ভোটে মেটে না সমস্যা, মুখ ফেরাল সুভাষপল্লি

জলপাইগুড়ি, ২৩ মার্চঃ প্রতিবারই ভোটের আগে নেতারা এলাকায় এসে ভোটভিক্ষা করে যান। অথচ ভোট পেরিয়ে যাওয়ার পরও এলাকার অবস্থা যে কে সেই থেকে যায়। নন্দনপুর-বোয়ালমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সুভাষপল্লির বাসিন্দাদের দাবি, গত দুই দশক ধরে তাঁরা নিয়মমাফিক এমনটাই দেখে আসছেন। তাই দলমত নির্বিশেষে কোনো দলকেই তাঁরা এবারে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এ নিয়ে ইতিমধ্যেই এলাকায় পোস্টার লাগানো চলছে, তেড়ে প্রচারও চলছে। এলাকার সমস্যা না মেটানো ও যাতায়াত ব্যবস্থা না ঠিক করা পর্যন্ত তাঁরা নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন বলে বাসিন্দারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের নির্মল রায় জানান, সুভাষপল্লিতে খড়খড়িয়া নদীর উপর কালভার্ট তৈরির বিষয়ে জেলাপরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতির সঙ্গে তাঁর ইতিমধ্যেই কথা হয়েছে। জেলা নির্বাচনি আধিকারিক তথা জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার আশ্বাস দেন।

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নন্দনপুর-বোয়ালমারির একটি গ্রাম সুভাষপল্লি। খড়খড়িয়া নদী গ্রামটিকে দুভাগে ভাগ করেছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, নদী পারাপার করে সুভাষপল্লির উত্তর অংশে যাওয়ার জন্য মণ্ডলঘাট বাজারের রাস্তায় একটি কালভার্ট তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯৫ সালে সেটি ভেঙে যায়। এলাকার বাসিন্দা বিজয়চন্দ্র বর্মন বলেন, কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ার পরে পঞ্চায়েত, জেলাপরিষদ, বিডিও, জেলাশাসককে চিঠি দেওয়া হলেও তাতে কোনো কাজের কাজই হয়নি। বাধ্য হযে নদী পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকো তৈরি করে কাজ চালাতে হচ্ছে। কিন্তু বর্ষার সময় ওই সাঁকো ভেসে গেলে সুভাষপল্লির উত্তর অংশটি পুরোপুরিভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

ক্ষোভ উগরে এলাকার আরেক বাসিন্দা পুণ্যদেব রায় বলেন, এলাকার সমস্ত সমস্যা মেটানো হবে বলে প্রতিবারই ভোটের সময় নেতারা এসে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। তারপর ভোট মিটে গেলে তাঁদের আর দেখাই মেলে না। তাঁর বক্তব্য, কালভার্ট না থাকায় বর্ষার সময় রোগীদের ভেলা করে নদী পারাপার করাতে হয়। এলাকায় কোনো পাকা রাস্তা না থাকায় যাতায়াতে বাসিন্দাদের খুবই অসুবিধায় পড়তে হয়। পুণ্যদেব বলেন, একারণেই এখানকার বাসিন্দাদের বেশির ভাগ এবারে লোকসভা ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যার জন্য ছেলেমেয়েদের বিয়ে নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। এখানকার বাসিন্দা ফতেমা বেগম বলেন, ছেলেমেয়েদের বিয়ে ঠিক হলেও যাতায়াত সমস্যার জেরে তা ভেঙে যাচ্ছে। তাই এলাকার ছেলেমেয়েদের জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়িতে নিয়ে গিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে তবে বিয়ে দিতে হয়। সবকিছু চিন্তা করেই বাসিন্দাদের একাংশ ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তিনি জানান।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2JAx7KR

March 23, 2019 at 02:31PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top