চট্টগ্রাম, ২১ নভেম্বর-রাত পোহালেই শীতের হালকা আমেজে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। সকাল সাড়ে ৯টায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হচ্ছে দল দুটি। ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে গাজী টেলিভিশনে। গত জুলাইতে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বড় লজ্জার মুখে পড়েছিল বাংলাদেশ। ক্যারিবিয়ান সফরে নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৪৩ রানে অলআউট হওয়ার পাশাপশি দুটি টেস্টেই বড় ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা। এবার সেই হারের বদলা নেওয়ার সুযোগ স্বাগতিকদের সামনে। যদিও কাজটা মোটেও সহজ হবে না, অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কথাতেই তা স্পষ্ট। ভারত সফরে ক্যারিবিয়ানরা ব্যর্থ হলেও দীর্ঘদিন ধরে উপমহাদেশের কন্ডিশনে খেলে নিজেদের ভালোভাবেই মানিয়ে নিয়েছে তারা। তাছাড়া দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে দারুণ শুরুর অপেক্ষাতে ক্যারিবিয়ানরা। অন্যদিকে বাংলাদেশও আগের ব্যর্থতা ভুলে ভালো শুরু করতে মুখিয়ে আছে। টেস্ট ক্রিকেটে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে পরিসংখ্যান ততটা উজ্জ্বল নয় স্বাগতিকদের। সব মিলিয়ে ১৪ টেস্টে মাত্র ২টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি ১০টি হার এবং দুটিতে ড্র করতে পেরেছে টাইগাররা। ঘরের মাঠে নিজেদের কন্ডিশনে এই পরিসংখ্যানকে ভুল প্রমাণ করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে স্বাগতিকরা। অধিনায়ক সাকিবের কথাতেই তা স্পষ্ট, আমি আশাবাদী। শুধু আমি কেন, পুরো দলই মনে করে ওদের (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) সঙ্গে ভালো করা সম্ভব। ভালো করার বিশ্বাসটা সবার ভেতরে আছে। আশা করি আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব। ৬১ পয়েন্ট নিয়ে টেস্ট র্যাংকিংয়ের নবম স্থানে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট জিতলে তাদের সঙ্গে ব্যবধান কমবে স্বাগতিকদের। তবে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে ক্যারিবিয়ানদের সরিয়ে অষ্টম স্থানে ওঠার সুযোগ থাকবে সাকিবদের। এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে সাকিবের ভাবনা, যেহেতু দুই দলের র্যাংকিং খুব কাছাকাছি, আমরা নয়ে অবস্থান করছি। আমি মনে করি এই সিরিজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে সাকিব ফিরলেও তামিম বাইরে। সব মিলিয়ে অভিজ্ঞ-তারুণ্যের মিশ্রণে সেরা একাদশই মাঠে নামানোর পরিকল্পনা বাংলাদেশের। তবে কম্বিনেশন কেমন হবে, ম্যাচের আগের দিন সেই ব্যাপারে একমত হতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। শেষ সময় পর্যন্ত উইকেটের আচরণ দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তারা। স্পিন সহায়ক উইকেটই হওয়ার কথা। ক্যারিবিয়ানদের পেস আক্রমণ ঠেকাতে সাকিবের কথাতে তেমন ইঙ্গিতই মিললো, আমার মনে হয় কিউরেটররা ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করছেন। উইকেট নিয়ে আসলে খুব বেশি কথা বলার নেই। দুই দলের সমান সুযোগ থাকবে। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে উইকেটে বল ঘুরতে পারে। এখানে আগে ব্যাটিং করে কম করে হলেও আমাদের ৩০০ প্লাস রান করতে হবে। উইকেটের কথা চিন্তা করেই একাদশে তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে নামতে পারে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত সাকিব না খেললে তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে অভিষেক হতে পারে ১৭ বছর বয়সী অফ স্পিনার নাঈম হাসানের। আর চার স্পিনার নিয়ে মাঠে নামলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের মতো এখানেও এক পেসার নিয়ে দেখা যেতে পারে বাংলাদেশকে। তখন অটোমেটিক চয়েজ হিসেবে খেলবেন মোস্তাফিজুর রহমান। ওপেনিংয়ে কে খেলবেন- এই প্রশ্নটাই বেশি ঘুরেছে টেস্ট শুরুর আগের দিন। বিশেষ করে সাদমান ইসলামের অন্তর্ভুক্তির পর ইমরুল কায়েসকে খেলানো হবে কিনা, এই নিয়ে চলেছে গুঞ্জন। ইমরুল ৫০ ওভারের ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে থাকলেও টেস্টে হয়ে আছেন নিজের ছায়ায় বন্দি। ২০১৬ সালের অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি, ওটাই ইমরুলের সবশেষ হাফসেঞ্চুরি! টানা ব্যর্থতার পরও ইমরুলের পক্ষেই কথা বলেছেন সাকিব। এই ওপেনারের অভিজ্ঞতাকে এগিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক, এখানে আমরা চেষ্টা করব যারা একটু অভিজ্ঞ তাদের সুযোগটাই যেন বেশি থাকে। ইমরুল ওয়ানডে সিরিজে খুব ভালো খেলেছে, গত দুটি টেস্টে হয়তো ভালো করেনি। আমার বিশ্বাস সামনে সুযোগ পেলে সে ভালো করবে। ক্যারবিয়ান অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েটও তার দল নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেছেন, উপমহাদেশের কন্ডিশনে খেলা সবসময়ই কঠিন। তবে ছেলেদের ওপর আমার আস্থা আছে। আশা করি তারা ভালো শুরু এনে দিতে পারবে। তবে বাংলাদেশের স্পিনারদের বিপক্ষে খেলাটা সহজ হবে না। আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়েই লড়তে হবে। এমএ/ ১১:৩০/ ২১ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2DzSeZ0
November 22, 2018 at 05:35AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন