যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের মধ্যকার বহুল আকাঙ্ক্ষিত দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে। তবে সুনির্দিষ্ট সময় ও স্থান সম্পর্কে হোয়াইট হাউস বিস্তারিত কিছু না জানালেও গুঞ্জন রয়েছে, সম্ভাব্য বৈঠকস্থল হতে পারে ভিয়েতনামে। এবার দ্বিতীয় বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে জাতিসংঘ। এ বৈঠকে দুই নেতা উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে একটি চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। খবর বিবিসি ও এএফপির।
সিঙ্গাপুরে গত বছর ১২ জুন ঐতিহাসিক প্রথম বৈঠকে মিলিত হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। বৈঠক শেষে এক সমঝোতা চুক্তিতে দীর্ঘদিনের বৈরী দুই দেশ যৌথভাবে কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার অঙ্গীকার করে। ওই বৈঠকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কথা হলেও কোনো সুনির্দিষ্ট রূপরেখা না থাকায় পরবর্তী সময়ে ইস্যুটিতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ নিয়ে বছরজুড়েই দু’দেশের মধ্যে চলেছে দরকষাকষি।
বিষয়টি নিয়ে এ বছরের শুরু থেকে ট্রাম্পও বেশ কয়েকবার কিমের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। উত্তর কোরীয় নেতার সঙ্গে কয়েকটি চিঠিও আদান-প্রদান হয় তার। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত চো ইউন জে গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের জানান, নববর্ষের ভাষণে কিম ‘যে কোনো সময়’ ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে আগ্রহ দেখানোর পর দুই দেশের মধ্যে নতুন করে যোগাযোগ শুরু হয়েছে।
ট্রাম্প ও কিমের দ্বিতীয় বৈঠকের দিনক্ষণ নিয়ে আলোচনা করতে গত ১৮ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে যান পিয়ংইয়ংয়ের শীর্ষ দূত কিম ইয়ং চোল। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের ডানহাত খ্যাত ওই আলোচক ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে কিমের পক্ষ থেকে লেখা একটি চিঠি ট্রাম্পকে দিয়েছেন। ওই চিঠিতে কী আছে তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, সেখানে দ্বিতীয় বৈঠকের প্রসঙ্গই ছিল। এর পরই হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় বৈঠকের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠক ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ও বৈঠকস্থলের কথা না জানালেও হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স বলেছেন, নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে দু’পক্ষের আলোচনায় অগ্রগতি হলেও যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ওপর চাপ ও নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখবে।
এদিকে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যকার দ্বিতীয় বৈঠকের দিনক্ষণ নির্ধারিত হওয়ার ঘটনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে জাতিসংঘ। মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেছেন ‘উপযুক্ত সময়ে’ বৈঠকের ঘোষণা এসেছে। গুতেরেস বলেন, ‘আমরা মনে করি, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার সংলাপ আবারও শুরু হওয়া ও কোরীয় উপদ্বীপের পূর্ণাঙ্গ নিরস্ত্রীকরণের সুস্পষ্ট একটি রূপরেখা প্রণয়নের এটাই উপযুক্ত সময়।
সিঙ্গাপুরের বৈঠকে পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সমঝোতা হলেও নিরস্ত্রীকরণের উপায় ও সময়সীমা সুনির্দিষ্ট না হওয়ায় পশ্চিমা বিশ্নেষকদের অনেকেই বৈঠকটির সফলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কারণ, প্রথম বৈঠকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পিয়ংইয়ং একটি পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্র ও রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস করেছে। এর পরও ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পায়নি তারা। এ নিয়ে কয়েক মাস ধরে দু’দেশের সম্পর্কে স্থবিরতা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে টানাপড়েন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ভবিষ্যৎ নিয়েও সন্দেহ বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই ফেব্রুয়ারির বৈঠকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও নিরস্ত্রীকরণের সুস্পষ্ট ঘোষণা নিয়েই কথা হবে বলে ধারণা বিশ্নেষকদের।
from মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্য – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://bit.ly/2Cy04QZ
January 20, 2019 at 07:38AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.