সিলেট, ১৫ জানুয়ারি- কেমন হবে এবারের সিলেট পর্ব? ইতিহাস জানাচ্ছে আগেরবার চার দিনের প্রথম পর্ব বেশ ভালই জমেছিল। প্রতি ম্যাচে গ্যালারি ভরা দর্শক ছিল। চার ও ছক্কার ফুলঝুরি ঝড়েছে। বিগ স্কোরিং গেম এবং মাঠে জমজমাট লড়াই হয়েছে। মানে দর্শকরা প্রাণ ভরে খেলা উপভোগ করেছেন। এবারও কি সেই ধারা অব্যাহত থাকবে? পুণ্যভূমি সিলেটের আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের লাল মাটির উইকেটে পেস ও বাউন্স ঢাকার চেয়ে বেশী। বল ব্যাটে আসে। গতি ও বাউন্স ওঠা নামাও করে কম। খুব বেশী পিছনে তাকাতে হবে না। এই তো এক মাস (২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর) আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই মাঠে একটি ওয়ানডে আর একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। সে দুই ম্যাচেই উইকেট ছিল ব্যাটিং বান্ধব। এর ভিতরে ওয়ানডে ম্যাচটি ছিল সুখস্মৃতিতে ভরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৯৮ রানে থামিয়ে ৮ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছিল মাশরাফির বাংলাদেশ। খেলা শেষ হয়েছিল দিনের ৬৯ বল আগে। আর টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ ১২৯ অলআউট হলেও ক্যারিবীয়রা ৫৫ বল আগেই ঐ রান টপকে গেছে। ঐ দুই ম্যাচেই ব্যাটসম্যানরা স্বচ্ছন্দে খেলেছেন। বিগ হিটও নিতে পেরেছেন প্রচুর। আর তাতেই প্রমাণ হয়েছে সিলেটের পিচ চমৎকার ব্যাটিং উইকেট। ফ্রি শটস খেলা যায়। চার ও ছক্কা হাঁকানো যায় অনায়াসে। আজ থেকে পরবর্তী পাঁচ দিনের আট ম্যাচেও কি সেই চেনা সিলেট স্টেডিয়ামের দেখা মিলবে ? পরিসংখ্যান আশা জাগাচ্ছে। আগের বার সিলেট স্টেডিয়ামে জমজমাট ও আকর্ষণীয় বিপিএল দেখেছেন দর্শক-অনুরাগিরা। আট ম্যাচে আগের বার ২০০+ স্কোর হয়েছে দুই বার। প্রথমবার খুলনার বিপক্ষে ঢাকা করেছিল ২০২/৭। দ্বিতীয় বার ২০০ করেছিল স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্স ২০৫/৬, রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে। বাকি ছয় ম্যাচের দুটিতে দুই দলই দেড়শোর বেশী রান করেছিল। তার প্রথমটি ছিল রাজশাহী কিংস ও রংপুর রাইডার্সের ম্যাচে। যেখানে রাজশাহীর করা ১৫৪ রান টপকে ৭ বল আগে ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নিয়েছিল মাশরাফির রংপুর। পরের ম্যাচটিও ছিল রংপুরের, প্রতিপক্ষ চিটাগাং ভাইকিংস। সে ম্যাচে চিটাগাংয়ের ৪ উইকেটে তোলা ১৬৬ র জবাবে রংপুর থেমে গিয়েছিল ১৫৫তে (৮ উইকেটে)। অন্য চার ম্যাচে গড়পড়তা স্কোর ছিল ১৪৫-১৪৮। আগের বার সিলেটে সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ১৩৬/৭। সিলেট পর্বের সেই উদ্বোধনী ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১৩০র ঘরে থামিয়ে সিলেট সিক্সার্স পেয়েছিল ৯ উইকেটের অনায়াস জয়। পুরো আট ম্যাচের গড় স্কোর লাইন ছিল ১৬০ +। যদি উইকেট তেমন ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি হয়, তাহলে আগাম বলেই দেয়া যায় সিলেট পর্ব জমবে এবারো। দর্শকরা চার ও ছক্কার প্রদর্শনী দেখতে পাবেন। ঢাকায় সাত দিনের প্রথম পর্বে কিছু ম্যাচ ছাড়া যার দেখা মেলেনি। শেরে বাংলার কালো মাটির পিচ স্লো, বাউন্সও তুলনামূলক কম। বল একটু ধীরে ব্যাটে আসে। একদম তেড়েফুঁড়ে শটস খেলা সত্যিই কঠিন। তাই ঢাকায় রান কম ওঠে । চার ও ছক্কার অবাধ প্রদর্শনীর দেখাও মেলে না তেমন। মোদ্দা কথা, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট মানেই যে পরিপূর্ণ দর্শক বিনোদন-তা খুব কমই মেলে। এটাকে ঠিক অভিযোগ ভাবার যৌক্তিকতা কম। এটা আসলে চিরন্তন সত্যই হয়ে গেছে। এবারও বছরের শুরুতে শেরে বাংলা ঠিক আগের মত মরা, প্রাণহীন। এমন স্লো পিচে প্রথম দিকে রীতিমত রান খরায় ভুগেছে বিপিএল। তারপর সময় গড়ানোর সাথে সাথে রান উঠেছে। তবে সাত দিনের প্রথম পর্বের বড় অংশে প্রথম ম্যাচটি হয়েছে লো স্কোরিং। এবার ঢাকায় সাত দিনে হওয়া ১৪ ম্যাচে দুশো হয়নি একবারও। তবে ১৮০ থেকে ১৯০র ঘরে স্কোর হয়েছে ছয় বার। যার মধ্যে ঢাকা ডায়নামাইটসই করেছে তিনবার (১৯২/৬ , ১৮৯/৫ , ১৮৩/৯)। এছাড়া রংপুর রাইডার্স (১৮১/৯) এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স (১৮৪/৫) ও চিটাগাং ভাইকিংস (১৮৬/৬) একবার করে ১৮০র ঘরে পা রেখেছে। দুটি ম্যাচে দুই দলই ১৮০+ রান করেছে। যার একটি ছিল রংপুর রাইডার্স (১৮১/৯) ও ঢাকা ডায়নামাইটসের (১৮৩/৯) মধ্যে। আর অপরটি ছিল ঢাকা পর্বের শেষ দিনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স (১৮৪/৫) ও চিটাগাং ভাইকিংসের (১৮৬/৬) । ওপরের এই পরিসংখ্যান পড়ে মনে হবে ঢাকা পর্বে বুঝি রান উৎসব হয়েছে। আসলে তা নয়। শেরে বাংলায় বেশ কটি ম্যাচ রীতিমত রান খরায় ভুগেছে। যেখানে চ্যাম্পিয়ন রংপুর ও চিটাগাং ভাইকিংসের মধ্যে প্রথম ম্যাচে মাশরাফির দল ৯৮ রানে অলআউট হয়েছিল। ঐ রান টপকে চিটাগাং ভাইকিংস ৩ উইকেটের জয় পেলেও খেলতে হয়েছে শেষ ওভার ( ১৯.১) অবধী। এছাড়া আরও দুবার ১০০ রানের নীচে অলআউট হবার ঘটনা ঘটেছে। সর্বনিম্ন স্কোর হয়েছে রংপুর ও কুমিল্লা ম্যাচে। কুমিল্লা অলআউট হয়েছে ৬৩ রানে। খুলনা টাইটান্সও ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ৮৭ রানে অলআউট হয়েছে। মোদ্দা কথা, ঢাকায় এবার ম্যাচ পিছু গড় স্কোর ছিল ১৪০। আর সিলেটে আগের বার খেলা প্রতি রান উঠেছিল ১৬০র বেশী। রান তোলার সেই ধারা অব্যাহত থাকুক এমন প্রত্যাশা প্রতিটি ক্রিকেট ভক্তের। সূত্র: জাগোনিউজ২৪ এইচ/১৪:৩৫/১৫ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2FyerI1
January 15, 2019 at 08:36PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top