ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর- মৃত্যুর পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও দেশে পৌঁছায়নি প্রখ্যাত নির্মাতা, অভিনেতা, প্রযোজক, লেখক আমজাদ হোসেনের মরদেহ। কারণ হিসেবে শোনা যাচ্ছিল অর্থের অভাব সংক্রান্ত ঝামেলা। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে তার চিকিৎসার বকেয়া বিলসহ মরদেহ দেশে আনার আনুষ্ঠানিকতা বাবদ প্রয়োজন ছিল প্রায় ৬৫ লাখ টাকা। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে দেয়া ৪২ লাখ টাকা চিকিৎসার জন্য ব্যয় হয়ে গিয়েছিল। তাই ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে আমজাদ হোসেনের মরদেহ দেশে আনতে ভোগান্তিতে ছিল তার পরিবার। টাকার জন্য ব্যাংককে পড়ে আছে কিংবদন্তি নির্মাতা আমজাদ হোসেনের মরদেহ। সেই খবর পেয়ে সব দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে আগামী শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় দেশে আসছে আমজাদ হোসেনের মরদেহ। এমনটাই জানালেন গুণী এই নির্মাতার বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল। আবেগ জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার বাবার প্রতি যে সম্মান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেখালেন তার কৃতজ্ঞতার কি ভাষা থাকতে পারে? আমার জানা নেই। আমার পরিবার কোনোদিন তার এই ঋণ শোধ করতে পারবে না। দোদুল বলেন, বাবার অসুস্থতার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হলো। তিনি মমতাময়ী, আল্লাহ তাকে অনেক বড় মন দিয়েছেন। তিনি ১৮ কোটি মানুষের নেত্রী। তার কাছে কে কোন দল করলো সেটার চেয়ে একজন নাগরিক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, একজন শিল্পীর মূল্যায়ণ অনেক বেশি। বহুবার এই প্রমাণ তিনি দিয়েছেন। আমজাদ হোসেনের বেলাতে তিনি অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। আমার বাবা সারাজীবন বিএনপির আদর্শ লালন করেছেন। সেটা জেনেও তিনি আমার বাবার পাশে দাঁড়িয়েছেন। দুই দফায় এক কোটি টাকারও বেশি সহায়তা দিলেন। যা রীতিমতো বাংলাদেশের জন্য বিরল ঘটনা। আমি বলবো, মহানুভবতায় তিনি ইতিহাস তৈরি করেছেন। দোদুল প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, শেখ হাসিনার সাথে সত্যি কারো তুলনা হয় না। বিএনপির কট্টর সমর্থক জেনেও তিনি প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। কারণ চাষী সাহেব মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তিনি আজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিল্পচর্চা করেছেন। একইভাবে বরেণ্য গীতিকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা গাজী মাজহারুল আনোয়ারকেও মূল্যায়ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পরও তার হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এমনি আরও অনেক বিপরীত আদর্শের মানুষকে তিনি সাহায্য করেছেন, সম্মান দেখিয়েছেন। রাজনৈতিক আদর্শের বাইরে গিয়ে দেশের তারকা নাগরিকদের সম্মান করার যে সুন্দর চর্চা তিনি করেছেন তা সত্যি এই দেশের প্রেক্ষাপটে অতুলনীয়। তিনি শিল্প ও সংস্কৃতির বন্ধু। তিনি বিশ্বজুড়েই সুনাম অর্জন করেছেন। তাকে আল্লাহ আরও সম্মানিত করুক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য এই মানসিকতা যেকোনো দেশের নেতৃত্বের জন্য অনুকরণীয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। দোদুল জানালেন, শুক্রবার তার বাবার মরদেহ দেশে পৌঁছাবে। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার তার দাফন হবে। সুত্র: জাগোনিউজ আর/১২:১৪/১৯ ডিসেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2SXp1f1
December 20, 2018 at 05:35AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top