ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি- ট্রাকচালকের নির্মমতায় গুরুতর আহত অভিনেত্রী অহনা হাসপাতাল ছেড়েছেন। বুধবার সন্ধ্যার পর তিনি অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার চিন্ময়। হাসপাতাল ছাড়ার আগে গণমাধ্যমকে অহনা জানান, তিনি ভালো নেই। রক্তে জীবাণু ছড়িয়ে পড়েছে। সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা। নড়তে কষ্ট হচ্ছে। সেরে উঠতে বহু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। অন্তত দেড় মাস বিছানায় বিশ্রামে থাকতে হবে। তিন মাসের মধ্যে কোমরের টিস্যুর ক্ষত সেরে না উঠলে তাকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। আহত হওয়ার পর রাজধানীর উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন অভিনেত্রী অহনা। কিন্তু অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাওয়ায় সোমবার অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। বুধবার হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নেয়া হয় বলে জানান অহনার খালাতো বোন লিজা ইয়াসমীন মিতু। মিতু জানান, অহনার শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় তাকে অ্যাপোলোতে ভর্তি করা হয়েছিল। তার শরীরে ব্যথা ছিল। দুদিন চিকিৎসার পর এখন কিছুটা সুস্থবোধ করছে। এমআরই পরীক্ষার পর শরীরে হাড় ভাঙার লক্ষণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু কোমরের যে টিস্যু থাকে সেগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তার। মিতু জানান, অহনার সেরে উঠতে সময় লাগবে। দেড় মাস বিশ্রামে থাকতে বলেছেন চিকিৎসক। তিন মাসের মধ্যে কোমরের টিস্যুর ক্ষত সেরে না উঠলে তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। গত ৮ জানুয়ারি রাতে শুটিং শেষ করে অহনা তার খালাতো বোন মিতুকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসভবনের উদ্দেশে রওনা হন। উত্তরার কাবাব ফ্যাক্টরি থেকে কিছুটা সামনে সাত নম্বর সেক্টরের পূর্ব মাথায় একটি বেপরোয়া গতির পাথর বোঝাই ট্রাক সজোরে ধাক্কা দিয়ে অহনার ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষতি করে। অহনা গাড়ি থেকে নেমে ট্রাকচালককে নামতে বলেন। এ সময় ইচ্ছাকৃতভাবে আবার অহনার গাড়িকে সজোরে ধাক্কা দেয় চালক। গাড়ি থেকে নেমে অহনা প্রতিবাদ করে ট্রাকচালককে নামতে বললে তিনি অহনার সঙ্গে তর্কাতর্কি করেন। এ সময় অহনা নিজেই ট্রাকের দরজা দিয়ে উঠে চালককে নামাতে যান। কিন্তু চালক কথা না শুনে অহনাকে দরজায় ঝুলন্ত অবস্থায় ট্রাক ছেড়ে দেন। ট্রাকটি অহনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় নিয়ে উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরে পৌঁছালে স্থানীয়দের বাধায় ট্রাকচালক সজোরে ব্রেক করলে ছিটকে পড়ে আহত হন অহনা। অহনা কোমরের হাড়ে ও পিঠে প্রচণ্ড চোট পান। তাকে উদ্ধার করে মিতু হাসপাতালে ভর্তি করান। ট্রাকচালক মাদকাসক্ত ছিলেন জানিয়ে অহনা বলেন, ট্রাকচালক ছিল মাদকাসক্ত। অথচ অনেকে মন্তব্য করেছেন আমি নাকি মদ খেয়েছিলাম! আসল সত্যিটা হচ্ছে- মদ আমি খাইনি। মদ খেয়েছিল ট্রাকচালক। ঘটনার বিবরণ দিয়ে অহনা বলেন, আমি যদি ওই সময় ট্রাকে না উঠি তা হলে তো ট্রাক আমার ওপর দিয়ে উঠে যায়। আমি ট্রাকে সাধে ঝুলিনি। সঙ্গে থাকা মিতু (খালাতো বোন) ভিডিও বন্ধ করে পুলিশকে কল করতে বলি। এমতাবস্থায ট্রাকচালকের চেহারা বদলে গেল। তখন সে বলেছিল- পুলিশ ডাকছে, দেখাচ্ছি। এই বলে ট্রাক চালানো শুরু করে। ওই সময় অহনাকে মেরে ফেলতে সচেষ্ট হন চালক ও চালকের সহযোগী। বিষয়টি জানিয়ে অহনা বলেন, আমি ট্রাকে ঝুলন্ত অবস্থায়, চালকের সহকারী চালককে বলেছিল- এটা নায়িকা এটাকে যদি বাঁচায় দেন আমরা ফাইসা যাব। ট্রাকচালকের নির্মমতায় গুরুতর আহত হওয়ার পর অহনাকে ভর্তি করা হয়েছিল রাজধানীর উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সোমবার চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অহনাকে আহত করার ঘটনায় ৯ জানুয়ারি উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন অহনার খালাতো বোন লিজা ইয়াসমীন মিতু। রোববার সকালে ঢাকার সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্রাকচালক সুমন মিয়া ও তার সহকারী রোহানকে গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মামলায় গ্রেফতার ট্রাকচালক সুমন মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। টিভি নাটকে নিয়মিত অভিনয় করেন মিষ্টি মেয়ে অহনা। এর পাশাপাশি বেশ কিছু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র চোখের দেখা মুক্তি পায় ২০১৭ সালে। এমএ/ ০৪:০০/ ১৭ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2RyOz5V
January 17, 2019 at 10:08PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top