ঢাকা, ১৩ নভেম্বর- প্রথম দুইদিন ঝলক দেখিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তৃতীয় দিন চমক দেখালেন স্পিনাররা। যার ফলে ঢাকা টেস্টে চালকের আসনে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৫২২ রান সামনে রেখে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ে অলআউট হয়েছে ৩০৪ রানে। ফলো অন এড়াতে জিম্বাবুয়েকে করতে হতো ৩২৩ রান। কিন্তু তার আগেই তারা অলআউট হয়ে গিয়েছে। প্রথম ইনিংস শেষে ২১৮ রানের লিডে রয়েছে টাইগাররা। আগামীকাল ম্যাচের চতুর্থ দিন। বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে ফলো অন করাবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে আজ স্পিনাররা যেভাবে আধিপত্য বিস্তার করেছে তাতে জিম্বাবুয়েকে ফলো অন করালে ইনিংস ব্যবধানে জয় পাওয়ার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। দুই ম্যাচের এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল। সুতরাং, সিরিজ হার এড়াতে হলে ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের জয়ের কোনো বিকল্প নেই। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গত রবিবার শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচ। ম্যাচের প্রথম দিন টস জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। রবিবার পুরো দিন ব্যাট করে টাইগাররা। সোমবার দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা করে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ সাত উইকেটে ৫২২ রান। সোমবার শেষ বিকালে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে। এক উইকেটে ২৫ রান সংগ্রহ করে দিনের খেলা শেষ করে তারা। মঙ্গলবার আবার ব্যাট করতে নামে সফরকারীরা। দিনের শুরু থেকেই জিম্বাবুয়েকে চাপে রাখেন তাইজুল-মিরাজরা। দলীয় ১৩১ রানে পাঁচটি উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ব্রেন্ডন টেইলর ও পিটার মুর। ১৩৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন তারা। এই জুটি ভাঙেন আরিফুল হক। দলীয় ২৭০ রানে আরিফুল হকের বলে এলবিডব্লিউ হন পিটার মুর। ৮৩ রান করেন তিনি। টেস্টে এটি তার পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি। এরপর একই ওভারে ব্রেন্ডন টেইলর ও ব্রান্ডন মাভুতাকে ফিরিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ইনিংসের ৯৯তম ওভারের প্রথম বলে উড়িয়ে মারেন টেইলর। শূন্যে ভেসে দুর্দান্ত একটি ক্যাচ নেন তাইজুল ইসলাম। ওভারের তৃতীয় বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রান্ডন মাভুতা। ব্রেন্ডন টেইলর সেঞ্চুরি করেন। ১১০ রান করে ফেরেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি। জিম্বাবুয়ের শেষ উইকেটটি শিকার করেন তাইজুল ইসলাম। মুমিনুল হকের হাতে ক্যাচ হন রেজিস চাকাভা। চাকাভাবে ফেরানোর মাধ্যমে দারুণ একটি কীর্তি অর্জন করেন তাইজুল। টেস্টে তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসাবে টানা তিন ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি সংখ্যক উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন তিনি। এর আগে এনামুল হক জুনিয়র ও সাকিব আল হাসান এই কীর্তি অর্জন করেছেন। সিলেটে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ম্যাচে মোট ১১টি উইকেট শিকার করেছিলেন তাইজুল ইসলাম। ওই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ছয়টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচটি উইকেট শিকার করেন তিনি। ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে তাইজুল ইসলামের বোলিং ফিগার ৪০.৩ ওভারে ১০৭ রানে পাঁচ উইকেট। তাইজুল সাজঘরে ফেরান হ্যামিলটন মাসাকাদজা, ডোনাল্ড তিরিপানো, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা ও রেজিস চাকাভাকে। বোলিংয়ে তাইজুল ইসলামের পাশাপাশি ভালো করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২০ ওভার বল করে ৬১ রান দিয়ে তিনটি উইকেট শিকার করেন তিনি। এছাড়া পেস অলরাউন্ডার আরিফুল হক একটি উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে মূলত নয়টি উইকেট হারায়। টেন্ডাই সাতারা ইনজুরির কারণে ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি। তাই নয় উইকেট পড়ে যাওয়ার পরই তাদের ইনিংস শেষ হয়। মিরপুর টেস্টের আগে সর্বশেষ চার টেস্টের চারটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। চারটি হারই ছিল বড় ব্যবধানে। এই চার ম্যাচের কোনোটিতে ২০০ রানও করতে পারেনি বাংলাদেশ। চার ম্যাচের আট ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১৬৯। অবশেষে সেই ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে ফিরে মিরপুরে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে টাইগাররা। মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরি, মুমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে দলীয় স্কোরও হয়েছে বিশাল। ম্যাচের প্রথম তিন দিনের তিন দিনই নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এখন দেখা যাক বাকি অংশটুকু নিজেদের করে নিতে পারে কি না টাইগাররা? এমএ/ ০৭:৪৫/ ১১ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2zQVcVJ
November 14, 2018 at 01:45AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন