চা বলয়ের ভোট নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল উদ্বেগ বেড়েছে

আলিপুরদুয়ার ব্যুরো, ১৮ মার্চ ঃ আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনে কে জয়ী হবে তা ভেবে ইতিমধ্যেই বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের স্নাযুর চাপ বেড়েছে। ২০১৬ সালের  বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল এবং ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের টক্করের নিরিখে এটা স্পষ্ট যে এই আসনে মূলত এই দুই দলেরই লড়াই হচ্ছে। দুই দলই এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভা কেন্দ্রগুলির মধ্যে মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রটি নিযে বিশেষভাবে চিন্তাভাবনা চালাচ্ছে। বিশেষ করে, মাদারিহাটের চা বলয়ে ভোটের অঙ্ক নিযে দুই দলই চুলচেরা হিসাব করছে। অন্যদিকে, এই আসনে প্রার্থী হতে চেয়ে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী তথা চা শ্রমিক নেতা বীরেন্দ্র বরা, বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতা জন বারলা, আলিপুরদুয়ার জেলাপরিষদের প্রাক্তন সদস্য অতুল সুব্বা, মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা ও আরএসপির কুমারগ্রাম বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেওয়া মনোজ ওরাওঁ বিজেপি নেতত্বের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, সমস্ত আবেদন রাজ্য কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে।

মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকে বান্দাপানি, ঢেকলাপাড়া, নাংডালা, জয়বীরপাড়ার মতো বহু চা বাগান রয়েছে। এখানকার চা শ্রমিকদের ভোট প্রতিবারই ভোটের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা নেয়। ২৬ আসনবিশিষ্ট মাদারিহাট-বীরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতিতে ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল মাত্র পাঁচটি আসন পায়। সেবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সঙ্গে জোট বেঁধে তৃণমূল বোর্ড গঠন করে। পরে অবশ্য দলবদলের জেরে বোর্ড দখল করে মোর্চার সঙ্গে সম্পর্কে তণমূল ইতি টানে। দলবদল করে জনপ্রতিনিধিরা তৃণমূলে যোগ দিলেও সাধারণ ভোটাররা যে সেবার তৃণমূলে যাননি তা ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রমাণিত হয। বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ২২ হাজার ভোটে জয়ী হন। ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চা বাগানের ভোটাররা বিজেপি প্রার্থীকেই ঝুলি উজাড় করে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাদারিহাট-বীরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির ২৬টি আসনের বেশিরভাগই তৃণমূল দখল করে। চা বাগান এলাকার  লঙ্কাপাড়া পঞ্চায়েছের বোর্ড তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নেয়। হান্টাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েছের ১৪টি আসনের মধ্যে সাতটি, কয়েকটি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলাপরিষদের আসনও তারা বিনা লড়াইয়ে জিতে নেয়। তৃণমূলের মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লক নেতৃত্বের বক্তব্য, মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকে বিজেপির অস্তিত্বই সংকটের মুখে পড়েছে।

তৃণমূলের মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লক কমিটির কার্যনির্বাহী সভাপতি মান্নালাল জৈন বলেন, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বেশকিছু চা বাগান অচল থাকায় বিজেপি তার ফাযদা লোটে। কিন্তু বর্তমানে ডানকানসের সাতটি অচল চা বাগানের মধ্যে ছযটি খুলে গিয়েছে। চা বাগানের শ্রমিকরা যে তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন তা পঞ্চায়েত নির্বাচনে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য সম্পাদক মনোজ টিগ্গা বলেন, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল আগাগোড়া সন্ত্রাস চালানোয় চা বাগানের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের ভোটও বাক্সে প্রতিফলিত  হয়নি। এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে ভোট হবে। তৃণমূলের গা জোয়ারি এবার চলবে না। মাদারিহাটের অন্যান্য ভোটারের মতো চা বাগানের বাসিন্দারাও যে একচেটিয়াভাবে বিজেপির পাশে রয়েছেন তা লোকসভা নির্বাচনে ফের স্পষ্ট হযে যাবে বলে তিনি জানান। মান্নালাল জৈন ও তণমূল যুব কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি সঞ্জয চক্রবর্তী অবশ্য সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িযে দিয়েছেন।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2uaftDh

March 18, 2019 at 12:13PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top