পথের পাঁচালি বাংলা সিনেমার জন্য দারুণ এক সংযোজন। এই ছবির হাত ধরেই স্বাধীন ভারতে নির্মিত চলচ্চিত্র প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মনোযোগ টানতে সক্ষম হয়। এই ছবিটি দিয়েই বাংলা চলচ্চিত্র পৌঁছেছে বিশ্ব চলচ্চিত্রের আঙিনায়। আর এই ছবিটি পরিচালনা করেই সিনেমায় পরিচালক হিসেবে যাত্রা করেছিলেন কালজয়ী নির্মাতা সত্যজিৎ রায়। পথের পাঁচালি তাকে এনে দিয়েছে অনন্য খ্যাতি ও সম্মান। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ছবিটি তৈরি করেছিলেন সত্যজিৎ। অনেক কাঠখড়ও পোড়াতে হয়েছিলো মানিকবাবু নামেও পারিচিত এই পরিচালককে। অর্থ আর শিল্পীর অভাবে বেশ কয়েকবারই বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো এই ছবির শুটিং। অবশেষে মুক্তি পেল ছবিটি। কিন্তু সিনেমা নিয়ে লালিত স্বপ্ন আঘাত পেয়েছিলো যখন ছবিটি মুক্তির পর তেমন সাড়া পায়নি। দর্শক তখনও বুঝে উঠতে পারেনি কী এক সিনেমা বানিয়েছেন সত্যজিৎ। সময় যতো বেড়েছে ক্রমশই সেটা উপলব্দি করেছে বাংলা সিনেমার দর্শক। ষাট বছরেরও বেশি সময় পার করে আজও পথের পাঁচালি চিরন্তন ক্লাসিক হিসেবে সমাদৃত। দুনিয়াজুড়ে অনেক স্বীকৃতিই পেয়েছে ছবিটি। এবার তার মুকুটে যুক্ত হলো আরও একটি নতুন পালক। বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ছবির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে অপু-দুর্গা আর তাদের নিশ্চিন্দিপুরের গল্প। সম্প্রতি বিদেশি ভাষার সেরা ১০০ ছবির তালিকা প্রকাশ করেছে বিবিসি। সেখানে ২৪টি দেশের ৬৭ জন পরিচালকের ১৯টি ভাষার ছবি স্থান পেয়েছে। তার মধ্যে পথের পাঁচালি রয়েছে ১৫ নম্বরে। এই তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে আকিরা কুরোসওয়ার সেভেন সামুরাই। তবে ওয়াইল্ড স্ট্রবেরিজ ও ব্যাটেলশিপ পোটেমকিন-এর মতো ছবিকে পিছনে ফেলে দিযেছে পথের পাঁচালি। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে তালিকায় রয়েছে ইঙ্গমার বার্গম্যান, ফেদরিকো ফেলিনি, সের্গেই আইজেনস্টাইনের মতো বিশ্ববিখ্যাত পরিচালকের নাম। প্রসঙ্গত, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত বিখ্যাত উপন্যাস পথের পাঁচালি অবলম্বনে নির্মিত হয় একই নামের চলচ্চিত্রটি। ১৯৫৫ সালের ৩রা মে নিউ ইয়র্ক শহরের মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টের একটি প্রদর্শনীতে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। সেই বছর কলকাতা শহরেও মুক্তি লাভ করে ছবিটি। মুক্তি পায় পথের পাঁচালি। ১৯৫৬ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পায় ছবিটি। এছাড়া বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবেও পুরস্কৃত হয় পথের পাঁচালি। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও (স্বর্ণকমল পুরস্কার) অর্জন করেছিলো এটি। অপু ত্রয়ী চলচ্চিত্র-সিরিজের প্রথম চলচ্চিত্র পথের পাঁচালীর মুখ্য চরিত্র অপুর শৈশবকে কেন্দ্র করে বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকে বাংলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনধারা চিত্রায়িত করা হয়েছে এই ছবিতে। গল্পের চরিত্র অপুর জীবন সত্যজিৎ রায়ের অপরাজিত (১৯৫৬) এবং অপুর সংসার (১৯৫৯) নামক অপু ত্রয়ী চলচ্চিত্র-সিরিজের পরবর্তী দুইটি চলচ্চিত্রে দেখানো হয়। তথ্যসূত্র: জাগো নিউজ২৪ আরএস/ ০১ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2RrtF46
November 01, 2018 at 09:26PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন