নিউইয়র্ক, ২৬ জানুয়ারি- ফেডারেশন ইন বাংলাদেশী এসোসিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকা-ফোবানা প্রবাস ও দেশের মানুষের কাছে একটি জনপ্রিয় নাম। আজ থেকে ৩৩ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই ফোবানার মাধ্যমে উত্তর আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক মে , এক ছাতার তলে এনে ঐক্যবদ্ধ করা, দেশীয় শিল্প-সংস্কৃতির চর্চা ও প্রসারই এই সংগঠনের অন্যতম মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে। কিন্তু ফোবানা নেতৃবৃন্দের মধ্যকার অনৈক্য, অদূরদর্শীতা, অসহিষ্ণুতা, রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যক্তিগত রেষারেষী নানা কারণে সংগঠনটি বিবক্ত হয়ে পড়েছে। মাঝে ফোবানা ঐক্যবদ্ধ করার একাধিক উদ্যোগ নেয়া হলেও সংশ্লিস্টদের যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় তা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বিভক্তির মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলেছে ফোবানা। ফোবানার উদ্যোগ ও আয়োজনে প্রতিবছর উত্তর আমেরিকায় সম্মেলন হয়ে আসলেও বিগত কয়েক বছর ধরে বিভক্তির ফোবানা সম্মেলনই হচ্ছে উত্তর আমেরিকায়। চলতি বছরও দুটি সম্মেলন হতে চলেছে। এজন্য পৃথক দুটি সংগঠন আয়োজক সংগঠন হিসেবে দায়িত্ব পালন করে চলেছে। সংগঠন দুটির মধ্যে ডামা সার্কল নামক সংগঠন নিউইয়র্কের সুবিশাল নাসাও কলিসিয়ামে এবং অপর সংগঠন বাংলাদেশী-আমেরিকান ফ্রেন্ডশীপ সোসাইটি অব নিউইয়র্ক লাগোর্ডিয়া মারিয়ট হোটেলে চলতি বছর ফোবানা সম্মেলনের আয়োজন করেছে। তাদের ঘোষণা মোতাবেক যুক্তরাষ্ট্রের লেবার ডে উইকেন্ডে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যদিও উভয় সংগঠন নিজেদের মূল আয়োজক সংগঠন এবং ফোবানা সম্মেলনের মূল দাবীদার বলে দাবী করে আসছে। চলতি বছরের ৩০-৩১ এবং ১ সেপ্টেম্বর তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এটি হবে ফোবানার ৩৩তম ফোবানা সম্মেলন। উল্লেখ্য, নাসাউ কলিসিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনের কনভেনর হচ্ছেন নার্গিস আহমদ আর সদস্য সচিব হচ্ছেন আবীর আলমগীর। অপরদিকে লাগোর্ডিয়া মারিয়ট হোটেলে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনের কনভেনর হচ্ছেন শাহ নেওয়াজ আর সদস্য সচিব হচ্ছেন ফিরোজ আহমেদ। ফোবানা এই অংশের স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসন খান এবং এক্সিকিউটি সেক্রেটারী কাজী আজম। এদিকে মীর এইচ. চৌধুরী নেতৃত্থাধীন ফোবানার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ফোবানা অপরাংশের কনভেনর শাহ নেওয়াজ-কে উকিল নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে। গত ৭ জানুয়ারী ২০১৯ তারিখে মেরিল্যান্ডের ল অফিসেস অব ইউগেনী এ উইলয়াস-এর অফিস থেকে প্রেরীত নোটিশের কপি লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেল কর্তৃপক্ষকেও প্রদান করা হয়েছে। ফোবানার একাংশের চেয়্যারম্যান মীর এইচ. চৌধুরী ও এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারী জাকারিয়া চৌধুরী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ফোবানার নাম বেআইনিভাবে ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক বার্তা প্রেরণ করে বলেছেন, প্রয়োজনে এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরদিকে অপরাংশ ফোবানার কনভেনর শাহ নেওয়াজ বলেছেন, আমরা নিউইয়র্ক ষ্টেটের সংশ্লিষ্ট বিভাগের রেজিষ্টার্ড সংগঠন হিসেবেই ফোবানা সম্মেলন আয়োজন করছি। ফোবানা চেয়্যারম্যান মীর এইচ. চৌধুরী ও এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারী