স্বাধীনতার পর থেকে পাকা রাস্তা দেখেনি ঠুটাপাকড়ি-ডুবানুচি

ফাঁসিদেওয়া, ৫ মার্চ ঃ  গ্রাম আছে, রাস্তাও আছে। তবে সে রাস্তা আজ পর্যন্ত কোনোদিনও পিচ বা কংক্রিট ঢালাইয়ের মুখ দেখেনি। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ঘোষপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েছের ঠুটাপাকড়িবস্তি ও ডুবানুচি খালপাড়া এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা রাস্তাটি জন্ম থেকে আজও পর্যন্ত স্রেফ বালি-পাথরকে সঙ্গী করেই জীবন কাটিযে দিয়েছে। কিন্তু সময় তো জেটের গতিতে এগোচ্ছে। মুঠোফোনে বন্দি দুনিয়া য়খন প্রতিনিয়ত সবাইকে আরও ভালো থাকার বার্তা দিচ্ছে সেখানে কাঁচা রাস্তায় যাতায়াতে রোজকার সমস্যা কেই বা মেনে নেয়! ঠুটাপাকড়ি-ডুবানুচিও কীভাবে ব্যতিক্রমী হয়! হয়ওনি। অবিলম্বে পাকা রাস্তা চেয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জোরালো দাবি জানিয়েছেন। লোকসভা ভোটের আগে তাঁদের এভাবে ফুঁসে ওঠা অন্য বার্তা দিচ্ছে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। নিজেদের টাকায় এই রাস্তা সংস্কার সম্ভব নয় বলে ঘোষপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নারায়ণ সিংহ অবশ্য স্পষ্টভাবে জানিযে দিয়েছেন। তবে বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগেও তিনি সরব হয়েছেন। নারায়ণবাবুর কথায়, গ্রামের ভিতরে থাকা ছোটো রাস্তাগুলি তৈরিতে বাসিন্দাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল। বাসিন্দারা সেটি করতে বাধা দেন। তাই আজও এলাকার রাস্তা পাকা হয়নি। তবুও সমস্যা মেটাতে চেষ্টাও চলছে বলে তিনি জানান।  প্রধান নারায়ণবাবু বলেন, রাস্তাটি পাকা করতে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জাতীয় সড়ক দিয়ে ঠুটাপাকড়িবস্তি-ডুবানুচি খালপাড়া ঢুকতে গেলে প্রথমেই ঠুটাপাকড়ি বস্তি পড়বে। এখানে কয়েকশো মানুষের বাস। এখান থেকেই বেহাল কাঁচা রাস্তাটি শুরু হচ্ছে। তারপর চা বাগানকে সঙ্গী করে সেই রাস্তা এগিয়ে গিয়েছে। বাগান শেষ হতেই ডুবানুচি খালপাড়া শুরু হচ্ছে। এখানে তুলনামূলকভাবে একটু বেশি মানুষের বসবাস। প্রায় তিন হাজার। তবে গোটা রাস্তাতেই কোথাও পিচ বা কংক্রিটের ঢালাইয়ের লেশমাত্র নেই। বালি-পাথরের এই রাস্তা দিযে চলতে গেলে মনে হতেই পারে এখানে যুগ কয়েক কদম পিছিয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, এই রাস্তায় চলাচলে প্রতিনিয়ত সমস্যা লেগে থাকে। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও প্রতিকূল হয়ে দাঁড়ায়। সমস্যার বিষয়টি জানা থাকা সত্ত্বেও মেটাতে কেউই এগিযে আসেন না বলে বাসিন্দারা অভিযোগে সরব হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, আজীবন তো এই রাস্তাটিই দেখে যাচ্ছি। হেঁটে চলাচলে রীতিমতো সমস্যা হয়। সাইকেল বা বাইক নিযে চলাচলের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উলটে পড়ে অনেকেই জখম হয়েছেন। এসব দেখেও সমস্যা মেটাতে ডান-বাম কোনো সরকারই এগিযে আসে না বলে তিনি অভিযোগ জানান। চড়া সুরে এলাকার আরেক বাসিন্দা রজত সিংহের বক্তব্য, বর্ষাকালে বাইরের কেউ যদি এই রাস্তায় চলাচলের চেষ্টা করেন, বুঝবেন প্রকৃত সমস্যা কাকে বলে! জলকাদায় ভরা রাস্তা পেরোতে জীবন রীতিমতো জেরবার হয়ে যায়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার এত বছর বাদেও ঠুটাপাকড়ি-ডুবানুচি পাকা রাস্তা দেখেনি। স্বপ্ন একদিন সফল হবে বলেই বাসিন্দারা মনেপ্রাণে স্বপ্ন দেখেন।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2NJwkWk

March 06, 2019 at 01:32PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top