ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি- বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী। ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গান করছেন। এই দীর্ঘ পথচলায় তিন হাজার গান গেয়েছেন এ শিল্পী। শুধু তাই নয়, অডিও থেকে চলচ্চিত্র- সব মাধ্যমেই সফল তিনি। সুবীর নন্দীর অনেক গান কালজয়ী হয়ে শ্রোতাদের মুখে মুখে ফিরে। এদিকে আধুনিক গানের পাশাপাশি এ শিল্পী গেয়েছেন নজরুল সংগীত, শাস্ত্রীয় সংগীত, ভজন, কীর্তন এবং পল্লীগীতিও। সুবীর নন্দী এখনো ব্যস্ত সময় পার করেন গান নিয়ে। যদিও সংখ্যায় সেটা কম। অ্যালবাম, স্টেজ শো ও টিভি লাইভে মাঝেমধ্যেই দেখা মেলে তার। বর্তমানে এ শিল্পী রয়েছেন আমেরিকায়। সেখানে তাকে নিউ ইয়র্কের প্রবাসীরা সংবর্ধনা দিয়েছেন। ২৪শে জানুয়ারি সন্ধ্যায় উডসাইডের কুইন্স প্যালেস মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সকল শ্রেণি-পেশার প্রবাসীরা। অনুষ্ঠান শেষে সুবীর নন্দী কয়েকটি গান গেয়েও শোনান। সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় এ শিল্পীর। সব মিলিয়ে কেমন আছেন? সুবীর নন্দী বলেন, ভালো। সময়টাও ব্যস্ততার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছে। এখন মূলত কি নিয়ে ব্যস্ত? উত্তরে তিনি বলেন, এখন মাঝেমধ্যে স্টেজ শো ও টিভি লাইভ করি। তবে সেটা কেবল মনপছন্দ হলেই। এ ছাড়াও একটি অ্যালবামের কাজ করছি। সেই অ্যালবাম সম্পর্কে বলুন। সুবীর নন্দী বলেন, আমার সুরে একটি পূর্ণ অ্যালবাম করছি। এখানে গাইছেন বেশ কজন শিল্পী। এদের মধ্যে রয়েছেন রফিকুল আলম, তপন চৌধুরী, রুমানা খান, রাশেদ, ঝিলিক প্রমুখ। আমি নিজেও গেয়েছি। খুব শিগগিরই মিউজিক টুডে থেকে প্রকাশ হবে অ্যালবামটি। এখানে যারাই গেয়েছেন তারা নিজেদের সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আমার বিশ্বাস শ্রোতারা ভালো কিছু পাবেন। চলচ্চিত্রে কি গাওয়া হয়? সুবীর নন্দী বলেন, তেমন একটা না। কারণ প্রস্তাব থাকে চলচ্চিত্রে গান করার। তবে মনের মতো না হলে সে গানে কণ্ঠ দিতে আমি রাজি নই। তাই অনেক কাজ ফিরিয়ে দিতে হয়। তারপরও নতুন গান যে করবো না তা নয়। সবকিছু ভালো লাগলে অবশ্যই গান করবো। এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। সংগীতে এতটা পথ সফলভাবে পাড়ি দিয়েছেন। এর মূল রহস্য কি? সুবীর নন্দী বলেন, রহস্যের কিছু নেই। সবই শ্রোতাদের ভালোবাসা। তাদের ভালোবাসা আমি যতটা পেয়েছি সেটা মনে হয় সবাই পায় না। এজন্য আমি চেষ্টা করছি এখনো ভালো কিছু গান শ্রোতাদের উপহার দেয়ার। আমি সব সময় ভালোবাসা থেকে গান করেছি। শ্রোতারা সেই গানগুলো গ্রহণ করেছেন। সেটাই আমার সব চেয়ে বড় প্রাপ্তি। চলতি সময়ের গান কি আপনার শোনা হয়? শোনা হলে কেমন লাগে? সুবীর নন্দী বলেন, শোনা হয়। তবে অনেক বেশি না। এখনো অনেকে ভালো গান করার চেষ্টা করছে। অনেকের মধ্যেই মেধা আছে। তবে এখন সবাই যেন গাইবার চেষ্টা করছে। যার কাজ যেটা নয় তার সেটা করা উচিত নয়। গাইতে হলে গানটাকে মনেপ্রাণে ভালোবাসতে হবে। হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। রাতারাতি তারকা হওয়ার জন্য গান করলে হবে না। কিন্তু এ সময়ে বেশিরভাগ ছেলেমেয়ের মধ্যে এই প্রবণতা দেখতে পাই। তার ফলে এখন সস্তা কথা-সুরের গান বেশি হচ্ছে । আর দিন দিন সফটওয়্যারনির্ভর শিল্পীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে এর মধ্য থেকেও ভালো ও সত্যিকারের মেধাবীরা বেরিয়ে আসবে বলে বিশ্বাস রাখি। কারণ, শেষ পর্যন্ত জয় কিন্তু ভালোরই হয়। তরুণদের জন্য কোনো পরামর্শ আছে আপনার? সুবীর নন্দী বলেন, আমি নিজে এখনো শিখি। তাই শেখার কোনো শেষ নেই। আমৃত্যু শেখা যায়। আমি চাইবো তরুণ প্রজন্ম সব সময় শেখার মধ্যে থাকুক। অর্থের জন্য নয়, ভালোবাসা থেকে গান করুক। ভালো মানের কথা-সুরের কাজ করতে হবে। এমন গান করতে হবে যেগুলো যুগের পর যুগ শ্রোতারা মনে রাখবে। আর/০৮:১৪/৩০ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2CT3cXE
January 30, 2019 at 03:13PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top