ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর- তার খেলা নিয়েই ছিল সংশয়। খেলবেন কি খেলবেন না? কাল রাতেও তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। আজ সকালেও সাকিবের খেলা নিয়ে ছিল সংশয়। কেন থাকবে না? সাকিবের শরীর যে বেশ খারাপ ছিল। বুক ও গলায় ঠান্ডা, সর্দি-জ্বর আর পেটের পীড়া- তিন/চার রকমের সমস্যা। তা নিয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা কঠিন কাজ বৈকি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শারীরিক সমস্যা আর বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। অসুস্থ শরীর নিয়েই খেলেছেন সাকিব আল হাসান। শুধু অসুস্থ শরীর নিয়েই মাঠে নামা নয়, পেটের পীড়ায় আজ প্রায় সারাদিন কিছুই খাননি। বিসিবি মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম প্রেস কনফারেন্সের সময় এ প্রতিবেদককে জানালেন, আজ প্রায় অভুক্ত সাকিব। পেটের পীড়ার কারণে দুপুর থেকে না খাওয়া। এমন অসুস্থ শরীরে খেলতে নেমেও কী দারুণ পারফরম্যান্সটাই না করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সিলেটে ব্যাট হাতে একার লড়াই গেছে ভেস্তে। ৬১ রানের ইনিংসটি কোনো কাজে আসেনি। তাই আজ মনে হয় পণ করেই নেমেছিলেন দল জিতিয়ে তবেই মাঠ ছাড়বো। শেষ পর্যন্ত দল জিতিয়ে বিজয়ীর বেশেই মাঠ ছাড়লেন সাকিব। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে একজন অলরাউন্ডারের পক্ষে এক ম্যাচে যা যা করা সম্ভব, বৃহস্পতিবার সাকিব তাই করে দেখিয়েছেন। প্রথমে ব্যাট হাতে ২৬ বলে পাঁচ বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় ৪২ রানের হার না মানা ইনিংস। সেই ইনিংস সাজানোর পথে পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে ৪২ বলে ৯১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে ২০০ পার করে দেয়া এবং সব শেষে শিশির ভেজা শেরেবাংলায় বল হাতে ৪ ওভারে ২০ রানে ৫ উইকেট দখল করে উইন্ডিজ ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে জয় নিশ্চিত করে ম্যাচ সেরার পু্রস্কার জেতা। এ কৃতিত্ব অর্জনের পথে সাকিব সাফল্যের একটি বড় মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। কালকের ম্যাচের আগে তামিম, মুশফিক ও সাব্বিরের সাথে সাকিবও যৌথভাবে তিনবার করে ম্যাচ সেরা পারফরমারের পুরস্কার জিতেছিলেন। আজ ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে সাকিব সবাইকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের পারফরমারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চারবারের ম্যান অব দ্য ম্যাচ। ম্যাচ উইনিং পারফরমেন্সে ম্যাচ সেরার দিনে সাকিবের আরও একটি অর্জন আছে। দুর্দান্ত টিম পারফরমেন্স হওয়া সত্ত্বেও দলকে সিরিজে ফিরিয়ে আনার মিশনেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সাকিবই মধ্যমণি। শরীর খারাপের কারণে খেলা নিয়ে ছিল সংশয়। সে প্রসঙ্গে কিছু বলতে বলা হলে সাকিবের রসিকতা, সবার ধারণা তো এটাই যে সাকিব মানেই খেলবে। না খেলার চিন্তা কেউ করে? বাংলাদেশ ২১১ রানের বিশাল স্কোর গড়ার পরও ক্যারিবীয়রা শেষ পর্যন্ত লড়াই করলো। এ সম্পর্কে সাকিবের ব্যাখ্যা, দেখুন ওদের ব্যাটিং লাইনআপ অনেক বড় এবং সবাই বড় শট খেলতে পারে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ওদের ব্যাটিং অর্ডার শেষ হচ্ছিল চিন্তা তো একটু ছিলই। ওদের ব্যাটিং অর্ডার পুরো নয় নম্বর পর্যন্ত। তখন পর্যন্ত আসলে ম্যাচ ফিফটি-ফিফটিই ছিল। শুরুতে লিটন-তামিম, তারপর লিটন-সৌম্য আর শেষে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ- তিন-তিনটি কার্যকর জুটি। যার যোগফল ২১১। অনেকেই মনে করছেন এটাই আসলে টি-টোয়েন্টির সত্যিকার ও আদর্শ ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ। ২০ ওভারের ম্যাচে এমন ছকবাঁধা ব্যাটিংটাই দরকার বাংলাদেশের। খেলা শেষে অধিনায়ক সাকিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তা। এ ব্যাপারে সাকিবের ব্যাখ্যা, দেখুন টি-টোয়েন্টি ম্যাচের কোনো নির্ধারিত রুলস নাই যে এভাবে খেললেই জিততে পারবে। আমার মনে হয় আমাদের আজ খুব ভালো দিন ছিল। ফিল্ডিংয়ে কিছু কমতি ছিল এছাড়া আমরা খুব ভালো একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছি, এখানে আসলে সেকেন্ড হাফে বোলারদের বোলিং করা একটি কঠিন ছিলো। অনেক ডিউ ছিল। তিনি আরও বলেন, তারপরও বোলাররা স্কোরবোর্ডে রান থাকায় সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে বোলিং করতে পেরেছে। আমাদের ব্যাটিংয়ে খুব ভালো শুরু করেছে লিটন, তারপর সৌম্য ওটা ধরে রেখেছে। এরপর আমি এবং রিয়াদ ভাইয়ের পার্টনারশিপটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওই সময় যদি আমরা উইকেট হারিয়ে ফেলতাম, তারপর বোলাররা চলে আসতো। এরপর হয়তো এই বড় রানটা হতো না। এই এক্সট্রা ২০-৩০ রানের স্ট্রেন্থটা আমরা পেতাম না। সেদিক থেকে আমি বলবো ব্যাটিংয়ে আমাদের আসল কাজটা করে দিয়েছে। সূত্র: জাগোনিউজ আর/১১:১৪/২০ ডিসেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2A8vvRe
December 21, 2018 at 05:20AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন