কলকাতা, ০৫ জানুয়ারি- গত সপ্তাহে কলকাতা মেট্রোয় আগুন লাগার পিছনে থার্ড রেল কারেন্ট কালেক্টর (টিআরসিসি)-কেই মূলত দায়ী করছেন তদন্তকারীরা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, থার্ড রেল থেকে যার মাধ্যমে মেট্রোয় বিদ্যুৎ পৌঁছয়, সেই টিআরসিসি (৩) যন্ত্রাংশে সমস্যা দেখা দেওয়ার কারণেই ঘটে অগ্নিকাণ্ড। যে ভাবে টিআরসিসি থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেও মন্তব্য করা হয়েছে রিপোর্টে। প্রাথমিক ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে টিআরসিসি থেকে আগুন ছড়ানোর জন্য মেট্রোর প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবকেই দায়ী করেছেন রেলকর্তারা। গত ২৭ ডিসেম্বর রবীন্দ্র সদন ও ময়দান স্টেশনের মাঝে একটি মেট্রোর কামরায় আগুন লাগার তদন্তের দায়িত্ব পড়ে বিমানমন্ত্রকের আওতায় থাকা কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি (পূর্ব) শাখার মহম্মদ লতিফ খানের উপরে। এর পরেই ডেকে পাঠানো হয় ওই ট্রেনের চালক দেবাশিস দত্ত ও সহকারী কে সি শিকদারকে। প্রাথমিক তদন্তের পরে রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগুন প্রথমে লেগেছিল ট্রেনের টিআরসিসি বিমে। যা পরে ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য অংশে। আগুন ও ধোঁয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন একাধিক যাত্রী। রেল জানিয়েছে, মেট্রোর প্রতিটি কোচে চারটি করে টিআরসিসি যন্ত্রাংশ থাকে। যার মাধ্যমে থার্ড রেল থেকে বিদ্যুৎ পৌঁছয় কোচে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুটি কারণে আগুন লেগে থাকতে পারে। প্রথমত, কেডি-১৮৭ (এসি-১) কামরাটির রেজিস্টোফ্লেক্স যন্ত্রের এয়ার বিলো অংশে সম্ভবত হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটেছিল। দ্বিতীয়ত, থার্ড রেলের উল্টো দিকে থাকা টিআরসিসি (৩)-এর রবাবের মোড়কটি গরমে হঠাৎ ফেটে যায়। তার ও ধাতব অংশের সঙ্গে টিআরসিসি-র এবং টিআরসিসি-র সঙ্গে লাইনের ঘষা লাগায় স্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি হয়। তা-ই ছড়িয়ে পড়ে। এ ধরনের ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। রেলমন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রিপোর্টটি নিয়ে একপ্রস্ত কথা বলেন রেলকর্তাদের সঙ্গে। সুদীপবাবু বলেন, রিপোর্ট দেখে ও রেল মন্ত্রকের আমলাদের সঙ্গে কথা বলে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই মেট্রোয় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে বলেও মনে করছেন রেলকর্তারা। ওই দুর্ঘটনাকে মাথায় রেখে ভবিষ্যতের জন্য তিনটি প্রস্তাব সুপারিশ করেছেন তদন্তকারীরা। প্রথমত, মেট্রোর কোচ, সুড়ঙ্গ-সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশে আগুন ও ধোঁয়ার জন্য অ্যালার্ম রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, মেট্রোর চালক ও গার্ড যাতে প্রতিটি কামরার যাত্রীদের সরাসরি দেখতে ও কথা শুনতে পারেন, তার জন্য প্রতিটি কোচে অডিয়ো-ভিস্যুয়াল ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করা হয়েছ। যাতে জরুরি অবস্থায় কামরায় ছবি বা যাত্রীদের কথা শুনে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন চালক ও গার্ড। তৃতীয়ত, চালকের ঘোষণা ও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কোনও যাত্রীর সঙ্গে চালক বা গার্ডের সঙ্গে কথোপকথন বিমানের মতোই রেকর্ড করে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এতে এক দিকে দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে তদন্তকারীদের সূত্র খুঁজতে সুবিধে হবে। অন্য দিকে ওই কথোপকথন ফি দিন মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার খতিয়ে দেখবেন বলেও সুপারিশ করেছেন লতিফ খান। এআর/০৪:৫৬/০৫ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2AvAMT4
January 05, 2019 at 10:57PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top