জাকারিয়া চৌধুরী কর্তৃক গত ১৩ জানুয়ারী প্রেরীত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে: ফোবানা সম্মেলনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ফোবানার নাম বেআইনি ভাবে ব্যবহার করার প্রবণতাও বাড়ছে। তাই সর্বসাধারণের সুবিধার্থে আমাদের এই সতর্কবার্তা। ফোবানা একটি প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের নাম যারা গত ৩২ বছর ধরে উত্তর আমেরিকায় প্রতি বৎসর সম্মেলন করে আসছে যা ফোবানা নামে পরিচিত। ইউ,এস,পি,টি,ও, ফোবানাকে আগামী ১০ বৎসরের জন্য ফোবানা ট্রেডমার্ক ব্যবহারের একছত্র মালিকানা দিয়েছে যা কোনভাবেই আর কেউ দাবী করতে পারবে না। এটা ল্যানহাম এ্যাক্ট-এর ১৫ ধারার ১০৬৫ উপ-ধারায় বর্ণিত। এই আইনের আওতায় ফোবানা এবং ফোবানার নামের সাথে কাছাকাছি মিল থাকা যে কোন নাম, লোগো, ঠিকানা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া ফোবানা বাংলাদেশেও একটি ট্রেডমার্ককৃত সংগঠন। এই বছর (২০১৯) শুধুমাত্র নিউইয়র্কের ড্রামা সার্কল এবং আগামী বছর (২০২০) শুধুমাত্র বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব নর্থ টেক্সাস (বান্ট) সম্মেলনের নানাবিধ প্রচারণার এবং সাংগঠনিক কর্মকান্ডের জন্য ফোবানা নাম, লোগো ইত্যাদি ব্যবহার করার অনুমতিপ্রাপ্ত। এই দুই সংগঠন ছাড়া যদি কেউ বেআইনিভাবে ফোবানার নাম ব্যবহার করেন, তবে তা হবে ল্যানহাম অ্যাক্ট-এর ১৫ ধারার ১০৬৫ উপ-ধারায় আইনত দন্ডনীয়। ফোবানা এক্সিকিউটিভ চেয়ারপার্সন ও লিগ্যাল কমিটির চেয়ারপার্সন মীর চৌধুরী এবং ফোবানা এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারী ও মিডিয়া ও পাবলিক অ্যায়ারনেস কমিটির চেয়ারম্যান, জাকারিয়া চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে ফোবানার আইনজীবীরা সব মিডিয়ার প্রতি লক্ষ্য রাখেন এবং ফোবানা সম্পর্কিত সকল খবরাখবর সযতনে সংগ্রহ করে থাকেন। তাই মিডিয়াতে ছাপানো বা টিভিতে দেখানো যে কোন খবর অথবা ফোন ক্যামেরায় ধারণ করা ছবি বা ভিডিও আদালতে পেশ করার সকল প্রস্তুতি ফোবানার নেয়া আছে। ইতিমধ্যে নিউইয়র্কের একটি সংঘবদ্ধ দুষ্ট চক্র ফোবানার নাম অবৈধভাবে ব্যবহার করে একটি অনুষ্ঠান করার চেষ্টা করছে। যার প্রেক্ষিতে ফোবানার লিগ্যাল টিম ওয়াশিংটন ডিসির বিখ্যাত আইনজীবীদের সমন্বয়ে তাদের প্রত্যেককে এবং তাদের বুকিংকৃত হোটেল কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এর পরও যদি তাদের এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ না হয়, তা হলে তাদেরকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। এছাড়া জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে ফোবানার নাম ব্যবহার করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরাংশ ফোবানার কনভেনর শাহ নেওয়াজ ইউএনএ প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে বলেছেন, আমরা নিউইয়র্ক ষ্টেটের সংশ্লিষ্ট বিভাগের রেজিষ্টার্ড সংগঠন হিসেবেই চলতি বছরের লেবার ডে উইকেন্ডে ৩৩তম ফোবানা সম্মেলন আয়োজন করছি। আমাদের নিজস্ব রেজিষ্ট্রেশন নম্বর, ট্রেড মার্ক রয়েছে। যা ইতিপূর্বে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়েছে। এনিয়ে বিভ্রান্তির কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, কেউ যদি ফোবানার নামে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়, সেই ক্ষেত্রে আমাদেরও আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। আর/০৮:১৪/২৬ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2sOq9qs
January 26, 2019 at 08:09PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top