ঢাকা, ২৮ জানুয়ারি- ব্যাট হাতে কাজটা অর্ধেক করে রেখেছিলেন এভিন লুইস। চার-ছ্ক্কার পসরা সাজিয়ে অনবদ্য সেঞ্চুরি করে দলকে ২৩৭ রানের পাহাড়সম পুঁজি এনে দিয়েছিলেন তিনি। টার্গেটে দুরন্ত শুরু জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুভসূচনা করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী ও ব্র্যান্ডন টেইলর। দলেক উড়ন্ত শুরু এনে দেন তারা। ভালোই খেলছিলেন ওপেনিং জুটি। তবে হঠাৎই পথ হারান জুনায়েদ। মেহেদী হাসানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শামসুর রহমানকে ক্যাচ দিয়ে আসেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ডেভিড মালানকে নিয়ে খেলা ধরার চেষ্ট করেন টেইলর। তবে সমর্থন জোগাতে পারেননি মালান। শহীদ আফ্রিদির বলে মেহেদী হাসানের হাতে লোপ্পা ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সেই জের না কাটতেই পাকিস্তানি লেগস্পিনারের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ক্লিন বোল্ড হয়ে ফিরলে চাপে পড়ে খুলনা। এ পরিস্থিতিতে দুর্দান্ত খেলতে থাকা টেইলরকে ফিরিয়ে তাদের ওপর চাপ দ্বিগুণ করেন আফ্রিদি। ফেরার আগে ৩৩ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় কাঁটায় ৫০ রান করেন জিম্বাবুইয়ান উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। পরে চেষ্টা করেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। তবে সেই প্রেচেষ্টায় বাদ সাধেন থিসারা পেরেরা। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের তালুবন্দি করে মাত্র ১৩ বলে ১ চারের বিপরীতে ২ ছক্কায় ২২ রান করা ক্যারিবিয়ানকে ফেরান তিনি। খানিক পরই নাজমুল হোসেনকে তুলে নেন সাইফউদ্দিন। এ বিপর্যয়ের মধ্যে আফ্রিদি অসাধারণ থ্রোতে রানআউট করে আরিফুল হককে ফেরালে জয়ের পথে এগিয়ে যায় কুমিল্লা। একে ফিরে গিয়েছিলেন স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা। তবে থেকে গিয়েছিলেন এভিন লুইস। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছোটান স্ট্রোকের ফুলঝুরি। রীতিমতো কামান দাগান তিনি। তার তাণ্ডবে ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি অবস্থা হয় মাহমুদউল্লাহদের। তাদের নাকের পানি, চোখের জল এক করে বিধ্বংসী সেঞ্চুরি তুলে নেন ক্যারিবীয় হিটার। তাতে ২৩৭ রানের পাহাড় গড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। বিপিএল ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান। কয়েকদিন আগে অ্যালেক্স হেলস ও রাইলি রুশোর সেঞ্চুরিতে রংপুর রাইডার্সের করা ২৩৯ রানই হয়ে থাকল সর্বোচ্চ। সেই রেকর্ড ভাঙার সুযোগ ছিল কুমিল্লার। তবে শেষ ৪ বলে কোনো বাউন্ডারি না আসায় তা হয়নি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ৩৩তম ম্যাচে টস জিতে আগে বোলিং নেন খুলনা টাইটানস অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ফলে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। শুরুটা হয় আশাব্যঞ্জক। উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তামিম ইকবাল ও এভিন লুইস। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৮ রান তোলেন তারা। ২৫ রান করা তামিমকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। পরের বলেই আনামুল হককে তুলে নিয়ে ধাক্কা দেন খুলনা অধিনায়ক। রানের খাতায় খুলতে পারেননি বিজয়। তবে সেই ধাক্কাটা টের পেতে দেননি এভিন লুইস। পরে ইমরুল কায়েসকে নিয়ে খেলা ধরেন তিনি। একপর্যায়ে জমাট বেঁধে ওঠে তাদের জুটি। প্রথমে ধীর-লয়ে চললেও ক্রিজে সেট হওয়া মাত্রই ছড়ি ঘোরাতে শুরু করেন তারা। রীতিমতো ঝড় তোলেন এ জুটি। ব্যাটকে তলোয়ার বানিয়ে কচুকাটা করেন প্রতিপক্ষ বোলারদের। পথিমধ্যে ফিফটি তুলে নেন লুইস। হাফসেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যান ইমরুলও। তাতে দুরন্ত গতিতে ছোটে কুমিল্লা। তবে অতিরিক্ত চড়াও হতে গিয়ে শরিফুল ইসলামের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক। সাজঘরে ফেরত আসার আগে ২১ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩৯ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন ইমরুল। পরে ক্রিজে এসে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি থিসারা পেরেরা। কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের বলে উইজকে ক্যাচ দিয়ে আসেন তিনি। এর রেশ না কাটতেই ক্যারিবীয় পেসারের বলির পাঁঠা হন বুমবুম শহীদ আফ্রিদি। তবে একপ্রান্ত আগলে থেকে যান লুইস। তার তাণ্ডব চলতেই থাকে। পরে ক্রিজে এসে রানের ফোয়ারা ছোটান শামসুর রহমান। জমে ওঠে তাদের যুগলবন্দি। একের পর এক বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির পসরা সাজান তারা। তাতে বিপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় কুমিল্লা। তবে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ২৩৭ রান তুলে থামেন এ জুটি। মাত্র ৪৯ বলে ৫ চারের বিপরীতে দ্বিগুণ ছক্কায় ১০৯ রানের হার না মানা বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন লুইস। আর কেবল ১৫ বলে ১ চারের বিপরীতে ২ ছক্কায় ২৮ রানের টর্নেডো ক্যামিও খেলে অপরাজিত থাকেন শামসুর। খুলনার হয়ে মাহমুদউল্লাহ ও ব্র্যাথওয়েট নেন ২টি করে উইকেট। এমএ/ ০৫:২২/ ২৮ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2MAf8Sv
January 28, 2019 at 11:24PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top