বীরভূম, ১৬ ফেব্রুয়ারি- ভরসন্ধ্যায় কড়া নাড়ার শব্দ পেয়ে দরজা খুলেছিলেন বিজেপির জেলা কমিটির এক সদস্যের বাড়ির লোক। মুখঢাকা তিন দুষ্কৃতী ভিতরে ঢুকে আসে। ওই নেতার নাম ধরে ডাকাডাকি শুরু করে। অভিযোগ, তাঁকে না পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রিভলবার দেখিয়ে তুলে নিয়ে যায় তাঁর মেয়েকে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত অপহৃতের খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওই ঘটনার কথা ছড়াতেই উত্তাল হয় লাভপুর। শুক্রবার দিনভর রাস্তার মোড়ে মোড়ে টায়ার এবং ডালপালা জ্বালিয়ে কার্যত গোটা এলাকা অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা। রাস্তায় দেখা মেলেনি যানবাহনের। অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্স ও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের গাড়ির প্রবেশাধিকার মিললেও অন্য কাউকে লাভপুরে ঢুকতে দেননি বিক্ষোভকারীরা। ছাড় পায়নি সংবাদমাধ্যমও। থানায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হলেও, রাস্তায় তাঁদের দেখা মেলেনি। ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। তা অস্বীকার করলেও এ দিন শাসকদলের কোনও নেতা-কর্মীকেও এলাকায় দেখা যায়নি বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। পুলিশ জানায়, লাভপুরের বাবুপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। বিজেপির জেলা কমিটির সদস্যের মেয়েকে তিন দুষ্কৃতী রিভলবার দেখিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সামনেই মোটরবাইকে তুলে পালায় বলে অভিযোগ। ওই তরুণী স্থানীয় দুটি স্কুলে বৃত্তিমূলক বিভাগের শিক্ষিকা। বিজেপির ওই নেতা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। এক সময় সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য তথা স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী, এক ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, শ্যালিকা এবং মেয়ে ছিলেন। অভিযোগ, মুখে কাপড় বাঁধা তিন দুষ্কৃতী মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যায়। শুক্রবার অপহৃত তরুণীর বাবা বলেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের কয়েক জন আমার উপরে হামলার ছক কষছেন। আমার বিরুদ্ধে থানায় তিনটি মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। পুলিশের ভয়ে কয়েক দিন কলকাতায় ছিলাম। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্যেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মেয়েকে অপহরণ করেছে৷ এ দিন দলের ওই নেতার বাড়িতে যান বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়, সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, জেলা কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ মণ্ডল, শান্তনু রায়। দিলীপবাবু বলেন, এ রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই, ফের তার প্রমাণ মিলল। থানা থেকে কিছুটা দূরে অস্ত্র দেখিয়ে বাড়ি থেকে একটি মেয়েকে তুলে নিয়ে গেল, পুলিশ টের পেল না। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, একেবারেই মিথ্যা অভিযোগ। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এতে রাজনৈতিক রং চড়ানো হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করছে। দুদিন বাদেই আসল সত্যি সামনে আসবে। পুলিশ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এক জনকে আটক করা হয়েছে। বীরভূমের এসপি শ্যাম সিংহ বলেন, আমরা গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করছি। লাভপুরে পুলিশ কুকুর পাঠানো হয়েছে। সিআইডি থেকে একটি দল আসছে। কয়েক জন সন্দেহভাজনকেও চিহ্নিত করা হয়েছে।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2SNxsxl
February 16, 2019 at 04:51PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top