আলিপুরদুয়ারের সাত পঞ্চায়েতে অন্ধকারে কয়েক হাজার বাসিন্দা

সুভাষ বর্মন, শালকুমারহাট, ১৬ মার্চঃ আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের শালকুমার-১ ও ২ , পূর্ব কাঁঠালবাড়ি, পাতলাখাওয়া, মথুরা, পররপাড় ও বিবেকানন্দ-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আগামী লোকসভা ভোটে সবচেয়ে বড়ো ইশ্যু হচ্ছে বিদ্যুৎ। সম্প্রতি প্রশাসনের সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, আলিপুরদুয়ার জেলার এই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মোট ৪৫০টি বাড়ির কয়েক হাজার মানুষ এখনও বিদ্যুৎ পরিসেবা পাননি। কোথাও খুঁটি নেই, কোথাও নেই ট্রান্সফরমার। আবার অনেকে আবেদন করেও বিদ্যুতের মিটার পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় ভোটের মুখে গ্রামে অন্ধকারে থাকা  পরিবারগুলি বিদ্যুতের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।  কেন্দ্র ও রাজ্য বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বারবার দিলেও প্রান্তিক জেলার এই মানুষগুলি এখনও বিদ্যুৎ পেলেন না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই ভোটের প্রচারে গেলে বিজেপি ও তৃণমূল উভয় দলের কাছেই জবাব চাইবেন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। তৃণমূলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি, সবার বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সমীক্ষা হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, এতদিন ক্ষমতায় থেকে বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে না পারা রাজ্যের শাসক দলেরই ব্যর্থতা।

গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের পর ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিশিষ্ট আলিপুরদুযার-১ ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে প্রতিটি গ্রামেই বিদ্যুৎ নিয়ে সমীক্ষা হয়। সেই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯২টি, শালকুমার-২-এ ৫৬টি, পররপাড়ে ৭টি, বনচুকামারিতে ১১০টি, বিবেকানন্দ-২-এ ১৫টি এবং মথুরায় ৩০টি বিদ্যুতের খুঁটি প্রযোজন। সবচেয়েক বেশি খুঁটি দরকার পূর্ব কাঁঠালবাড়িতে। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২৫টি খুঁটি লাগবে। পাতলাখাওয়া, চকোয়াখেতি, তপসিখাতা, বিবেকানন্দ-১ গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বিদ্যুৎহীন পরিবারের তথ্য প্রশাসনের কাছে এখনও জমা পড়েনি। ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪৫০টি পরিবার এখনও বিদ্যুৎহীন রয়েছে। এজন্য প্রযোজন ২২টি ট্রান্সফরমার। ভোট ঘোষণার আগে এই সমীক্ষার তথ্য নিয়ে বিদ্যুৎ দপ্তর ও প্রশাসনের মধ্যে বিডিও অফিসে একটি বৈঠকও হয়। ব্লক প্রশাসন এই পুরো বিষয়টি জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ভোট ঘোষণা হওযায় এখন এনিয়ে আর প্রশাসনিক তত্পরতা নেই।  ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বিদ্যুৎ নিয়ে যা কাজ হওযার ভোটের পর হবে। তবে পূর্ব কাঁঠালবাড়ির মেজবিল-গুদামটারির আদিবাসী মহল্লার পরিমল ওরাওঁ বলেন, ভোট আসে, ভোট যায়। বিদ্যুৎ আর পাই না। এবার বিদ্যুৎ পেলে তবেই ভোট দেব। শালকুমারহাটের কয়েকজন বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে বিজেপি, তৃণমূল সবার কাছেই জবাব চাওযা হবে।

আলিপুরদুযার-১ পঞ্চায়েক সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ তথা কিষান তৃণমূলের জেলা সম্পাদক হরিপ্রসাদ রায় বলেন, সবাই যাতে বিদ্যুৎ পায় সেজন্যই গ্রামে গ্রামে এই সমীক্ষা করা হয়। জেলায় বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। যা হওয়ার ভোটের পর হবে। বিজেপির জেলা সম্পাদক জয়ন্ত রায় বলেন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। এটা রাজ্যের শাসকদলের ব্যর্থতা। তৃণমূলের হরিপ্রসাদ রায় বলেন, বিজেপির এখানে রাজনীতি করার কিছুই নেই। বাম আমলে বিদ্যুদয়নের কাজ সঠিকভাবে হয়নি। তৃণমূলের সরকার গ্রামে গ্রামে উন্নয়ন করেছে।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2FjKwCT

March 17, 2019 at 12:45PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top