গৌতম সরকার, মেখলিগঞ্জ, ১৮ মার্চঃ গ্রামে একটা পাকা সেতু তৈরির দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেক দিনের। একথা অজানা নয় এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের। তাই প্রতিটি ভোটের আগে সেতুর দাবির বিষয়ে তাঁরা আশ্বাস দিতে ভোলেন না। আশ্বাস মিললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এমনটাই অভিযোগ মেখলিগঞ্জ ব্লকের নিজতরফ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কুশলডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁরা বলেন, গ্রামের তিনদিক কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। বেড়ার ওপারেই রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। আর সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় এমনিতেই নানা সমস্যায় জর্জরিত কুশলডাঙ্গা এলাকাটি। তার উপর গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া সানিয়াজান নদীর উপর পাকা সেতু না থাকায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
গ্রামের মানুষের পাকা সেতুর দাবি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে কয়েক মাস আগে ব্লক প্রশাসনের একটি প্রতিনিধিদল এলাকা পরিদর্শনও করেছেন। কিন্তু এরপর আর কিছুই হয়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তাই সেতুর দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন সীমান্ত এলাকার মানুষ।
গ্রামের বাসিন্দাদের বক্তব্য,পাকা সেতু না থাকায় তাঁদের যে কী সমস্যা হচ্ছে সেটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। শুকনো মরশুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করলেও বর্ষা শুরু হলেই এই পথে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন অনেকটা ঘুরপথে চলতে হয়। সেটাও আবার যেতে হয় কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষা সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর চলাচলের রাস্তা দিয়ে। দিনেরবেলা সীমান্তের নির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া গেলেও সূর্যের আলো নিভে যাওয়ার পরে ওখান দিয়ে চলাচল নিষিদ্ধ।
এই অবস্থায় সানিযাজান নদীর উপর পাকা সেতু তৈরি হলে অনেকটাই সুবিধা হবে বলে মহেশ বর্মন, রতন রায় প্রমুখ বাসিন্দা মনে করছেন। অনেকের বক্তব্য, বড়ো সেতু তৈরি করা না হলেও দুই পাশে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর প্রস্থ কমিয়ে তারপর ছোটো সেতুও তৈরি করা যেতে পারে। এই কুশলডাঙ্গা এলাকার মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া সানিয়াজান নদীর ওপারে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে প্রচুর মানুষের বাস। প্রতিনিযত নানা কাজে তাঁদের এপারে আসতে হচ্ছে। কারণ এপারেই স্কুল, কলেজ, বাজারঘাট সবকিছু। শুকনো মরশুমে তাঁরা বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে এপারে আসেন।
গ্রামের মানুষ বলেন, এই এলাকার অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষিকাজ। কাঁটাতারের বেড়ার ভিতরেও অনেকের চাষের জমি রয়েছে। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে তাঁদের কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে সমস্যা হচ্ছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নদীতে বন্যা হলে তাঁদের ঘুরপথে চলতে হয়। কিন্তু দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে সীমান্তের ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গেলে তাঁদের মাঝেমধ্যে প্রহরারত বিএসএফ জওয়ানদের নানা কৈফিয়ত দিতে হয়। এই সময় রাতে হঠাৎ কারও দরকার পড়লেও গ্রাম থেকে বাইরে সহজে বেরিয়ে আসা সম্ভব হয় না।
ওই এলাকার মানুষের দাবি ও সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন নিজতরফ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুনীল রায় নিজেও। তাঁর কথায, নদীতে জল যখন কম থাকে সেই সময় বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল করলেও নদীতে জল বাড়লে বাসিন্দাদের যাতায়াতে সমস্যা হয়। তাই ওখানে একটা সেতুর খুব দরকার। এই বিষয়ে ইতিপূর্বে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। ওই এলাকার মানুষের দাবির কথা যথাযথ স্থানে জানানো হয়েছে বলে মেখলিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মৃত্যুঞ্জয় রায় জানিয়েছেন।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2HEYdOv
March 18, 2019 at 01:53PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন