কলকাতা, ২৯ জানুয়ারি- পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে কোনোভাবেই জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বাস্তবায়িত করতে দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তাঁর অভিমত এনআরসি নির্বাচনী চমক ছাড়া আর কিছুই নয়। গত বছরের ৩০ জুলাই আসামে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির এনআরসি-এর চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়। এনআরসিএর কাছে জমা পড়া ৩.২৯ কোটি আবেদনকারীর মধ্যে চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয় ২.৮৯ কোটির কিছু বেশি মানুষের নাম। তালিকা থেকে বাদ পড়ে প্রায় ৪০ লাখ বাসিন্দা। আর তার পরেই বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে যথেষ্ট সোরগোল পড়ে যায়। এরই মধ্যে কয়েকদিন আগে শীর্ষ আদালতের পক্ষে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে চলতি বছরের ৩১ জুলাই এনআরসি-এর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। বিষয়টি নিয়ে অাসামবাসীদের মধ্যে আতঙ্কের শেষ নেই। এমন এক পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে তোপ দেগে মমতা বলেন, যারা এদেশের নাগরিক, তারা ভারতের নাগরিক। তাদের দুই বার করে নাগরিকত্বের নথি চেয়ে বিদেশি বলে প্রমাণ করবেন না। নাগরিকত্ব একবারই হয় এবং আমরা প্রত্যেকে এদেশের নাগরিক। আমরা ভোট দিই, আমাদের ব্যাঙ্কও অ্যাকাউন্টও আছে। সোমবার কলকাতার নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে খেলাশ্রী নামাঙ্কিত একটি অনুষ্ঠান থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা নিজের জন্ম তারিখের প্রসঙ্গ টেনে এনে মমতা বলেন আমার জন্মদিনের তারিখই আমি জানতাম না। বাবার মৃত্যুর পর আমার ভাই-ই একদিন বললো আমাদের দুইজনের বয়সের সনদে ফারাক মাত্র ৬ মাস। আমি তাকে বললাম দেখ বাবা-মায়ের কি কীর্তি করে বসে আছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আগেকার দিনে এসব হতো, এতে লজ্জা পাবার কিছু নেই। অনেকেই এখন আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায় কিন্তু আমি মুখ লুকিয়ে থাকি। কারণ ওটা আমার সত্যি জন্মতারিখ নয়। আমরা যারা আগে জন্মেছি তাদের সকলেরই এই সমস্যা আছে। সেখানে যদি কেউ আমার মায়ের জন্ম সনদ চায় এবং তা দিতে না পারলে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে, ভারতের নাগরিক বলে ঘোষণা দেওয়া হবে না। এটা চলতে পারে না। নাগরিকত্ব বিল নিয়ে মমতার স্পষ্ট জবাব আমরা ওদের নাগরিকত্বের জন্য বসে নেই। আমরা এই মাটিকে স্বাধীন করেছি। এই মাটিতে আমাদের জন্ম, এখানে মৃত্যু, এই মাটিতেই কর্ম-ধর্ম। ওরা (বিজেপি সরকার) ঠিক করবে কাকে কোনদিন নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ওরা বলছে তুমি ছয় বছরের জন্য বিদেশি হয়ে যাও..প্রথম তোমাকে বিদেশি বানানো তারপর তোমাকে নাগরিকত্ব দেবো। এর ফলে দুই কুলই যাবে। ওদের চালাকিটা বুঝতে পারলেন। এটা নির্বাচনী গিমিক, এর মধ্যে কোন সত্যতা নেই। এটা নিয়ে চিন্তা করার কোন কারণ নেই। আমরা যতক্ষণ বেঁচে আছি, এই সমস্ত ভয়, প্ররোচণা বা প্রলোভন দেখিয়ে কোন লাভ নেই। কয়েকদিন আগেই মালদহের একটি সভা থেকে এনআরসি ও নাগরিকত্ব ইস্যুতে মমতাকে প্রবল আক্রমণ শানিয়েছিলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। শাহের অভিযোগ ছিল ভোট ব্যাঙ্কএর জন্যই মমতার এই অবস্থান। এমনকি রীতিমতো ঘোষনা দিয়ে শাহ বলেছিলেন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নাগরিকত্ব বিল ইস্যুটি তাদের প্রচারণার হাতিয়ার হতে চলেছে। তবে নির্বাচনের আগে তারাও ছেড়ে কথা বলবে না-তা মমতার এদিনের বক্তব্যেই স্পষ্ট। এমএ/ ০২:০০/ ২৯ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2S7EcWt
January 29, 2019 at 08:05AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন