জোহানেসবার্গ, ৪ জানুয়ারি-প্রবাসী বাংলাদেশির জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা দিন দিন অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় কমবেশি পৃথিবীর সব দেশের মানুষ ব্যবসা বানিজ্য করে বসবাস করলেও একমাত্র বাংলাদেশিরা এ দেশে নিরাপদ নয়। দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশিদের ২০১৮ সালটি মোটেও ভাল কাটেনি। নান্দনিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এ দেশটিতে ব্যবসা বানিজ্য নিয়ে বাংলাদেশিদের ভাল থাকার কথা থাকলেও অপরাধ প্রবনতা ও সাম্প্রতিক ব্যবসায়ীক মন্দার কারণে বাংলাদেশিদের সুখ যেন সোনার হরিন হয়ে গেছে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারী থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যবসায়িক মন্দা, চুরি ছিনতাই অপহরণ ও হত্যাকান্ড ছিল নিত্যদিনের ঘটনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য। দক্ষিণ আফ্রিকান পুলিশ সার্ভিস জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে নানা ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১১৩ জন, গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন ৫৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক, অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১৮ টি এবং দোকান ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৫৩৩ টি। এছাড়াও শেষ এক সাপ্তাহে নিহত হয়েছে ৪ জন বাংলাদেশি নাগরিক। পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, প্রতিবছরে অনেক বাংলাদেশিরা এত দুর্ঘটনার শিকার হলেও অপরাধীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন মামলা দায়ের হয়নি। সব মামলাগুলি পুলিশের পক্ষে ইউডি মামলা হিসেবে গ্রহন করা হয়েছে। ভিকটিমদের পক্ষে সুনির্দিষ্ট কোন মামলা না থাকায় সংশ্লিষ্ট ঘটনায় কোন আসামী গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশির জন্য ২০১৮ সালটি আতংক আর হতাশা ছিলো, ব্যবসা-বানিজ্য তুলনামূলক মন্দা হলেও সময় কারো জন্য থেমে থাকেনি। সুখ-দুঃখের মিশ্রণে বছর শেষ করেছেন বাংলাদেশিরা। অনেক সময় দেখা যায় হত্যাকান্ডের শিকার হওয়া ব্যক্তির কোন আত্নীয় স্বজন সাউথ আফ্রিকায় না থাকায় এ হত্যাকান্ড নিয়ে তেমন কেউ আগ্রহ দেখায় না। অপরদিকে বাংলাদেশি ছাড়া অন্যকোন বিদেশী নাগরিক দক্ষিণ আফ্রিকায় খুনের শিকার হলে ঐ দেশের কমিউনিটি নেতারা বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় অজ্ঞাত আসামীর নামে মামলা দায়ের করে এবং মামলার চুড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত ঐ মামলার তদারকি করে যায়। এমন কি ঐ দেশের অ্যাম্বাসী পর্যন্ত মামলার তদারকির জন্য নিজস্ব লইয়ার নিয়োগ করে থাকে। কিন্ত একমাত্র বাংলাদেশি প্রবাসীদের বেলায় সবকিছু উল্টো। যে কোন এলাকায় কোন বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকান্ডের শিকার হলে স্থানীয় বাংলাদেশিরা চাঁদা তুলে লাশটা কোনরকমে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এ ক্ষেত্রে আমরা কোনদিন দেখিনি বাংলাদেশ কমিউনিটির কোনো নেতা একটি লাশের তদারকি করতে বা কমিউনিটি বাদী হয়ে মামলা করতে। বাংলাদেশ প্রশাসন যে কোনো প্রকারেই হোক দক্ষিণ আফ্রিকাস্থ অসহায় প্রবাসী বাংলাদেশির বিষয় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের সঙ্গে একটি শক্তিধর চুক্তিনামা করা এবং সরকারিভাবে দেশীয় আন্তর্জাতিক ইমপোর্ট এক্সপোর্ট করার জোরালো দাবী জানান দক্ষিণ আফ্রিকাস্থ সকল শ্রেনীর প্রবাসী বাংলাদেশি ও হাইকমিশন। তাতেই হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকাস্থ প্রবাসী বাংলাদেশির শান্তি ফিরিয়ে আসতে পারে। বাংলাদেশ সরকার ব্যতীত এ সমস্যার সমাধান কখনোই সম্ভব নয়। দিনদিন প্রবাসীদের লাশের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সূত্র: বিডি২৪লাইভ এইচ/১৮:৫৫/০৪ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2F5mWeh
January 05, 2019 at 12:55AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন