ঢাকা, ১৫ ফেব্রুয়ারি- ২৩ বছর বয়সেই সন্তানের বাবা-মা। চার মাস বয়সী তাসকিন আহমেদ রেহান তাদের ১০ বছরের প্রেমের বড় উপহার। যার জন্য ভুলে যায় সব দুঃখ। কোলে নিয়ে নিমিষেই ভুলে যায় জীবনের পাওয়া না পাওয়ার কষ্ট। বলছি তরুণ পেসার তাসকিন আহমেদের কথা। তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন স্কুল জীবনের প্রেম, সাইদা রাবেয়া নাঈমার সঙ্গে। বিয়ের এক ঘণ্টা আগেও যার তাসকিনকে হারানোর ভয় ছিল। তবে মুহূর্তের জন্যও বিশ্বাস হারায়নি। একমাত্র পুত্রকে নিয়ে এবার তাদের প্রথম ভালোবাসা দিবস। তাদের জীবনে এবারের ভ্যালেন্টাইন ডে তাই একেবারেই অন্যরকম। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন বেঁচে থাকলে ভালোবাসা দেখে হয়তো ঈর্ষা করতেন, দিতেন আশীর্বাদও। হয়তো বলতেন- ইশ! এমন ভালোবাসাই দেখতে চেয়েছিলাম। তাসকিন বলেন, আমার কাছে ভালোবাসার মানে- বিশ্বাস। যা না থাকলে কোনো দিনও সুখী হওয়া যায় না। অন্যদিকে নাঈমা মনে করেন প্রেম মানে সম্মান। একে ওপরের চাওয়া পাওয়ার প্রতি সম্মান না থাকলে ভালোবাসা হয় না। কিভাবে শুরু তাসকিনের প্রেম? তাসকিন বলেন, আমি তখন দশম শ্রেণিতে পড়ি। ওকে (নাঈমা) দেখেই পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। চার মাস পাগলের মতো ঘুরেছি, পাত্তাই দেয়নি আমাকে। অনেক কষ্টে রাজি হয়েছে। এরপর তো কত ভ্যালেন্টাইন ডে এক সঙ্গে কাটিয়েছি। এমন দিন আসলেই নানান উপহার দিতাম। শেষ মনে আছে অনেক বড় একটি পুতুল দিয়েছিলাম। যখন জাতীয় দলে সুযোগ পেলাম তখন ঘুরতে যেতে অনেক সমস্যা হতো। জনসম্মুখে ঘুরতে পারতাম না। আবার দেশের বাইরে গেলে এক সঙ্গে বিশেষ দিন কাটানো যেত না। তবে সাধারণ প্রেমিকের মতো তাসকিনের প্রেমেও ছিলো যন্ত্রণা। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ক্যাম্পের আগে বাবা জানতে পারেন প্রেম করছি। বলেন- এই সব চলবে না। এখন তোমার প্রেম করার বয়স হয়নি। অনেক ভয় পেয়েছিলাম ওকে হারানোর। তবে লুকিয়ে লুুকিয়ে কথা বলেছি। যোগাযোগ করেছি। পরিবার মেনে নেয়ার পর আর এক মুহূর্ত ভয় হয়নি। একবারও মনে হয়নি ওকে হারাবো। বিয়ের আগে ও পরে মানুষ অনেক বাজে বাজে কথা বলেছে। কিন্তু আমি ওকে ঝুঝিয়েছি। নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছি। ভালোবাসলে কষ্ট তো পেতে হয়ই। তা জয় করাই সত্যিকারের প্রেম। অন্যদিকে নাঈমার প্রেমের পর থেকে বিয়ের এক ঘণ্টা আগেও ভয় ছিল। যেদিন আমাদের বিয়ে হয়েছে সেদিনই ওকে হারানোর ভয় কেটেছে আমার। বলেন, তাসকিনের স্ত্রী নাঈমা। তারকা বনে যাওয়া তাসকিনের সঙ্গে প্রেম করতে বিড়ম্বনা সইতে হয়েছে নাঈমারও। তিনি বলেন, ওর পেছনে কত মেয়ে পাগল ছিল। তবে এক ফোঁটাও বিশ্বাস হারাইনি। সেই বিশ্বাসের মূল্য ও রেখেছে। আর সমস্যা তো ছিলই ওর সঙ্গে জনসম্মুখে ঘুরতেই পারতাম না। অনেক দিন ও আমাকে দাঁড় করিয়ে রেখে ছবি তুলেছে ভক্তদের সঙ্গে। তবে ভালোও লাগে এমন একজন পাশে আছে যাকে, দেশের মানুষও ভালোবাসে। এই তো সফল ভালোবাসার গল্প। কিন্তু বর্তমানে সমাজে ভালোবাসার নামে প্রতারণাও কম নয়। বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, ধর্ষণ। যে কারণে ভ্যালেন্টাইন ডে আসলেই অনেক অভিভাবক আতঙ্কে থাকেন। এমন যুগলের প্রতি তাসকিন ও নাঈমার অনুরোধ- আমরা সফল হয়েছি কারণ দুজনকে দারুণ ভাবে বিশ্বাস করতাম। এখন যে ফেসবুকে প্রেম, একজনকে ভালোভাবে না জেনেই অন্ধের মতো তার সঙ্গে ঘুরতে চলে যাওয়া, ঠিক না। আবার ছেলে বা মেয়ে যারা ভালোবাসার নামে নাটক করে তারাও কাজটা ঠিক করছে না। আমাদের দুজনের অনুরোধ সেন্ট ভ্যালেন্টাইন যে ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সেটি যেন বদনাম না হয়। তাসকিনের চোখে নাঈমা ওর মন্দ দিকটাই আগে বলি,- প্রচণ্ড এক রোখা। নিজে যা ভালো মনে করে সেটাই করে। আর নিজের প্রতি খুব উদাসীন। ভালো দিক হলো পরিবারের প্রতিটা মানুষকেই যে কাউকে আপন করে নিতে পারে। আর আল্লাহ ভিরু, নামাজ-কালাম পড়ে। নাঈমার চোখে তাসকিন ও প্রচণ্ড কেয়ার করে। শুধু আমাকেই নয় পরিবারের জন্য খুবই টান। যা ভীষণ ভালো লাগে। আর মন্দ দিক হলো মাঝে মাঝে খুব উদাসীন হয়ে অন্যমনষ্ক থাকে। শুধু খেলা নিয়েই অবশ্য ভাবে। আর বাবা হিসেবেও অসাধারণ। আর/১২:১৪/১৫ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2S60Z0R
February 15, 2019 at 08:45AM
15 Feb 2019

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top