সিলেট, ০৫ নভেম্বর- দিনের শুরুটাই নাকি সারাদিনের পূর্বাভাস দেয়। কিন্তু কথাটা সবসময় সত্য নয়। যেমনটা সত্য হয়নি গতকাল বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনও। দিনের শুরুতে মাত্র ৪৬ রানের মধ্যে জিম্বাবুয়ের শেষ ৫ ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে সুবিধাজনক অবস্থানেই রাখেন বোলাররা। বিশেষ করে এদিন বল হাতে উজ্জ্বল ছিলেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। জিম্বাবুয়ের বাকি ৫ উইকেটের মধ্যে একাই ৪টি তুলে নেন এই বাঁহাতি, সব মিলিয়ে ৬ উইকেট। বল হাতে তাইজুলের এ আনন্দ দিন শেষে মুছে গেছে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। দীর্ঘদিন পর ৫ উইকেট পেয়েও তাই উচ্ছ্বাস নেই তাইজুলের। তবে এটিকে নিজেদের একটি বাজে দিন হিসেবেই দেখতে চান তিনি। বলেছেন, টেস্টে মাঝে মাঝে এমন দিন আসতেই পারে। অবশ্য এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে বলেও মনে করেন এ স্পিনার। গতকাল দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব কথাই বলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ। বিশেষ করে সাম্প্রতিক টেস্টগুলোর দিকে তাকালে এ ব্যর্থতা আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সবশেষ সাতটি টেস্ট ইনিংসে ২০০ রানের কোটা ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১৫০ ছাড়ানো ইনিংস মাত্র একটি। তার পরও ঘরের মাঠে এমন ব্যাটিং কেউই প্রত্যাশা করেনি। তাইজুল ব্যাটসম্যান নন, কিন্তু দলের একজন সদস্য হিসেবে এমন ব্যাটিং ধসকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তার কৌশলী উত্তর, সমস্যাটা কোথায় এটা বলতে হলে বলব, আমাদের ব্যাটসম্যানরা যে এর আগে ভালো করেনি এমন নয়। হয়তো হঠাৎ করেই এমনটা হচ্ছে। ক্রিকেটে এমন দিন আসে। আমরা চেষ্টা করব সামনে ভালো করার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও ব্যাটিংয়ে বেশ বাজে প্রদর্শনী ছিল বাংলাদেশের। সেটিই যেন ফিরে এল সিলেটের মাটিতে। ব্যাটসম্যানরা কি তবে আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছেন, না এমন কিছু না। আমাদের ব্যাটসম্যান-বোলারদের কথা যদি বলেন, এখানে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্টের ব্যর্থতার আগেও আমরা বড় বড় দলকে হারিয়েছি। আর দুয়েকটা সিরিজ এমন হতেই পারে। ম্যাচ যে শেষ হয়ে গেছে তাও কিন্তু না। এখনো আরো অনেক সময় আছে এ ম্যাচে। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে বেশ সহজেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া তাদের বিপক্ষে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও বেশ উচ্ছ্বসিত হওয়ার মতো। এমন অবস্থায় ব্যাটসম্যানরা কি তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিল। তাইজুলের উত্তর, না, অতি আত্মবিশ্বাসের মতো কিছু ছিল না। ক্রিকেটে এমন হয়। হয়তো আমাদের প্রথমে দুটি উইকেট পড়ে যাওয়ার পর এমন হয়েছে। এ টেস্ট শুরুর আগে বারবার ঘুরে-ফিরে এসেছে উইকেটের প্রসঙ্গ। দ্বিতীয় দিন শেষে কেমন উইকেট দেখছেন তাইজুল। জানতে চাইলে বলেন, উইকেট খুব কঠিন ছিল না। কিছুটা মন্থর ছিল। এ উইকেটকে চাইলে ফ্ল্যাট উইকেট বলা যেতে পারে। দিনটা তাইজুল শুরু করেছিলেন স্বপ্নের মতো। ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলারও তিনি। তবে দিন শেষে সেই উচ্ছ্বাস আর থাকেনি। সতীর্থদের ব্যর্থতায় ব্যক্তিগত আনন্দটুকু মাটি হয়ে গেল কিনা, অনুভূতিটা ভালোই। আসলে পাঁচ-ছয় উইকেট সবসময় আসে না। অবশ্যই ভালো লাগছে। কিন্তু আমি আসলে দলের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চাইব। দল ভালো করলে নিশ্চয় আরো বেশি ভালো লাগত। একই দিনের দুই রকম অভিজ্ঞতা। সকালে আনন্দের পর বিকালে হতাশা। তাইজুলের কথায়, সকালে হয়তো আমাদের সময়টা ভালো কেটেছে। মধ্যাহ্ন বিরতির পর থেকে দুই সেশন আমাদের পক্ষে আসেনি। আমাদের হাতে আরো তিনদিন সময় আছে, আমরা চেষ্টা করব ওদের দ্রুত অলআউট করার। ফ্ল্যাট উইকেটে বল হাতে পরিকল্পনা কী ছিল তাইজুলের, আসলে উইকেট ফ্ল্যাট হলে ডিসিপ্লিন বোলিং করতে হয়। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বেশি জায়গা না দিয়ে বল করতে হয়। আমি ওইটাই করার চেষ্টা করেছি। দলের অবস্থা ভালো না। দ্বিতীয় দিন শেষে প্রতিপক্ষ দলের লিড ১৪০ রানের। তারপরও জয়ের স্বপ্নই দেখছেন তাইজুল। তিনি বলেন, আমরা জয়ের চিন্তাই করছি। ম্যাচে এখনো তিনদিন বাকি আছে এবং তিনদিন অনেক সময়। দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে ১৫০ রানের মধ্যে অলআউট করার পরিকল্পনার কথাও জানান তাইজুল। এমইউ/১০:৫৮/০৫ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2PElPHd
November 05, 2018 at 04:57PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন