শিলিগুড়ি, ২১ ফেব্রুযারিঃ একপ্রকার ন্যারা মাঠে ঘাস লাগিয়ে বছর দুযেক আগে শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ককে যেন নতুন জীবন দিয়েছিল উত্তরবঙ্গ উন্নযন দপ্তর। শুধু ঘাস লাগানোই নয়, বাঘাযতীন পার্কের বাউন্ডারির, বসার জায়গা, সাউন্ড সিস্টেম কোনো কিছুরই বাকি রাখা হয়নি। কাজ সম্পুর্ন হওয়ার পরেও দীর্ঘ কয়েকমাস নানা টালবাহানা করে পার্ক বন্ধ রেখেছিল শিলিগুড়ি পুরনিগম। এরপর এই বিষয় নিয়ে একের পর এক বিতর্কের ঢেউ পুরনিগমের দরজায় আছড়ে পড়ার পর বাঘাযতীন পার্ক সর্বসাধারনের জন্য খুলে দিতে বাধ্য হয় পুরনিগম। মোতায়েন করা হয় নিরাপত্তাকর্মীও। কিন্তু এই বাঘাযতীন পার্ক সকালে কখনও সখনও ঘন্টা দুয়েক ও বিকেলে ঘন্টা দুয়েক খোলা রাখার সিদ্ধান্তে খুশি নয় শহরবাসী। কেন বেলার দিকে পার্ক বন্ধ রাখা হবে? প্রশ্ন উঠেছে শহরেই। যেখানে শিলিগুড়ি শহরে সেভাবে সময় কাটাবার মত জায়গা নেই বললেই চলে সেখানে কেন এক নির্দিষ্ট সময়তেই বাঘাযতীন পার্ক খোলা থাকবে? পুরনিগমের তরফে যুক্তি, সারাদিন পার্ক খোলা থাকলে নষ্ট হতে পারে পার্কের মাঠ। কিন্তু পালটা যুক্তি, তবে নিরাপত্তারক্ষী রাখা হয়েছে কেন? যদি কেউ মাঠ নষ্টই করে তবে সেই সময় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে নিরাপত্তারক্ষীরা।
শিলিগুড়ি পুরনিগমের অধীনে থাকা এই বাঘাযতীন পার্ক ঘিরে বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে শিলিগুড়ির মানুষের। একটা সময বাঘাযতীন পার্ক ছিল নামেই। পার্কের কোনো সীমানা প্রাচীর না থাকার কারনে সেখানে প্রায় প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর বসত মদ, জুয়ার আসর। বহুবার সেই আসর বন্ধ করতে পুলিশকে নাজেহাল হতে হয়। কিন্তু পরবর্তীতে রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর উত্তরবঙ্গ উন্নযন দপ্তরের মন্ত্রী হন শিলিগুড়ির মানুষ গৌতম দেব। গৌতমবাবু মন্ত্রী হওয়ার পরেই মুলত বাঘাযতীন পার্ক সাজানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হন। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বাঘাযতীন পার্ক ভাড়াও দেওয়া হয়। কিন্তু সাধারন মানুষের জন্য এই পার্ক খোলা থাকে বিকেলের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। মাঝে কোনোদিন সকালে ঘন্টা দুয়েক খোলা রাখা হয়। কিন্তু এতে খুশি নয় সাধারন মানুষ। পরিবেশপ্রেমী অনিমেষ বসুর কথায, ‘পুরকর্মীদের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। শিলিগুড়ি শহরে যেখানে পর্যাপ্ত পার্ক নেই, তাছাড়া দিনের বেলা যেহেতু নিরাপত্তাকর্মী থাকেনই, সেখানে বাঘাযতীন পার্ক সারাদিন খোলা রাখলে অসুবিধাটা কোথায? শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘এদিন ভাষা দিবসের দিনেও বাঘাযতীন পার্ক দিনের বেলা বন্ধ রাখা হয়েছিল। সারাদিন খোলা থাকলে পুরনিগমের সমস্যা কোথায? নিরাপত্তাকর্মী বাড়ানো যেতেই পারে আরও। একজন লোককে দিয়ে হয়না। সাউন্ডবক্স লাগানো হয়েছিল, সেটাও খারাপ হযে পড়ে রয়েছে। মাঠের ধারে লাইট ছিল, সেগুলিও অনেক খারাপ হয়ে রয়েছে। পুরনিগমের এগুলি দেখা প্রয়োজন।’
বাঘাযতীন পার্কের দায়িত্বে থাকা মেযর পারিষদ মুন্সী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘শহরবাসীর স্বার্থেই এটা করতে হয়েছে। দুপুরবেলাতে তো লোক তেমন থাকেনা। আমরা চাই পার্কটা যেন ভালো থাকে। কারন আগে যখন ঘেরা ছিলনা, তখন কী অবস্থা হয়েছিল সেটা সবাই জানে। সারাদিন খুলে রাখলে দেখবেটা কে?’
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2VbHCoL
February 22, 2019 at 04:22PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন