সুমন কাঞ্জিলাল, আলিপুরদুয়ার, ২৪ মার্চঃ ভোটের একদিন আগে থেকেই আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্র সংলগ্ন ভারত-ভুটান সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। শনিবার আলিপুরদুযারের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিক শুভাঞ্জন দাসের দপ্তরে এক বৈঠকে এই মর্মে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই বৈঠকে লোকসভা ভোটের সময় আলিপুরদুযারের জঙ্গলমহলে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সংঘাত রুখতেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আলোচনা হয়েছে। ভোটের সময় বাইসন, চিতাবাঘের মতো বন্যপ্রাণীর হামলা প্রতিহত করতে বাইরে থেকে বিশেষ ট্র্যাংকুলাইজিং টিম নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার আলিপুরদুয়ারের ডুয়ার্সকন্যায লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে জেলাশাসক এবং জেলা নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের একটি সমন্বয় বৈঠক হয়। এই বৈঠকে জেলা পুলিশ সুপার সুনীল যাদব, এসএসবি এবং বন দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিক শুভাঞ্জন দাস বলেন, ভোটের একদিন আগে ১০ এপ্রিল এবং ভোটের দিন ১১ এপ্রিল ভারত-ভুটান সীমান্ত সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে ভুটান কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে। ভোটের সময় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ভারত-ভুটান আন্তর্জাতিক সীমান্ত সিল করে দেওয়া হবে। ভুটানের গেটগুলিও বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, এইবার ভোটের সময় ভোটকর্মী এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলি এবং এখান দিয়ে আসা-যাওয়ার পথে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভোটের আগের দিন থেকে এই সমস্ত এলাকায় বন্যপ্রাণীর হামলা রুখতে বিশেষ টিম মোতায়েন করা হবে। এ জন্য বন দপ্তর, পুলিশ ও জেলা প্রশাসন থেকে একজন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে। আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের আটটি থানা এলাকায় থানাভিত্তিক ভাবে এই বিশেষ টিমকে মোতায়েন করা হবে। আমচকা যদি বন্যপ্রাণী হামলা চালায় তা রুখতে কুইক রেসপন্স টিম এবং সেইসঙ্গে ট্র্যাংকুলাইজিং টিমও রাখা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি বন দপ্তরের কাছে এজন্য অতিরিক্ত কর্মী চাওয়া হয়েছে। তাঁরা ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বন্যপ্রাণীদের কাবু করতে পারবেন। জেলাশাসক জানান, এই গোটা ব্যবস্থাটি ইতিমধ্যে রাজ্য বন দপ্তরের শীর্ষকর্তাদের লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
অপরদিকে, জেলা পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, ভারত-ভুটান সীমান্ত সিল করে দেওয়ার বিষয়ে এসএসবির ১৭, ৫৩ এবং ৩৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভোটের সময় বাংলা-অসম সীমান্ত এলাকাতেও কড়া নজরদারি এবং নাকা চেকিং হবে। ভোটের আগে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে পুলিশের অভিযান জারি রয়েছে। ভোটের সময় গণ্ডগোল পাকাতে পারে এমন সন্দেহজনক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন দশ থেকে বারোটি করে ১০৭ এবং ১০৮ ধারায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে। যাদের আগের ভোটে বা অন্য কোনো সময়ে গণ্ডগোল পাকানোর রেকর্ড রয়েছে, তাদেরকে সমন পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে, এ প্রসঙ্গে জেলা বিজেপি সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, জেলা পুলিশ-প্রশাসন বেছে বেছে বিজেপির নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরওয়ানা এবং ১০৭ ধারায় মামলা করছে। আমরা শনিবার এই বিষয়ে দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2CBLust
March 24, 2019 at 02:44PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন