শিলিগুড়ি, ১০ ফেব্রুযারিঃ শিলান্যাস হলেও ইস্টার্ন বাইপাসের মূল কাজ শুরু হতে এখনও কয়েক মাস সময় লাগবে। পূর্ত দপ্তর জানাচ্ছে, অক্টোবর মাসের আগে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করা কার্যত অসম্ভব। ফলে বেহাল ইস্টার্ন বাইপাস নিয়ে মানুষের দুর্ভোগ মেটার আপাতত কোনো সম্ভবনাই নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কেন এত দেরি হবে? কেন শিলান্যাসের পরেও শুরু হবে না কাজ? পূর্ত দপ্তরের নর্থবেঙ্গল কনস্ট্রাকশন ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিযার চন্দন ঝাঁ বলেন, রাস্তার কাজ শুরু করার আগে গাছ কাটা, বিদু্যতের লাইন সরানো সহ অনেক কাজ রয়েছে। সেগুলি করার পরেই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে।
তাহলে এত তাড়াহুড়ো করে রাস্তার কাজের শিলান্যাস করা হল কেন? পূর্ত দপ্তরেরই একাংশ মনে করছে, এই রাস্তাটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে চর্চা হচ্ছে। রাস্তা মেরামত না করায় দোষ চাপছে পূর্ত দপ্তরের ঘাড়ে। তাই শিলান্যাস করে দায় এড়াল দপ্তর। এখন আর কেউ বলতে পারবে না পূর্ত দপ্তর রাস্তা বানাচ্ছে না। কাজ শুরু হতে দেরি হলে তার পুরো দায় এজেন্সির উপরেই বর্তাবে।
দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে ইস্টার্ন বাইপাস। ভক্তিনগর থানা সংলগ্ন চেকপোস্ট মোড় থেকে গোরা মোড় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার রাস্তা প্রায় পুরোটাই ভেঙে গিয়েছে। গোটা রাস্তাতেই বড়ো বড়ো গর্ত হয়ে কোথাও রাস্তার পিচ ও পাথর উঠে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরেই মেরামতির দাবি উঠছে। অবশেষে পূর্ত দপ্তর রাস্তাটি দুই লেনের জায়গায় চারলেন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেইমতো আর্থিক বরাদ্দ হওযার পর টেন্ডার করা হয়। প্রায় ৪৬ কোটি টাকায় মেদিনীপুরের একটি এজেন্সিকে এই কাজের ওযার্ক অর্ডারও দেওয়া হয়েছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি রাস্তাটির কাজের শিলান্যাস করেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। দেড় বছরের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন মন্ত্রী। অর্থাত্ ২০২০ সালের জুলাই মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু শিলান্যাসের ১০দিন পরেও কাজ শুরু হয়নি কাজ। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে। এরপর খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যাচ্ছে, শিলান্যাসই সার। এই কাজ শুরু হতে আরও অন্তত ছয়-সাত মাস সময় লাগবে। অর্থাত্ চলতি বছরের দুর্গাপুজোর আগে রাস্তা তৈরির কাজে হাত দেওয়া কার্যত অসম্ভব। অন্তত পূর্ত দপ্তরের একটি সূত্র সেরকমই জানাচ্ছে।
পূর্ত দপ্তর জানাচ্ছে, দুই লেনের ওই রাস্তা চার লেনের করার জন্য বর্তমান রাস্তার দুই পাশে অনেকটাই জায়গা খালি করতে হবে। ওই জায়গা দিযে বিদ্যুতের লাইন গিয়েছে। মাটির নীচ দিয়ে আছে ডাবগ্রামের পানীয় জল পরিসেবার পাইপ লাইন। পাশাপাশি রয়েছে প্রায ৫০০টি বড়ো গাছ। এক এক করে বিভিন্ন দপ্তরের অনুমতি নিযে কাজ শুরু করতে হচ্ছে। প্রথমে বন দপ্তরের অনুমতি নিয়ে গাছ কাটা শুরু হয়েছে। গাছ কাটা হলে তারপর রাজ্য বিদ্যুত বণ্টন সংস্থা বিদ্যুতের লাইন সরানোর কাজে হাত দেবে। এছাড়া জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরও (পিএইচই) জলের পাইপ লাইন সরানোর কাজ করবে। এই কাজগুলি করতেই কয়েক মাস সময লাগবে। অর্থাত্ যেখানে ২০২০ সালের জুলাই মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওযার কথা, সেখানে ২০২১ সালের মার্চ-এপ্রিলের আগে চার লেনের ইস্টার্ন বাইপাস তৈরির কাজ শেষ হওযার কোনো সম্ভাবনা নেই। এজেন্সির বক্তব্য, রাস্তা তৈরির জন্য জাযগা পেলেই কাজ শুরু করে দেওযা হবে।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal http://bit.ly/2tiET13
February 11, 2019 at 03:53PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন