কলকাতা, ১৯ ফেব্রুয়ারি- রক্তের সম্পর্ক নেই তবুও তাঁরা প্রত্যেকেই যেন একে অপরের পরম আত্মীয়। নিজেদের কাছের মানুষকে দিনের পর দিন ছেড়ে দেশরক্ষায় সীমান্তে একসঙ্গে কাটান তাঁরা। আনন্দ, মন খারাপের দিনগুলো একসঙ্গেই ভাগাভাগি করে নেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা- যে মানুষগুলোর সঙ্গেই সঙ্গযাপন, চোখের সামনে বিস্ফোরকে তাঁদের ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে দেখেছেন তিনি। বুক ফেটেছে তবুও নিজের কর্তব্য সেই মুহূর্তে অনড় থেকেছেন আসানসোলের সিআরপিএফ জওয়ান জয় গঙ্গোপাধ্যায়। ১৪ ফেব্রুয়ারি, পুলওয়ামার সেদিনের ঘটনার সাক্ষী তিনি। সেদিন পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ের ৩ নং গাড়িতে হয়েছিল জঙ্গি হানা। আর ৫নং গাড়িতে ছিলেন আসানসোলের জয় গঙ্গোপাধ্যায়। চোখের সামনে সহকর্মীদের ছিন্নভিন্ন হতে দেখেও ঠান্ডা মাথায় সাধারণ নাগরিকদের গাড়ি নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কাজে লেগে পড়েছিলেন তাঁরা। সেই মূহূর্তে সব রাগ বুকে চেপে রেখেছিলেন। গলার কাছে দলা পাকিয়ে ছিল কান্নাগুলো। তবুও প্রতিশোধ স্পৃহা মনে জাগিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, যাঁরা শহিদ হয়েছেন, তাঁরা শুধু আমাদের সহকর্মী নন। আমরা একে অপরের বন্ধু, ভাই। একসঙ্গে কত সময় কাটিয়েছি। তাঁদের মৃত্যুর বদলা আমরা নেবই। দোষীরা ছাড়া পাবে না কোনওভাবেই। সেদিনের দুঃসহ স্মৃতি এখন দগদগে জয়ের মনে। চোখ বন্ধ করলে শুধু সহকর্মীদের ছিন্নভিন্ন, কুণ্ডলি পাকিয়ে যাওয়া দেহগুলি ভেসে উঠছে তাঁর সামনে। তবে স্ত্রী অসুস্থতার খবর পেয়ে সীমান্ত ছেড়ে ছুটে এসেছেন আসানসোলে। আসানসোলের হীরাপুরে জওয়ান জয় গঙ্গোপাধ্যায়ের শ্বশুরবাড়ি। হামলার আগের দিনই স্ত্রীর সঙ্গে ফোন কথা হয় তাঁর। তখনই তিনি জানিয়েছিলেন, পরেরদিন সকালেই কাশ্মীর থেকে শ্রীনগরে যাওয়ার কথা। পরেরদিন দুপুরে টিভিতে সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গি হামলার খবর দেখার পরই বিপদ আঁচ করতে পেরেছিলেন জয়ের স্ত্রী শ্রাবণী। স্বামীর চিন্তায় বারবার সংজ্ঞা হারাচ্ছিলেন, সঙ্গে ধূম জ্বর। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে জ্বর না কমায় তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনার দুদিন পর স্ত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়ে আসানসোল আসেন জয়। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। জঙ্গিদের প্রত্যুত্তর দিতে বদ্ধপরিকর তিনি। শুধু তিনিই নয়, বদলা নিতে বদ্ধপরিকর জয়ের মতো অন্যান্য জওয়ানরাও। সেদিন ঘটনার আস্মিকতায় সাময়িকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। যখন সহকর্মীদের দেহ আগলে রেখেছিলেন, সেদিনই মনস্থির করে নিয়েছিলেন, জঙ্গিদের ছেড়ে কথা বলবেন না তাঁরা...যাই হয়ে যাক, সহকর্মীদের রক্ত বিফলে যেতে দেবেন না তাঁরা... শহিদ বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা প্রমাণের সুযোগের অপেক্ষায় জয়ের মতো প্রত্যেক সিআরপিএফ জওয়ান।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2DQkTYq
February 20, 2019 at 12:20AM
Home
»
ওপার বাংলা
» চোখের সামনে সহকর্মীদের ছিন্নভিন্ন হতে দেখলাম, দুঃসহ বর্ণনা পুলওয়ামার সেদিনের সাক্ষী জওয়ানের
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ...
মাওবাদী হানায় মৃত তথা নিখোঁজ ৪ জনের পরিবারকে নিয়োগপত্র দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
07 Oct 20200টিকলকাতা, ৭ অক্টোবর- কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবারের ঘোষণা মতোই ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক সভা থেকে মাও...আরও পড়ুন »
ডেমোক্রেসির বদলে বাংলায় মমতাক্রেসি চলছে
06 Oct 20200টিকলকাতা, ৬ অক্টোবর- বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়...আরও পড়ুন »
বিজেপি নেতা মণীশ খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ
06 Oct 20200টিকলকাতা, ০৬ অক্টোবর- বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল খুনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও উত্তপ্ত পরিস্থিতি ব...আরও পড়ুন »
বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লার মৃত্যু ঘিরে রণক্ষেত্র বারাকপুর
05 Oct 20200টিকলকাতা, ৫ অক্টোবর- অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ বিজেপির দাপুটে নেতা মণীশ শুক্লাকে খুনের ঘটনায় সোমবার সকাল থেক...আরও পড়ুন »
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাকে গুলি করে হত্যা
05 Oct 20200টিকলকাতা, ৫ অক্টোবর- পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরের মণীশ শুক্লা নামে এক বিজেপি নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে ...আরও পড়ুন »
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.