কলকাতা, ২৪ ফেব্রুয়ারি- ওঁদের কেউ অঙ্গনওয়াড়িতে চাকরি পেয়েছিলেন, বরের জুলুমে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এখন লোকের বাড়ি কাজ করেন। কারও মেয়েকে প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে অ্যাসিড বাল্ব ছুড়েছে খোদ প্রেমিক। কেউ রোজ মার খান স্বামীর কাছে, কারও আবার কাজের বাড়িতে বাবু সুযোগ পেলেই গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। শনিবার আনন্দপুরে এমনই শ খানেক কাজের মেয়ের রোজকার লড়াইয়ের গল্প শোনা হলো, আর তাদের লড়াইয়ের পথ দেখালেন উপস্থিত অভ্যাগতরা। দক্ষিণ কলকাতার একটি অডিটরিয়ামে পরিচিতি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে কথা বলার মঞ্চ পেলেন দিন আনি দিন খাই মহিলারা। এদিন পরিচিতির উদ্যোগে এমনই এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল যেখানে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মন খুলে নিজেদের সমস্যার কথা ভাগ করে নিলেন তথাকথিত কাজের মেয়েরা। পরিচিতির মঞ্চে এদিন নিজেদের বঞ্চনার কথা জানাতে হাজির হয়েছিলেন ৮৯, ৯০, ৯৩, ৯৪, ১০৭, ১০৮, ১০৯, ১১৪, ১১৭ নং ওয়ার্ডের মহিলারা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত মহিলাদের মধ্যে কতজন প্রতিদিন স্বামীর নোংরা ব্যাবহারের মুখোমুখি হন, কতজনকে জোর করে বিছানায় যেতে বাধ্য করা হয়, পণের জন্যে নিগ্রহের মুখোমুখি মহিলাদের সংখ্যাই বা কত, এই রকম মোক্ষম বিষয়ে সমীক্ষা থেকে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাঁদের সামনেই শুরুতে পরিচিতির সদস্যরা তুলে ধরেন। এর পর তাঁদের সমস্যাগুলি খুঁটিয়ে শোনা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার নিরাপত্তা আধিরকারিক অপর্ণা দত্ত রায়। তিনি মেয়েদের অধিকার সংক্রান্ত আইনের দিকটি বুঝিয়ে বলেন উপস্থিত দর্শকদের। অপর্ণা দত্ত রায়ের কথায়, বেশির ভাগ মেয়েরাই মেনে নেওয়া বা মানিয়ে নেওয়ার তাগিদে নিজেদের নিগ্রহের বিষয়টির কোনও প্রমাণ রাখেন না। আমি বলব কতটা মেনে নেবেন, ঠিক কখন আইনের দ্বারস্থ হবেন তা ভাবার আগেই ন্যূনতম নিগ্রহ হলেও সরকারি হাসপাতাল থেকে একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট জোগাড় করুন। ভবিষ্যতে আবার নিগ্রহ হলে এই সার্টিফিকেটটি কাজে লাগবে প্রমাণ হিসেবে। এদিনের অনুষ্ঠানে বার বার উঠে আসে পুলিশি উদাসীনতার কথা। পুলিশ দায়৷ এড়ালে রেজিস্ট্রি মারফত অভিযোগ জানানোর কথা বলেন অপর্ণা দত্ত রায় কাজের বাড়িতে বোনাস চাইলেই চোর বল দেগে দেওয়া হয় যাঁদের, পান থেকে চুন খসলেই বাবুদের কমপ্লেক্সে ঢোকাই বন্ধ হয়ে যায় যাঁদের, তাঁরা এদিনের অনুষ্ঠান থেকে অনেক আশা নিয়ে ফিরলেন। পরিচিতি-কে ধন্যবাদ দিয়ে ফিরলেন সাহস আর সুদিনের স্বপ্ন নিয়ে।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2ErSB85
February 24, 2019 at 05:28PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top