আগরতলা, ১১ জানুয়ারি- নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ ও পুলিশের গুলিতে একাধিক উপজাতি আন্দোলনকারী জখম হওয়ার জেরে ফের অচল হতে চলেছে উত্তরপূর্বের রাজ্য ত্রিপুরা৷ আগামী ১২ জানুয়ারি বনধের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন উপজাতি সংগঠন৷ উপজাতিদের উপর কেন পুলিশ গুলি চালাল তার জবাব চেয়েছে বিভিন্ন সংগঠন৷ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব মাধববাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেন৷ তাঁর সঙ্গেই সাংবাদিক সম্মেলন করেন আইপিএফটির সভাপতি তথা মন্ত্রী এন সি দেববর্মা৷ মাধববাড়ির ঘটনায় গুজব রুখতে রাজ্য সরকার পুনরায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার পথেই গেল৷ আগরতলার রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, বিজেপি পরিচালিত জোট সরকারের অন্যতম শরিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আইপিএফটি অবিলম্বে সরকার ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারে৷ যদিও সংগঠনের তরফে সরাসরি কিছু জানানো হয়নি৷ সরকারে থাকা উপজাতি সংগঠন আইপিএফটি ক্ষুব্ধ হলেও তারা বনধ সমর্থন করবে কিনা তা পরিষ্কার নয়৷ তবে অন্যান্য উপজাতি সংগঠন যেমন- প্রবীণ উপজাতি নেতা বিজয় রাঙ্খলের নেতৃত্বাধীন আইএনপিটি, এনসিটি, টিএসপি, ডিওয়াইপি সরাসরি বনধের রাস্তাই নিল৷ তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে আইপিএফটি-তিপ্রাহা গোষ্ঠী৷ আরও এক কদম এগিয়ে তারা লোকসভা নির্বাচনে উপজাতি প্রার্থী দিচ্ছে বলে জানিয়ে দেয়৷ এর জেরে ত্রিপুরার উপজাতি ভোট ব্যাংকে বড়সড় ফাটল ধরছে৷ গত বিধানসভায় বাম বিরোধী হাওয়ায় এই ভোট সরাসরি নিজেদের দিকে টানতে পেরেছিল বিজেপি৷ উপজাতি সংগঠনগুলির ডাকা ১২ তারিখে বনধের জেরে ত্রিপুরার সঙ্গে দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে৷ পশ্চিম ত্রিপুরার সঙ্গে অসম ও অন্যদিকে মিজোরামের সঙ্গেও সড়ক যোগাযোগ বন্ধের সম্ভাবনা প্রবল৷ এই বনধের প্রভাব পড়তে চলেছে রাজ্যের উপজাতিভুক্ত এলাকা অর্থাৎ ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়াস অটোনমাস ডিসট্রিক্ট কাউন্সিলে৷ গত ৮ জানুয়ারি বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ভারত বনধ চলছিল৷ রাজ্যে বিরোধী সিপিএমের নেতৃত্বে সেই বনধ পালিত হচ্ছিল৷ আর এর পাশাপাশি সেই দিনেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে বনধে সামিল হয়েছিল উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন উপজাতি ছাত্র সংগঠনের যৌথ মঞ্চ নেসো৷ বনধ চলাকালীন পশ্চিম ত্রিপুরার জিরানিয়া-মাধববাড়িতে গুলি চালায় পুলিশ৷ জখম হন অন্তত ৬ জন আন্দোলনকারী৷ তাদের চিকিৎসা চলছে আগরতলায়৷ গুরুতর জখম একজনকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে৷ তার চিকিৎসার ভার রাজ্য সরকারের৷ এমনই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব৷ এদিকে বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হচ্ছে রাজ্যের৷ সরকার কেন গুলি চালাল তার তদন্ত হোক৷ হাসপাতালে গিয়ে জখম উপজাতি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি৷ জানা গিয়েছে, সেখানে আহতরা বলে- রাজ্যে বাম সরকারের আমলে প্রবল বিক্ষোভ চালানোর সময় দীর্ঘদিন ত্রিপুরা বিচ্ছিন্ন ছিল৷ কিন্তু পুলিশ গুলি চালায়নি৷ সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে এই অবস্থা অসহনীয়৷ উপজাতি সংগঠনগুলির যৌথ নেতৃত্ব অসমের প্রসঙ্গ টেনে দাবি করেন, লেই রাজ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে সরকার ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে অসম গণ পরিষদ (অগপ)৷ ত্রিপুরাতেও সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করা যায় না৷
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2SNQhx7
January 11, 2019 at 05:28PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন