গল, ০৮ নভেম্বর- ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গল টেস্ট খেলেই বিদায় নেয়ার ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন কিংবদন্তি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ। ১৯৯৯ সালে এই গল ইন্টারন্যাশনা স্টেডিয়াম থেকেই ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন বাম হাতি এই অর্থোডক্স স্পিনার। এরপর পাড়ি দিয়েছেন ১৯টি বছর। সারা বিশ্বের বিভিন্ন মাঠে ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা হয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন দীর্ঘ একটি সময়। অবশেষে বয়সের কাছে হার মেনে বিদায় নিতে হচ্ছে এই লংকান কিংবদন্তিকে। ২২ অক্টোবর অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন হেরাথ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের পুরো সিরিজ নয়, গল টেস্ট খেলেই বিদায় নেবেন ৪০ বছর বয়সী এই স্পিনার। সে হিসেবে ৬ তারিখ থেকে শুরু হওয়া টেস্ট ম্যাচটিই হচ্ছে হেরাথের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এমন ম্যাচটিকে খুব ভালোভাবে রাঙাতে পারেননি হেরাথ। কারণ, দুই ইনিংস মিলে তিনি নিয়েছেন কেবল ৩টি উইকেট। তারওপর, সবচেয়ে বড় কথা বড় কোনো মিরাকল ঘটে না গেলে ম্যাচটিতে নিশ্চিত হারতে বসেছে শ্রীলঙ্কা। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে জো রুটকে বোল্ড করেছিলেন হেরাথ। দ্বিতীয় ইনিংসেও জো রুটের উইকেট নিয়েছিলেন। তবে এবার হেরাথের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন রুট। এছাড়া উইকেট নিয়েছিলেন জস বাটলারের। ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচের শেষ ইনিংসে নিলেন মাত্র ২টি উইকেট। পুরো ক্যারিয়ারে প্রতিপক্ষের মাঠ কাঁপালেও শেষ ম্যাচটাকে রঙিন করতে পারলেন না হেরাথ। শ্রীলঙ্কান গ্রেট মুত্তিয়া মুরালিধরনের পর নিজ দেশের হয়ে সেরা উইকেটশিকারী হেরাথ। ৯৩ টেস্টে তার ঝুলিতে জমা হলো মোট ৯৩ উইকেট। আর বর্তমান সময়ে খেলে যাওয়া বোলারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী তিনি। তার সামনে রয়েছেন জেমস অ্যান্ডারসন ৫৬৪ এবং স্টুয়ার্ট ব্রড ৪৩৩ উইকেটনিয়ে। তবে বাম-হাতি স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল বোলার হলেন শ্রীলঙ্কান এই গ্রেট স্পিনার। ১৯৯৯ সালে অভিষেক ঘটলেও রঙ্গনা হেরাথ কিন্তু ঢাকা ছিলেন গ্রেট মুত্তিয়া মুরালিধরনের ছায়ায়। অনেক সময় তিনি খেলারই সুযোগ পাননি। ক্যারিয়ারে এখনও পর্যন্ত ৯২টি টেস্ট খেলেছেন তিনি। যার মধ্যে ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১০ সাল- অর্থ্যাৎ ১১ বছরে খেলেছেন মাত্র ২২টি টেস্ট। এই ২২ টেস্টে ৩৭.৮৮ গড়ে মাত্র ৭১টি উইকেট নিতে পেরেছিলেন তিনি। তবে ২০১০ সালে মুরালিধরন অবসরে চলে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কার হয়ে নিয়মিত খেলার সুযোগ পান তিনি। মুরালির অবসরের পর গত আট বছরে শ্রীলঙ্কা এখনও পর্যন্ত খেলেছে ৮১টি টেস্ট। এর মধ্যে হেরাথ খেলেছেন ৭০টি। এই ৭০ টেস্টে ২৫.৯৮ গড়ে হেরাথ দখল করেছেন ৩৫৯টি উইকেট। খুব বেশি বৈচিত্র্য নেই। তবুও, একেবারে নিখুঁত লাইন-লেন্থের জন্যেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন হেরাথ। মুরালি অবসরে যাওয়ার পরপরই হেরাথের সবচেয়ে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ২০১১ সালে ওই ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে লঙ্কানদের টেস্ট জিতিয়েছিলেন হেরাথ। এই ফর্ম তিনি টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন পরের বছরে। ২০১২ সাল জুড়ে সেরা টেস্ট বোলার ছিলেন রঙ্গনা হেরাথ। এক বছরে তিনি নিয়েছিলেন ৬০ উইকেট। ১০০ টেস্টের হাতছানি ছিল হেরাথের সামনে। কিন্তু সেদিকে আর তাকাচ্ছেন না এই লিজেন্ডারি বোলার। বয়সতো আর কম হয়নি। ৪১ ছুঁই ছুঁই। বয়স তো আর খেলতে অনুপ্রেরণা যোগায় না। সুতরাং, বিদায় বলে দেয়ার জন্য গল টেস্টকেই বেছে নিলেন তিনি। ক্যারিয়ারটা শেষ হয়ে যাবে তার ৯৩ টেস্টেই। তবে, শেষ টেস্টে গলের একটা রেকর্ড গড়লেন তিনি। দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এই মাঠে শততম উইকেট শিকারী হলেন হেরাথ। গলে শেষ টেস্টে এসে ১০২টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। এই মাঠেই ১১১ উইকেট নিয়েছিলেন মুত্তিয়া মুরালিধরন। এক ভেন্যুতে উইকেট সেঞ্চুরি করা তৃতীয় বোলার হলেন হেরাথ। তার আগে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন মুরাধিরন এবং জেমস অ্যান্ডারসন। আর/০৮:১৪/০৮ নভেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2QtUHIe
November 09, 2018 at 05:15AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top