ছিঁড়েছে সরকারি জুতো, খালি পায়ে পড়ুয়ারা

ক্রান্তি, ২৮ ফেব্রুয়ারি ঃ কয়েক বছর আগে রাজ্যের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য ব্যাগ, বই, খাতা, পোশাক সহ বিভিন্ন সরঞ্জামের পাশাপাশি জুতোও দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু তার পর থেকে আর জুতো না পাওয়ায় সমস্যায় মাল ব্লকের চা বাগান এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। জুতো ছিঁড়ে যাওয়ায় খালি পায়ে স্কুলে যাচ্ছে খুদেরা।

মাল ব্লকের কুমলাই, তেশিমলা, ক্রান্তি, চ্যাংমারি, রাজাডাঙ্গার বেশ কিছু প্রান্তিক এলাকা রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই চা বাগান কিংবা জঙ্গল লাগোযা। শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, নাগরিক পরিসেবা- সব কিছুরই অভাব রয়েছে। আর্থিক দিক দিযে পিছিয়ে রয়েছেন সেখানকার বেশিরভাগ বাসিন্দাই। ওইসব এলাকায বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বর্তমান রাজ্য সরকার ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়মুখী করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল, যার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রাথমিকের পড়ুয়াদের বিদ্যালয় থেকে বিনামূল্যে জুতা দেওয়া। এর ফলে প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়ারা বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছিল। কিন্তু দু’বছর আগে বিদ্যালয় থেকে পাওয়া জুতো অধিকাংশ পড়ুয়ারই ছিঁড়ে গিয়েছে। যার ফলে বাধ্য হযে বহু পড়ুয়াই খালি পায়ে কিংবা ছেঁড়া চপ্পল বা জুতো পরে স্কুলে আসছে।

পেশায় চা বাগানের শ্রমিক বুধু ওরাওঁ নামে একজন অভিভাবক বলেন, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সারাদিন পরিশ্রম করে পরিবারের জন্য খাবার জোগাড় করতে হিমসিম অবস্থা। সেখানে সন্তানের স্কুল যাওয়ার জন্য জুতো কিনে দেবার ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ্য নেই। সরকার থেকে দুবছর আগে যে জুতো পেয়েছিল, সেটা বছর ঘুরতে না ঘুরতে ছিঁড়ে গিয়েছে। তারপর একজোড়া চপ্পল কিনে দিয়েছিলাম। সেটাও কিছুদিন পর ছিঁড়ে গিয়েছে। ক’মাস পর পর জুতো কিনে দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। তাই আমার ছেলে এখন খালি পায়ে স্কুলে যায়। সরকার থেকে আবারও জুতো দিলে আমাদের মত গরিব ঘরের ছেলেমেয়েরা সত্যিই খুব উপকৃত হত। একই বক্তব্য আর্থিকভাবে দুর্বল অভিভাবকদের প্রায় সকলেরই।

কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের চা বাগান এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক জানান, তাঁদের বিদ্যালযে দুই শতাধিক পড়ুযা আছে, যাদের বেশিরভাগেরই জুতো ছিঁড়ে গিয়েছে। অনেকে হাওযাই চপ্পল পরে এলেও বহু পড়ুযাই খালি পায়ে আসে। এই পড়ুয়াদের বাড়ির আর্থিক অবস্থা খুবই করুণ। অনেকে খালি পেটেই স্কুলে আসে। স্কুলের মিড-ডে মিলই তাদের ভরসা। এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার এক শিক্ষা আধিকারিক জানান, জুতো দেবার প্রক্রিযা চালু হয়েছে। শীঘ্রই প্রাথমিকের পড়ুয়াদের নতুন জুতো দেওয়া হবে।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2ECWib6

February 28, 2019 at 03:14PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top