কদিন আগেই ঘরের মাঠে এএফসসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের বাছাইয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে ৪ ম্যাচে ২৭ গোল করে বাংলাদেশের কিশোরীরা। তার আগে ভুটানে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলে ভারতের কাছে হেরে রানার্সআপ হলেও গেল বছর ডিসেম্বরে একই টুর্নামেন্টের শিরোপা জয় করে বাংলাদেশ। এই আসরগুলোর কোনোটিতেই খেলা হয়নি স্বপ্নার। বয়সের কারণে কৃষ্ণা, সানজিদা, মৌসুমী, মাজিয়াদের নিয়ে তাকেও থাকতে হয়েছে দর্শক হয়ে। অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে অবশ্য আর দর্শক হয়ে থাকতে হয়নি। রোববার মাঠে নামলেন। আর প্রথম ম্যাচেই জানান দিলেন দুর্দান্ত কিছুর। জাতীয় দলের স্ট্রাইকার স্বপ্না ২০১৬ সালে মেয়েদের সিনিয়র সাফে ৫ গোল করেছিলেন। ৬ গোল করেছিলেন সেবার সাবিনা খাতুন। ১২ গোল করে অবশ্য টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন ভুটানের সাবিত্রা। তবে অনূর্ধ্ব-১৮ সাফের প্রথম ম্যাচেই সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দাবিটা জানান দিয়ে রাখলেন ১৭ বছরের কিশোরী। এক ম্যাচে ৬ গোল করার পর একজন ফুটবলারের অনুভূতি কী হতে পারে? যে কোনো পর্যায়ের ফুটবলেই এমন কীর্তিকে বড় করে দেখতেই হবে। স্বপ্নারও যে এক ভালোলাগা ছুঁয়ে গেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু কী আশ্চর্য, পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজে ৬ গোল ও দল হিসেবে ১৭ গোল করার পরও কিনা স্বপ্নার কণ্ঠে আফসোস। এদিন ভুটানে ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে স্বপ্না বলেন, আমি মনে করি আমরা অনেক গোল মিস করেছি। আমরা যদি গোল মিস না করতাম তাহলে গোল গড় আরো বেশি হতো। তবে আমাদের যে লক্ষ্য ছিল সেটা আমরা পূরণ করতে পেরেছি। পাকিস্তানের বিপক্ষে দাপুটে এই জয়ে বাংলাদেশের সেমি ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে। মঙ্গলবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েদের প্রতিপক্ষ নেপাল। যে ম্যাচে যে কোনো ব্যবধানে জয় পেলেই বা ড্র করলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে বাংলাদেশ। স্বপ্না অবশ্য জয়ের কথাই বলে গেলেন, নেপাল শক্তিশালী দল। আমরা চেষ্টা করবো শতভাগ দিয়ে খেলার এবং জয় তুলে নেওয়ার। আমরা জেতার জন্যই মাঠে নামবো। রংপুরের জয়রামের মেয়ে স্বপ্না উঠে এসেছেন বঙ্গমাতা আন্তঃপ্রাথমিক ফুটবলের মধ্য দিয়ে। ২০১১ ও ২০১২ সালে বঙ্গমাতা ফুটবলে খেলেছেন। এর দুই বছর পরই অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় দলে ডাক পান। ২০১৪ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। সেই দলেরও অন্যতম সারথী ছিলেন স্বপ্না। ঢাকায় ২০১৬ সালে এএসসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের বাছাইয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূলপর্বে খেলে বাংলাদেশ। সেই দলেরও অন্যতম প্রধান তারকা ছিলেন স্বপ্না। সিনিয়র সাফে রার্নাসআপ হওয়ার পিছনে ৫ গোল করে রেখেছেন বড় অবদান। প্রথমবারের মতো আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৮ সালেও রাখলেন সেই ধারাবাহিকতার ছাপ। প্রথম ম্যাচেই ৬ গোল করার পর গুরু ছোটনের মতো স্বপ্নাকে দেশের নারী ফুটবলের পাওয়ার না বলে উপায় আছে কি! সূত্র: পরিবর্তন এমএ/ ১১:৫৫/ ৩০ সেপ্টেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2OhAM1t
October 01, 2018 at 06:19AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top