ঢাকা, ২২ জানুয়ারি- বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বিভিন্ন জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা ছিলেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীত ও শিল্পাঙ্গনে। তার অকালে চলে যাওয়া সহকর্মীদের কেউ মেনে নিতে পারছেন না। শোকে স্তব্ধ অনেকেই। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭৮ সালে মেঘ বিজলী বাদল ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদি, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনকচাঁপাসহ বাংলাদেশি প্রায় সব জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীর গাওয়া বহু জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা তিনি। ১৯৭৬ সাল থেকে তার নিয়মিত গান করা। প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি গান লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন। বুলবুলের জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে রয়েছে ১. সব কটা জানালা খুলে দাও না (সাবিনা ইয়াসমিন) ২. সেই রেল লাইনের ধারে (সাবিনা ইয়াসমিন) ৩. আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি (এন্ড্রু কিশোর) ৪. আমার বুকের মধ্যেখানে (এন্ড্রু কিশোর ও সামিনা চৌধুরী) ৫. আম্মাজান আম্মাজান (আইয়ুব বাচ্চু) ৬. পড়ে না চোখর পলক (এন্ড্রু কিশোর) ৭. যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে (খালিদ হাসান মিলু ও কনকচাঁপা) ৮. তুমি মোর জীবনের ভাবনা (এন্ড্রু কিশোর) ৯. চিঠি লিখেছে বউ আমার (মনির খান) ১০. আমার দুই চোখে দুই নদী (সামিনা চৌধুরী) ১১. একাত্তরের মা জননী (আগুন ও রুনা লায়লা) ১২. জীবন ফুরিয়ে যাবে ভালবাসা ফুরাবে না জীবনে (এন্ড্রু কিশোর ও কনকচাঁপা) ১৩. আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন (এন্ড্রু কিশোর) ১৪. আমি জীবন্ত একটা লাশ (কুমার বিশ্বজিৎ) ১৫. অনেক সাধনার পরে (খালিদ হাসান মিলু ও কনকচাঁপা) আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করে দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এই দেশ আমার সুন্দরী রাজকন্যা, আয় রে মা আয় রে, উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম, সব কটা জানালা খুলে দাও না, মাঝি নাও ছাইড়া দে, ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে, সেই রেললাইনের ধারে, মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না-এমন বহু কালজয়ী গানের স্রষ্টা এ শিল্পী। তিনি প্রেমের জন্য লিখেছেন- আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, ভাড়া কইরা আনবি মানুষ, প্রেমের তাজমহলসহ আরও বহু জনপ্রিয় গান। ব্যক্তিগত জীবনে এক সন্তানের জনক ছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তার ছেলে সামির আহমেদ। বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। এ জনপ্রিয় শিল্পীর জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায়। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বুলবুল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাইফেল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রণাঙ্গনে। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ স্মৃতি-বিস্মৃতি নিয়ে বহু জনপ্রিয় গান লিখেছেন ও সুর করেছেন। মঙ্গলবার ভোররাতে রাজধানীর আফতাব নগরের বাসায় হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়। বরেণ্য এ শিল্পীর লাশ আগামীকাল বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে। সেখানে বেলা ১১টায় তাকে সর্বস্তরের জনতা শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নেয়া হবে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের লাশ। সেখানে অনুষ্ঠিত হবে তার প্রথম জানাজা। বরেণ্য এ শিল্পীর মরদেহ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে। এমএ/ ১১:৩৩/ ২২ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2T8YSdF
January 23, 2019 at 05:35AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন