ঢাকা, ২৫ জানুয়ারি- শক্তিশালী দল নিয়েও জয়ের ধারায় থাকতে পারেননি ডেভিড ওয়ার্নার। ৭ ম্যাচে মাত্র ২টি জয় উপহার দিয়ে কনুইয়ের ইনজুরি নিয়ে নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে গেছেন তিনি। পরে অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন সোহেল তানভীর। তাতেও ভাগ্য ফেরেনি। অবশেষে অলক কাপালির নেতৃত্বে জয়ের ধারায় ফিরল সিলেট সিক্সার্স। রাজশাহী কিংসকে ৭৬ রানের বড় ব্যবধানে হারাল ওয়াকার ইউনুসের শিষ্যরা। দুর্দান্ত এ জয়ে শেষ চারের আশা বেঁচে রইল তাদের। এজন্য বাকি সব ম্যাচে জিততে হবে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় রাজশাহী। সোহেল তানভীরের শিকারে পরিণত হন আগুনে ফর্মে থাকা লরি ইভানস। সেই রেশ না কাটতেই তাসকিন আহমেদের বলির পাঁঠা হয়ে ফেরেন মুমিনুল। পরে রায়ান টেন ডেসকাটকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন ফজলে মাহমুদ। ভালোই খেলছিলেন তারা। তবে আচমকা পথচ্যুত হন ডেসকাট। তিনি অলক কাপালির বলে বোল্ড হয়ে ফিরলে চাপে পড়ে বরেন্দ্রভূমির দলটি। জাকির হাসানকে নিয়ে সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মাহমুদ। রান পেতে সংগ্রাম করতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে দারুণ জুটি গড়ে ওঠে। কিন্তু সেই জুটি গড়ে তুলতেই লক্ষ্য ধরাছোয়ার বাইরে চলে যেতে থাকে। ফলে পুষিয়ে দিতে হাত খুলে মারতে গিয়ে তাসকিনের বলে জেসন রয়ের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তবে ভরসা হয়ে ছিলেন মাহমুদ। ফিফটি তুলে চোখ রাঙাচ্ছিলেন তিনি। তাকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা সরান মোহাম্মদ নওয়াজ। ৪১ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় কাঁটায় ৫০ করে ফেরেন তিনি। ফলে বিপর্যয়ে পড়ে রাজশাহী। পরক্ষণেই ক্রিশ্চিয়ান জোনকার ও মিরাজকে তুলে নিয়ে রাজশাহীর ওপর চাপ দ্বিগুণ করেন নওয়াজ। ফলে জয়ের প্রহর গুনতে থাকে সিলেট। এ অবস্থায় সেকুগে প্রসন্নেকে সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান সোহেল তানভীর। এতে জয়টা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় সিলেটের। শেষ পর্যন্ত ১৮.২ ওভারে গুটিয়ে যায় রাজশাহী। শেষ দুই উইকেট ভাগাভাগি করে নেন তানভীর ও কাপালি। এদিন সেরা বোলারও তানভীর। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান খরচায় মহামূল্যবান ৩ উইকেট নেন তিনি। এর আগে ব্যাট হাতেও রেখেছেন অনবদ্য ভূমিকা। দুর্দান্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেটার। ম্যাচ শুরুর আগে সবাইকে চমকে দেয় সিলেট। কনুইয়ের ইনজুরিতে পড়ে বিপিএল ছেড়ে এখন অস্ট্রেলিয়ায় দলটির নিয়মিত অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। ফলে অধিনায়কত্ব পান সোহেল তানভীর। তবে তাকে দলকে নেতৃত্বের সুযোগ দেয়া হলো মাত্র এক ম্যাচ। গেল মঙ্গলবার খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে হারের পর তার হাত থেকে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড খুলে নিয়েছে সিলেট। নতুন দলনায়ক হয়েছেন অলক কাপালি। তবে টসভাগ্যকে পাশে পাননি তিনি। হেরে যান রাজশাহী কিংস অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের কাছে। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ফলে আগে ব্যাটিং করতে নামে সিলেট। অবশ্য শুরুটা আশাব্যঞ্জক হয়নি। সূচনালগ্নে আরাফাত সানির শিকার হয়ে ফেরেন সাব্বির রহমান। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ব্যক্তিগত ২৪ রানে ফেরেন লিটন দাস। পরে আফিফ হোসেনকে নিয়ে খেলা ধরেন জেসন রয়। দুর্দান্ত খেলতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে দারুণ মেলবন্ধন গড়ে ওঠে। স্বাভাবিকভাবেই ছোটাতে শুরু করেন স্ট্রোকের ফুলঝুরি। তবে হঠাৎই ছন্দপতন। সেকুগে প্রসন্নের বলে ক্লিন বোল্ড হন রয়। ফেরার আগে ২৮ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪২ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি। ওয়ার্নারের বিকল্প হিসেবে তাকে উড়িয়ে এনেছে সিলেট। এ ম্যাচ দিয়েই এবার বিপিএলে রানের অভিযান শুরু করেন রোমাঞ্চকর ইংলিশ ব্যাটসম্যান। রয় ফিরলে ফর্মের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি নিকোলাস পুরান। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে কিশ্চিয়ান জোনকারের হাতে লোপ্পা ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। খানিক পরই রায়ান টেন ডেসকাটের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরেন দুর্দান্ত খেলতে থাকা আফিফ। সাজঘরে ফেরত আসার আগে তিনি করেন ২৯ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কবায় ২৮ রান। এতে রানের গতি শ্লথ হয়ে যায়। এরপর ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ নওয়াজ। তবে রানের চাকা দ্রুত গড়াতে গিয়ে ধরা খান তিনি। মোস্তাফিজের বলে ফজলে মাহমুদের তালুবন্দি হয়ে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন পাকিস্তানি রিক্রুট। ততক্ষণে লড়াকু পুঁজির ভিত পেয়ে যায় সিলেট। তাতে এসে জ্বালানি জোগান সোহেল তানভীর। মাত্র ১০ বলে ৪ চারে ২৩ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ব্যাটে চড়ে শেষ পর্যন্ত ১৮০ রানের সংগ্রহ গড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। অপরপ্রান্তে ১৪ বলে ২ চারে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন অলক কাপালি। এমএ/ ০৭:২২/ ২৫ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2RQxFQm
January 26, 2019 at 01:32AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন