বিদায় নিতে যাওয়া বছরটি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বেশ ঘটনাবহুল ও সাফল্যমণ্ডিত। তিন সংস্করণ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (২১) জয়ের কীর্তি এসেছে ২০১৮ সালেই। বিদায়ী বছর-২০১৮র নানা রেকর্ড, আলোচিত ঘটনা, দলীয় সাফল্য ও ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত অর্জনের আদ্যোপান্ত নিয়ে এই আয়োজন। জয়ের রেকর্ড ২০১৮ সালে তিন সংস্করণে ২১ ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বিপরীতে হারতে হয়েছে ২২ ম্যাচ। একটি ম্যাচ হয়েছে ড্র। পরিসংখ্যান বলছে, নিজেদের সাফল্যের সেরা বছর এটিই। এত সাফল্যে রাঙানো বছর আগে আসেনি টাইগারদের। ২০০৬ সালে ৩৩ ম্যাচে ১৯ জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। একযুগ আগের বছরটিতে যদিও মেলেনি টেস্ট জয়ের স্বাদ। এবছর সাদা পোশাকে একটি সিরিজ ও ৩ টেস্টে এসেছে বড় ব্যবধানে জয়। সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে ওয়ানডেতে। ২০ ম্যাচের ১৩টি জিতেছে বাংলাদেশ। টেস্ট জয় তিনটি। এরআগে কেবল ২০১৪ সালেই সবচেয়ে বেশি (৩টি) টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিল টাইগাররা। সেবার টেস্ট ম্যাচ ছিল ৭টি, এবছর খেলা ছিল ৮টি। টি-টুয়েন্টিতে এবছর ছিল ভালো-মন্দের মিশেল। ১৬ ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। গত মার্চে শ্রীলঙ্কায় ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ওঠা বাংলাদেশ হেরেছিল শেষ বলে ছক্কা হজম করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টি-টুয়েন্টি সিরিজ জয় বড় সাফল্য সময়টাতে। আর দেরাদুনে আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার ঘটনা ছিল চরম হতাশার। মাশরাফী এখন সাংসদ বাংলাদেশ জাতীয় ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার নতুন পরিচয় তিনি এখন সংসদ সদস্য। নড়াইল-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিপুলভোটে জয়ী হন মাশরাফী। ক্রিকেট ও রাজনীতি পাশাপাশি চালিয়ে যাবেন নড়াইল এক্সপ্রেস। অন্তত ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত দুই ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। গেল ১৪ ডিসেম্বর উইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষ করে অধিনায়ক জানান, বিশ্বকাপ খেলে সিদ্ধান্ত জানাবেন খেলোয়াড়ি জীবন থেকে অবসর নেবেন নাকি চালিয়ে যাবেন। সাংসদ মাশরাফীকে রাজনীতির মাঠ ছেড়ে আগামী সপ্তাহেই নেমে যেতে হবে ক্রিকেট ময়দানে। ৫ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসর। মিরপুরে উদ্বোধনী ম্যাচে মাশরাফীর রংপুর রাইডার্স লড়বে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে। খেলাতেই মন সাকিবের বছরের শুরুতে আঙুলের চোট, দল থেকে ছিটকে যাওয়া। নিধাস ট্রফি দিয়ে ক্রিকেটে ফেরার স্বস্তি হারিয়ে যায় টুর্নামেন্ট শেষেই। আঙুল সংক্রমিত হওয়ায় পড়েন আরও বিপাকে। দুই মাস বাইরে থাকেন বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিশ্রামে থাকা সাকিবের মনে জাগে এমপি হওয়ার বাসনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে মনোনয়ন নিতে চেয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদলান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। নির্বাচন না করে তাকে খেলায় মনোযোগ দিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লম্বা বিরতির পর মাঠে ফিরে সাকিব ব্যাটে-বলে রাঙান পুরো সিরিজ। উইন্ডিজের বিপক্ষে দাপুটে পারফরম্যান্সে টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি সিরিজে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। তামিমের বীরত্ব ৪ বলে ২ রানের অপরাজিত ইনিংস। রান কিংবা বলের হিসাবের বাইরেও যে বীরত্বগাঁথা রচনা করা যায় এই ইনিংসের মাধ্যমে সেটারই অনন্য নজির দেখান তামিম ইকবাল। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে এক হাতে ব্যাট করে হৃদয় জয় করে নেন সবার। চোট নিয়েও দেশের প্রয়োজনে ব্যাটিং করার বীরোচিত সিদ্ধান্ত নেন দেশসেরা এ ওপেনার। এশিয়া কাপ শুরুর আগে তামিম ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে। ম্যাচের শুরুতেই আঙুলে চোট নিয়ে ছাড়েন মাঠ। সোজা যেতে হয় হাসপাতালে। ব্যাট ধরার অবস্থায় না থাকলেও সবাইকে বিস্ময়ে ডুবিয়ে ম্যাচের শেষদিকে দেশের প্রয়োজনে নেমে যান ২২ গজে। ঝুঁকি নিয়ে এ ওপেনার মাঠে নামায় যোগ হয় আরও ৩২ রান। যার পুরোটাই আসে মুশফিকের ব্যাটে। তামিম খেলেন একটি বল, এক হাতে ব্যাট চালিয়ে। বীরোচিত ওই ঘটনায় টাইগার বোলাররা হয়ে ওঠেন উজ্জীবিত। ২৬১ রানের পুঁজি নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে এশিয়া কাপে দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশ। বছরে রেকর্ড ৯ সেঞ্চুরি মুমিনুলের টেস্ট ক্রিকেটে মুমিনুল হকের লড়াইটা ছিল বিরাট কোহলির সঙ্গে। দুজনই চারটি করে সেঞ্চুরি নিয়ে ছিলেন সহাবস্থানে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পার্থ টেস্টে সেঞ্চুরি করে মুমিনুলকে টপকে গেছেন কোহলি (৫ সেঞ্চুরি)। তবে অন্য দুটি জায়গায় মুমিনুল বিশ্বের অন্যসবার চেয়ে এগিয়ে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বছরে সর্বোচ্চ ৯ সেঞ্চুরি করে ছাপিয়ে গেছেন সবাইকে। টেস্টে চারটি ও ঘরোয়া লিগে পাঁচটি। সেঞ্চুরির বন্যা ছুটিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এবছর বিশ্বের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও বাঁহাতি লিটলমাস্টার। ২০ ম্যাচে ৩৬ ইনিংসে ১৭৯১ রান করেছেন মুমিনুল। পরের স্থানটিও এক বাংলাদেশির। ১৯ ম্যাচে সাত সেঞ্চুরিতে ১৫৭৩ রান করে দ্বিতীয় স্থানে তুষার ইমরান। রানের দিক থেকে দুই বাংলাদেশির পর সেরা পাঁচের বাকি সদস্যরা হচ্ছেন- ইংল্যান্ডের রবি বার্নস (১৫৫৭ রান), সাউথ আফ্রিকার ড্যান ভিলাস (১৫২৫ রান) ও কলিন অ্যাকারম্যান (১৪৮১ রান)। সেঞ্চুরির তালিকায় মুমিনুল-তুষারের পর ছয়টি করে সেঞ্চুরি আছে সাউথ আফ্রিকার জ্যাকবস পিয়েনার, ইংল্যান্ডের ইয়েন বেল, অস্ট্রেলিয়ার উসমান খাজা ও ম্যাট রেনশর। মুশফিকের আরেকটি ডাবল (২১৯*) দেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে পান দ্বিতীয় ডাবলের দেখা। খেলেন ২১৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। যেটি টেস্টে এখন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ক্রিজে নামেন প্রথম দিনের সকালে, যখন ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে বোলারদের সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করে দলের স্কোর ৫০০ পার করান। ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান দ্বিতীয় দিনের চা-বিরতির পর। দেশের হয়ে আগের সর্বোচ্চ সাকিবের ২১৭ টপকানোর পরই ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। মিরপুরের ২২ গজে মুশফিক ৫৬৪ মিনিট কাটিয়ে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিটি। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে একাধিক ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন মি. ডিপেন্ডেবল। সাঙ্গাকারার একাধিক ডাবল আছে, কিন্তু তার মধ্যে কেবল একটি ম্যাচে তিনি উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সাব্বিরের শেষ সুযোগ! ঘরোয়া লিগের খেলা চলাকালে এক কিশোর দর্শককে পিটিয়ে ৬ মাস ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হওয়া সাব্বির রহমান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও একই মেয়াদে নিষিদ্ধ হন গত ১ সেপ্টেম্বর। ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে তার শাস্তির মেয়াদ। ফেসবুকে দুই ভক্তকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হুমকি দেয়ার কারণে এমন কড়া শাস্তি পান সাব্বির। দর্শক পেটানো ও আম্পায়ারকে হুমকি দিয়ে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়ার পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে ৬ মাস নিষিদ্ধ, সঙ্গে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করার পর অনেকে ভেবেছিলেন প্রতিশ্রুতিশীল এ ব্যাটসম্যান হয়ত নিজেকে শুধরে নেবেন। কিন্তু হয়েছে উল্টোটা! সাব্বিরের নামে অভিযোগের পাহাড় জমে যায় বিসিবিতে। ফেসবুকে ভক্তদের হুমকি দেয়ার কারণে সেপ্টেম্বরে সাব্বিরকে ছয় মাস নিষিদ্ধের সুপারিশ করে বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি। পরে বোর্ড তা অনুমোদন দেয়। বিসিবির পক্ষ থেকে হুশিয়ারি দিয়ে বলা হয় আগামীতে এমন কোনো অপরাধমূলক কাণ্ডে জড়ালে আজীবন নিষিদ্ধ হতে হবে। নিজেকে শোধরানোর শেষ সুযোগ তাই সাব্বিরের। সুযোগ সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার সঠিক গতিপথে ফেরানোর। ১২ মাসে ১৯ অভিষেক! বছরে ১৪ ক্রিকেটার তিন সংস্করণ মিলে ১৯ বার মাথায় তুলেছেন অভিষেকের ক্যাপ। অথচ এর আগের চার বছরে তিন সংস্করণে অভিষেকের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৬জন। এবছর ওয়ানডে, টেস্ট ও টি-টুয়েন্টিতে অভিষিক্ত হয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু ও অলরাউন্ডার আরিফুল হক। বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি সিরিজে এক ম্যাচেই অভিষিক্ত হন চার ক্রিকেটার। তারা হলেন- জাকির হাসান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, আরিফুল হক ও নাজমুল ইসলাম অপু। বছরের শেষদিকে এসে আরিফুল ও নাজমুলের হয় টেস্ট এবং ওয়ানডে অভিষেক। এছাড়া ২০১৮ সালে ওয়ানডে অভিষেক হয় নাজমুল হোসেন শান্ত, আবু হায়দার রনি, ফজলে মাহমুদ রাব্বির। টেস্ট অভিষেক হয় সানজামুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ, নাঈম হাসান, সাদমান ইসলামের। এক ম্যাচের জন্য রাজ্জাকের ফেরা ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮। ভেন্যু: শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম। জায়ান্টস্ক্রিনে ভেসে উঠল রাজ্জাক সিটিং অন হ্যাটট্রিক। দর্শকদের কণ্ঠে উঠল রাজ্জাক-রাজ্জাক রব। নতুন ব্যাটসম্যান রোশেন সিলভার জন্য সময় নিয়ে ফিল্ডিং সাজালেন মাহমুদউল্লাহ। দুই স্লিপ, শর্ট লেগ, সিলি পয়েন্ট, অধিনায়ক নিজে দাঁড়ালেন লেগস্লিপে। হ্যাটট্রিক হয়নি। তবে এ বাঁহাতি স্পিনার প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে সাদা পোশাকে ফেরা ঠিকই রাঙিয়ে তোলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে নেন একটি উইকেট। জাতীয় দলের দরজাটা বন্ধ ছিল চার বছর। বাজিয়ে দেখতে কখনও ডাকা হয়নি এ দলেও। দেশের হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম দুইশ উইকেট শিকারি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাককে বাতিলের খাতায়ই ফেলেছিলেন নির্বাচকরা। সাকিবের চোটে বিকল্প হয়ে টেস্ট দলে ফিরে সেই রাজ্জাকের স্বপ্নিল প্রত্যাবর্তন আবারও হারিয়ে যায়! ওই ম্যাচের পর আর ডাক পাননি জাতীয় দলে। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে টানা পারফর্ম করে যাচ্ছেন। আড়ালেই থাকলেন রানমেশিন তুষার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রানের ফল্গুধারা ছুটিয়ে চলেছেন তুষার ইমরান। বছরজুড়েই ছিলেন আলোচনায়। ফিরবেন ফিরবেন গুঞ্জন ছিল চারদিকে। সম্ভাবনা জাগিয়েও জাতীয় দলে ফেরা হয়নি এ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। আরেকটা সুযোগের আশা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন, কিন্তু আসেনি প্রত্যাশিত ডাক। জাতীয় লিগ ও বিসিএলে একের পর এক সেঞ্চুরিতে আলোচনায় আসেন তুষার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১১ হাজার (১১,৪৩৩) রানের মালিকের নামের পাশে ৩১ সেঞ্চুরি, ৫৯ ফিফটির রেকর্ড। ৩৫ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার তারপরও ফিরতে পারছেন না জাতীয় দলের আঙিনায়। তুষারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার মাত্র ৭ বছরের। ২০০৭ সালের পর থেকে জাতীয় দলের আড়ালে। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তখন এমন কোনো পারফরম্যান্স হচ্ছিল না যে তাকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হবে। পরে এমন একটা সময়ে ব্যাটকে ঢাল বানালেন, যখন কিনা জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার বয়স এক দশক হয়ে গেছে। সূত্র : চ্যানেল আই অনলাইন আর/১১:১৪/০১ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2SvAnHp
January 01, 2019 at 07:19PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top