বাগডোগরা, ২৬ ফেব্রুয়ারিঃ লোকসভা ভোটের মুখে তরাইয়ের অন্যতম বড়ো চা বাগান শিমুলবাড়ি বন্ধ হয়ে গেল। অভিযোগ, বহুদিন ধরেই ঠিকমতো কাজ করতে শ্রমিকদের সতর্ক করা সত্ত্বেও তাঁরা কোনও কথাই শুনছিলেন না। শ্রম আইন মেনে দৈনিক আট ঘণ্টা করে কাজ করতে বহুবার বলা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। এনিয়ে বারকয়েক নোটিশ ইশ্যু করেও অবস্থা যে কে সেই থেকে যায়। চা বাগান মালিকদের সংগঠন টেরাই ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (টিপা)-এর সচিব মলয় মৈত্র বলেন, ‘শ্রমিকদের কয়েকজন তো ম্যানেজারকে ভয় দেখানোর মতো নানা কাজ করে বাগানে নিয়মিতভাবে নানা অশান্তির সৃষ্টি করে চলছিলেন। তাই বাধ্য হয়েই বাগান বন্ধ করে দিতে হয়। জেলাশাসক সহ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে বিষয়টি জানিয়েই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই শিমুলবাড়ি চা বাগানের মালিক ও শ্রমিকপক্ষের বিরোধ চলছিল। শ্রম আইন অনুসারে দিনে দুই বেলা মিলে আট ঘণ্টা পাতা তোলার কথা থাকলেও অভিযোগ, শ্রমিকদের একাংশ তা মানছিলেন না। এ নিয়ে অসন্তোষের সূত্রপাত। রবিবার থেকেই বাগান বন্ধের আশঙ্কায় কিছুটা উত্তেজনা ছিলই। রাতের মধ্যেই বাগান ম্যানেজমেন্টের একাংশ পরিবার নিয়ে বাগান ছেড়ে চলে যায়। শ্রমিকরা সোমবার সকালে বাগানের অফিস, ফ্যাক্টরিতে তালা ঝুলতে দেখেন। বাগান বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে তখনই তাঁরা নিশ্চিত হয়ে যান। তবে তাঁরা কোথাও বাগান বন্ধের কোনও নোটিশ দেখতে পাননি। বাগান বন্ধের খবর চাউর হবার পরে শ্রমিকরা অফিসের গেটে এসে ভিড় জমান। বাগানের শ্রমিক সংগঠন টিডিপিডব্লিউইউ, এইচপিডব্লিউইউ, টিপিএলইউ-র স্থানীয় নেতারা এসে বাগানের মালিকপক্ষকেই দোষারোপ করেন। শ্রমিক নেতা প্রকাশ সন্ন্যাসী, কল্যাণ বাগদাস, সুরেশ বড়াইক, মণীশ মাহাতো, উবের বড়াইক প্রমুখ মালিকপক্ষকে দোষারোপ করে জানান, বাগান বন্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হযনি। মালিকপক্ষ মজুরি না দেওয়ার অজুহাত তৈরি করেই বাগান বন্ধ করে পালিয়েছে। শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য, দিনে আট ঘণ্টা করে কাজের নিয়ম সবাই মেনে নিয়েছিল। কিন্তু হোলির পর থেকে এই ব্যবস্থায় কাজ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। তা না করে বাগান বন্ধ করাটা রীতিমতো অনৈতিক কাজ হয়েছে। শ্রমিকদের কয়েকটি দাবি নিয়ে ১ মার্চ মাটিগাড়ায় টিপা-র অফিসে বৈঠকে বসার কথা ছিল। সেটিও হল না। হঠাত্ করে বাগান বন্ধ করায় প্রায় ১২০০ শ্রমিক-কর্মী ও তাঁদের পরিবার সমস্যায় পড়েছে বলে শ্রমিক নেতারা জানান।
বাগানের শ্রমিক দেবীমায়া ছেত্রীর অভিযোগ, ‘মালিক জ্বালানি কাঠ দেন না। বাগানে ওষুধ বা পানীয় জল পাওয়া যায় না। আমাদের জন্যও চা পাতা দেওয়া হয় না। অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক মিঠু রাই, সুরতি অসুর, বিরসমনি আসুর জানান, অবসরের পরে যেসব সুবিধা পাওযার কথা, সে সবের কিছুই তাঁরা পাচ্ছেন না। তড়িঘড়ি সমস্যা মেটানোর দাবি জোরালো হয়েছে।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2TfofxU
February 26, 2019 at 04:22PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন