কলকাতা, ১৫ জানুয়ারি- ব্রিগেডের মঞ্চে প্রথম সারির কংগ্রেস নেতৃত্বকে এনে চমকের অপেক্ষায় তৃণমূল সুপ্রিমো৷ পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে তা ভেস্তে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন হাত শিবিরের প্রদেশ নেতৃত্ব৷ আড়ল থেকে মুচকি হাসছিলেন তারা৷ কিন্তু মঙ্গলের সন্ধ্যাতেই এল অমঙ্গলের বার্তা৷ মমতা নিজে জানালেন বিরোধী দলনেতা আসছেন সভায়৷ ফাঁপড়ে বিধান ভবনের নেতারা৷ লজ্জার হাত থেকে কোনও মতে বাঁচতে জাতীয় রাজনীতির বাস্তবতাকেই সাফাই হিসাবে ঢাল করছেন কট্টর মমতা বিরোধী প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা৷ ২০১৯ লোকসভা ভোটে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে উৎখাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি জোট গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে৷ সেই জোট শক্ত করতে সচেষ্ট তৃণমূল সুপ্রিমো৷ আগামী ১৯শে জানুয়ারি ব্রিগেডে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে একমঞ্চে এনে চমক দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার নবান্নে তিনি বলেন, কংগ্রেসের তরফে আসছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে, অ-বিজেপি মুখ হিসেবে থাকছেন দেবেগৌড়া, ওমর আবদুল্লা, ওমর ফারুক, অখিলেশ যাদব, শরদ পাওয়ার, রামজেঠ মালানি, তেজস্বী যাদব, অজিত সিং সহ চন্দ্রবাবু নাইডু, স্তালিন৷ থাকছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ শুধু তাই নয়, থাকছে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা শত্রঘ্ন সিনহা ও যশবন্ত সিনহা-ও৷ দিল্লিতে দোস্তি, রাজ্যে কুস্তি না-পসন্দ সোমেন, মান্নান, অধীরদের৷ মমতার ব্রিগেডে কংগ্রেসের প্রথম সারির কোনও নেতা এলে হাইকম্যান্ড যে প্রদেশ নেতাদের কথাকে গুরুত্ব দেয় না তা প্রমাণ হবে৷ রাজ্যবাসীর কাছে ভুল বার্তা যাবে৷ তাই কংগ্রেস নেতাদের ব্রিগেডের মঞ্চে আসা ঠেকাতেকয়েকদিন আগেই ১০, আকবর রোডে হাজির হন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি৷ অনুরোধ করেন, ব্রিগেডে রাহুল গান্ধি যেন যোগ না দেন৷ আর যদি একান্তই কাউকে পাঠাতে হয় তা হলে তুলনায় কম ওজনদার কোনও প্রতিনিধিকে যেন পাঠানো হয়৷ দলের সভাপতি তাতে সম্মতি দেন বলে সূত্রের খবর৷ কিন্তু এদিন তৃণমূল সুপ্রিমোর ঘোষণাতেই সব সমীকরণ ওলট-পালট হয়ে যায় প্রদেশ কংগ্রেস শিবিরের৷ এযেন হাতের রাশ আগলা হওয়ার ইঙ্গিত বাংলার বুকে৷ খাড়গে যে একেবারেই কম ওজনের নেতা নন সেটা প্রদেশ নেতৃত্বের অজানা নয়৷ মল্লিকার্জুন খাড়গে একদিকে লোকসভার বিরোধী দলনেতা৷ অন্যদিকে কংগ্রেসের রাহুল, সোনিয়ার-ও কাছের৷ এই পরিস্থিতিতে কীভাবে শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় তারই চেষ্টার ছোড়দা ও অনুগামীরা৷ তবে মমতার ব্রিগেডে বিরোধী দলনেতা আসার প্রসঙ্গে এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, আমার কাছে এরকম কোনও খবর নেই৷ সূত্র মারফত এটাও জানা যাচ্ছে, দলের কট্টর মমতা বিরোধী নেতা হিসাবে পরিচিত রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকেও ব্রিগেডে থাকার নির্দেশ দিয়েছে হাইকম্যান্ড৷ এযেন গোদের উপর বিশ ফোঁড়া৷ অনেকেই বলছেন, ব্রিগেডের আগেই বিরোধী শিবিরের কোন নেতারা আসবেন তা ঘোষণা করে মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছেন মমতা৷ আর তাতেই কুপোকাত প্রদেশ কংগ্রেসের কেষ্ট, বিষ্টুরা৷ লজ্জা ঢাকতে এখন তাদের ঢাল জাতীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতা৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এযেন খেলার অ্যাকশন রিপ্লে৷ কংগ্রেসের প্রদেশ নেতারা যখন তৃণমূলকে চেক মেট বলতে যাবেন, তখন রাজাই বেহাত৷ রাজ্য নেতাদের অগ্রাহ্য করে কংগ্রেসের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল জাতীয় রাজনীতির বাস্তবতা৷
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2RSE7Wc
January 16, 2019 at 05:08AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন