নিউজটা ছিল ১২ মার্চের। তবে বিষয়টা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় খুব ফলাও করে প্রচার না হলেও পাকিস্তানের ভেতরে ছিল আলোচিত বিষয়। তবে হঠাৎ করেই ভিডিওটা প্রকাশ হলো সোশ্যাল মিডিয়ায়। অবশেষে ভাইরাল। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে খুব নিচু স্তরের কথা বলছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি। রীতিমত কটাক্ষ করে গেছেন বাংলাদেশকে। নামিয়ে দিয়েছেন অনেক নিচে। আরব আমিরাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান পাকিস্তানের সিরিজের জন্য পিসিবি বিশ্রাম দিয়েছেন ছয়জন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারকে। যাদের মধ্যে রয়েছেন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদও। এমন একটি সিরিজের আগে এই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেয়া যুক্তিযুক্ত হয়েছে কি না? এক সংবাদ সম্মেলনে আফ্রিদির কাছে জানতে চাওয়া হয় এই বিষয়ে। তখন ওই প্রশ্নের জবাবে আফ্রিদি বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে আনেন এবং তার বক্তব্যে বাংলাদেশকে খুব ছোট করে উপস্থাপন করেন। আফ্রিদি বলেন, দেখুন, সিরিজটা যদি বাংলাদেশ বা জিম্বাবুয়ের মতো র্যাংকিংয়ের ষষ্ঠ-সপ্তম বা অষ্টম দলের সঙ্গে হতো, তাহলে না হয় বোঝা যেত যে, বিশ্বকাপের আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেয়ার যৌক্তিকতা আছে; কিন্তু সিরিজটা অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী এক দলের সঙ্গে। বিশ্বকাপের আগে এমন শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেললে ওই সব গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সের কারণেই হয়তো আমরা বেশকিছু ম্যাচ জিততাম, যেটা বিশ্বকাপের আগে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিত। আমার মনে হয় তারা দলের সঙ্গে থাকলেই ভালো হতো। এমন তো না যে তারা ১৫-২০ বছর ক্রিকেট খেলেছে, তারাও তো কয়েক দিন আগে থেকেই খেলা শুরু করেছে। তাই তাদের দলে রাখলেই বোধহয় ভালো হতো। ইচ্ছা করেই এবং স্বজ্ঞানে শহিদ আফ্রিদি তার বক্তব্যে বাংলাদেশকে টেনে এনে এবং এ দেশের ক্রিকেটকে ছোট করে বক্তব্য দিয়েছেন। কারণ, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিচার করলেও আফ্রিদির এই বক্তব্য কোনোভাবেই মানায় না। এই তো মাত্র কিছুদিন আগেও এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। এমনকি মাত্র কয়েক দিন আগেও আইসিসি র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের পেছনে ছিল আফ্রিদির দেশ পাকিস্তান। বিশ্বকাপে সরাসরি যে আটটি দল খেলবে এবং ওই আট দল নির্ধারণের যে সময়সীমা ছিল (২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর), ওই সময় পাকিস্তান একবার বাংলাদেশের পেছনে চলে গিয়েছিল। কিছুদিনের জন্য বাংলাদেশ র্যাংকিংয়ে চলে এসেছিল ৬ নম্বরে। পাকিস্তান ছিল বাংলাদেশের পেছনে, আট নম্বরে। এখনও পাকিস্তানের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বাংলাদেশ। তারা রয়েছে ছয়ে, বাংলাদেশ সাতে। আফ্রিদির ক্যারিয়ার যখন তুঙ্গস্পর্শী অবস্থায়, তখন না হয় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল অনেক পেছনে এবং পাকিস্তান ছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। কিন্তু ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের সময় থেকে ক্রিকেট বিশ্ব দেখছে এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে। এরপর ৯বার পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে ৬বারই জিতেছে টাইগাররা। মুখ নিচু করেই মাঠ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। নয় ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান খেলেছে তিনটি টি-টোয়েন্টি, চারটি ওয়ানডে আর দুটি টেস্ট। দুটি টেস্টের একটি ড্র ও একটিতে জিতলেও ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পাচ্ছে না পাকিস্তান। তিন টি-টোয়েন্টির দুটিতেই হেরেছে, হেরেছে চারটি ওয়ানডের প্রত্যেকটিতে। এমনকি আফ্রিদি নিজেও হারের স্বাদ পেয়েছিলেন বাংলাদেশের কাছে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফরে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সফরকারীদের অধিনায়ক ছিলেন আফ্রিদি। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানকে এবং ওই ম্যাচেই জন্ম নিয়েছিলেন বাংলাদেশের আজকের সেনসেশন এবং বিশ্বে এক নামে পরিচিত কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। এসব লজ্জাজনক পরাজয়ের কথা হয়তো বেমালুম ভুলে গেছেন আফ্রিদি কিংবা অন্তরের কোনে বাংলাদেশ নিয়ে পুষে রাখা বিদ্বেষ থেকেই হয়তো এই দেশের ক্রিকেটকে এমন কটাক্ষ করে কথা বলতে পারলেন তিনি। সূত্র: জাগো নিউজ২৪ আর এস/ ২৫ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HQM8Ws
March 25, 2019 at 10:41PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top