উন্নয়নে ব্যর্থ জেলাপরিষদ, অভিযোগ বিরোধীদের 

ভাস্কর শর্মা, আলিপুরদুয়ার, ২৬ মার্চঃ রেকর্ড সংখ্যক ভোটে জয়ী হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস আলিপুরদুয়ার জেলাপরিষদ গঠন করলেও বোর্ড গঠনের পর থেকে আজ পর্যন্ত সময়কালে শাসকদল সেভাবে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারেনি বলে অভিযোগে বিরোধীরা সরব হয়েছে। বেশিরভাগ এলাকার রাস্তা, কালভার্ট, পানীয় জল সহ একাধিক পরিসেবা ভেঙে পড়েছে বলে তারা অভিযোগ জানিয়েছে। বিজেপি, বামফ্রন্টের মতো বিরোধী দলগুলি এই বিষয়গুলিকে ভোটের ইশ্যু করে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে। জেলাপরিষদ কর্তারা অবশ্য বিরোধীদের এই দাবি মানতে চাননি। ক্ষমতায় আসার পর তাঁরা রেকর্ড সংখ্যক কাজ করেছেন বলে দাবি জানিয়েছেন।

২০১৪ সালে জেলা হওয়ার সময় আলিপুরদুয়ার জেলাপরিষদ বামেদের দখলে ছিল। পরবর্তীতে অবশ্য তৃণমূল বামেদের টিকিটে জয়ী সদস্যদের দল ভাঙিয়ে নিজেদের দিকে নিয়ে এসে জেলাপরিষদ দখল করে। মোহন শর্মা সেই সময় জেলাপরিষদের সভাধিপতি হন। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল অবশ্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জেলাপরিষদ দখল করে। তারা ১৮টি আসনের মধ্যে ১৭টিতে জয়ী হয়। শীলা দাস সরকার নতুন সভাধিপতি নির্বাচিত হন। বিরোধীদের অভিযোগ, জেলাপরিষদ বোর্ড গঠনের পর এই দেড় বছর সময়কালে তৃণমূল আলিপুরদুয়ারের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে সেভাবে কোনো উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করতে পারেনি।

অভিযোগ, জেলাপরিষদের তৈরি করা রাস্তাগুলির হাল খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে। ছয়টি ব্লকেই বিভিন্ন রাস্তা বেহাল হয়ে রীতিমতো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। পুরোনো কিছু রাস্তা সংস্কার করা হলেও গত বর্ষায় সেগুলি ভেঙেচুরে একাকার হয়েছে। পরিষদ প্রযোজনীয় নতুন রাস্তা তৈরিতেও ব্যর্থ বলে অভিযোগ উঠেছে। ফালাকাটা, মাদারিহাট, কুমারগ্রামের মতো জায়গার পাশাপাশি সারা জেলাতেই অসংখ্য কালভার্ট ভাঙা অবস্থাতে থাকলেও সেগুলি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, সারা জেলাজুড়েই পানীয় জল পরিসেবা অন্যতম বড়ো সমস্যা হিসাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষ করে জেলার প্রত্যন্ত সমস্ত এলাকা ও চা বাগানগুলিতে পানীয় জলের জন্য রীতিমতো হাহাকার চলছে। এই সমস্ত সমস্যা নিয়ে বিরোধীরা লোকসভা ভোটের আগে সরব হয়েছে।

বিজেপির আলিপুরদুয়ারের সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কাউকে ভোট না দিতে দিয়ে জেলাপরিষদ দখল করে। কিন্তু ক্ষমতা দখলের পরও তারা উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করতে পারেনি। গঙ্গাপ্রসাদবাবুর দাবি, তৃণমূল পরিচালিত জেলাপরিষদ জেলায় রাস্তা থেকে পানীয় জল, শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ। তিনি বলেন, এসবই আমরা ভোটের প্রচারে তুলে ধরছি। সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল পরিচালিত জেলাপরিষদ যে কোনো কাজই করতে পারেনি তা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরলে বোঝা যাবে। মানুষ ব্যালটের এর জবাব দেবে বলে কৃষ্ণবাবু আশা করছেন।

বিরোধীদের সব অভিযোগ উড়িয়ে আলিপুরদুযার জেলাপরিষদের সভাধিপতি শীলা দাস সরকার বলেন, কিছুদিন হল ক্ষমতায় এলেও আমরা সারা জেলায় উন্নয়নমূলক নানা কাজকর্মে উদ্যোগী হয়েছি। ইতিমধ্যেই বেশকিছু কাজ শেষ হয়েছে। বাদবাকি কাজ ভোটের পরই শেষ হবে বলে সভাধিপতি জানান। তিনি বলেন, আমাদের এসব সাফল্যকে আমরা ভোটারদের কাছে তুলে ধরায় তাঁরা ভালোভাবে সাড়াও দিচ্ছেন।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2HHmaoS

March 26, 2019 at 04:00PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top