ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি- বিপিএলের ষষ্ঠ আসরে ইতিমধ্যে প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত করেছে রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। এবার তৃতীয় দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করল চিটাগং ভাইকিংস। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১১ রানে হারিয়েছে মুশফিক বাহিনী। দুর্দান্ত এ বিজয়ে ১১ ম্যাচে ৭ জয় ও ৪ হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ালিফায়ারের টিকিট পেল তারা। টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ঢাকা। সূচনালগ্নেই উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ শাহজাদের ক্যাচ বানিয়ে সুনিল নারাইনকে ফিরিয়ে দেন আবু জায়েদ। সেই রেশ না কাটতেই ইনফর্ম রনি তালুকদারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। এ পরিস্থিতিতে শাহজাদের চতুরতায় মিজানুর রহমান রানআউটে কাটা পড়লে চাপে পড়ে রাজধানীর দলটি। চতুর্থ উইকেটে নুরুল হাসানকে নিয়ে চাপ কাটিয়ে ওঠেন সাকিব আল হাসান। ধুমধাড়াক্কা চার-ছয়ে চাপটা মূলত নিজেদের ওপর থেকে সরিয়ে দেন নুরুল। একপ্রান্ত আগলে রাখেন অধিনায়ক। অপরপ্রান্ত থেকে স্টিম রোলার চালান তিনি। অবশ্য খুব বেশিদূর যেতে পারেননি উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। ক্যামেরন ডেলপোর্টের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার আগে ২৩ বলে ২টি চার-ছক্কায় ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন নুরল। এতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে ঢাকা। তবে খানিক পর নিজের ভুলে কাইরন পোলার্ড রানআউটে কাটা পড়লে ফের বিপাকে পড়ে তারা। সাকিব ও আন্দ্রে রাসেল সেই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠেন। ক্রিজে সেট হয়ে যান তারা। রীতিমতো চিটাগং বোলারদের ওপর তোপ দাগান। বলতে গেলে দুজনে ছড়ি ঘোরান। ফলে জয়ের স্বপ্নের ঘোরেই থাকে ঢাকা। কিন্তু রাসেল ফিরলে পাশার দান উল্টে যায়। অতিরিক্ত চড়াও হওয়ার খেসারত গুনে দাসুন শানাকার বলে ডেলপোর্টকে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ফেরার আগে ২৩ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩৯ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেছেন ক্যারিবীয় হিটার। এবার জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে চিটাগং। অল্পক্ষণ পর শুভাগত হোমকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে তাতে জ্বালানি জোগান নাঈম হাসান। সেই রেশের মধ্যে স্ট্রোকের পসরা সাজানো সাকিবকে ফিনিশ করে স্বপ্ন পোক্ত করেন শানাকা। ৪২ বলে ৬ চারে ৫৩ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন ঢাকা অধিনায়ক। পরক্ষণেই মাহমুদুল হাসানকে ফিরিয়ে একরকম জয় নিশ্চিত করেন আবু জায়েদ। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৬৩ রান তুলতে সক্ষম হয় সাকিব বাহিনী। এতে ১১ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পায় চিটাগং। দলের হয়ে আবু জায়েদ ৩টি ও দাসুন শানাকা নেন ২টি উইকেট। নিজভূমে নিজেদের হারিয়ে খোঁজা চিটাগং চট্টগ্রাম পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ঢাকার মুখোমুখি হয়। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন চিটাগং অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। শুরুটা হয় আশা জাগানিয়া। শুভসূচনা এনে দেন মোহাম্মদ শাহজাদ ও ক্যামেরন ডেলপোর্ট। দারুণ খেলছিলেন তারা। তবে হঠাৎই ছন্দপতন। সুনিল নারাইনের বলে নুরুল হাসানের স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরেন দুর্দান্ত খেলতে থাকা শাহজাদ। ফেরার আগে ১৫ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২১ রান করেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ইয়াসির আলিকে নিয়ে এগিয়ে যান ডেলপোর্ট। একপর্যায়ে জমে ওঠে তাদের জুটি। দুজনের মধ্যে বেশ বোঝাপড়া গড়ে ওঠে। ধরার বল ধরেন,খারাপ বল পেলেই বাউন্ডারিছাড়া করেন। ফলে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যায় চিটাগং। তবে আচমকা পথ হারান ইয়াসির। নারাইনের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বির্চের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ইনফর্ম এ ব্যাটসম্যান করেন ২০ বলে ২ চারে ১৯ রান। পরে মুশফিককে নিয়ে খেলা ধরেন ডেলপোর্ট। যোগ্য সঙ্গও পান তিনি। প্রথমে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে তোলেন। উইকেটে সেট হলেই ছোটাতে শুরু করেন স্ট্রোকের ফুলঝুরি। এতে উল্কার গতিতে ছোটে চিটাগং। পথিমধ্যে ফিফটি তুলে নেন ডেলপোর্ট। ৫০ ছোঁয়ার পর আরো বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন তিনি। সমান তালে রানের ফোয়ারা বইয়ে দেন মুশফিক। ফলে বড় সংগ্রহের পথে থাকে চিটাগং। তবে অধিনায়ক থামতেই কক্ষচ্যুত চাটগাঁ। আন্দ্রে রাসেলের বোলিং তোপে পড়ে তারা। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে শুভাগত হোমের ক্যাচ বানিয়ে মুশফিককে ফেরান তিনি। সাজঘরে ফেরত আসার আগে ২৪ বলে ৪ চার ও ২ বিশাল ছক্কায় ৪৩ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন মুশি। পরের বলে একই ফিল্ডারের তালুবন্দি করে রানের নহর বইয়ে দিতে থাকা ডেলপোর্টকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান ক্যারিবীয় পেসার। ড্রেসিংরুমের পথ ধরার আগে ৫৭ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৭১ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন এ ব্যাটার। তৃতীয় বলে দাসুন শানাকাকে মিজানুর রহমানের ক্যাচে পরিণত করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তিনি। এবারের বিপিএলে এটি তৃতীয় হ্যাটট্রিক। এর আগে ওয়াহাব রিয়াজ ও আলিস আল ইসলাম অনন্য হ্যাটট্রিক করেন। রাসেলের হ্যাটট্রিকের পরও ফাইটিং স্কোর পেতে সমস্যা হয়নি চট্টলার। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৪ রানের স্কোর গড়ে দলটি। ঢাকার হয়ে রাসেল ৩টি ও নারাইন নেন ২ উইকেট। এমএ/ ০৭:০০/ ৩০ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2TqL6DG
January 31, 2019 at 01:08AM
30 Jan 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top