শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা, ১৩ মার্চঃ তৈরি চায়ের গুণগতমান নিশ্চিত করতে শুখা মরশুমে টানা দুমাস কাঁচা পাতা তোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিলই। মরশুম চালু হতে ফার্স্ট ফ্লাশের কাঁচা পাতা কোন পদ্ধতিতে উৎপাদনের কাজে লাগাতে হবে, সেটাও জানিয়ে দিল টি বোর্ড। পাবলিক নোটিশ জারি করে কাঁচা পাতার ট্রিটমেট বা ব্যবহার সংক্রান্ত ওই নির্দেশিকা বাগানগুলিকে জানানো হয়েছে।
টি বোর্ড বাগানগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে, কাঁচা পাতার মান বা বৈশিষ্ট্য কীরকম হবে, তা নিয়মিত বোর্ডের পক্ষ থেকে য়েমন জানিয়ে দেওয়া হয় সেটাই বাগানগুলিকে মেনে চলতে হবে। বাগান থেকে পাতা তোলার পর তা ফ্যাক্টরিতে নিয়ে য়েতে হবে দিনে অন্তত দু’দফায়। চা মহল জানাচ্ছে, বটলিফ ফ্যাক্টরিগুলিতে কাঁচা পাতা গাড়িতে ঠাসাঠাসি করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে একবারেই নিয়ে আসার রেওয়াজ রয়েছে। এর ফলে পাতার মান খারাপ হয়। টি বোর্ড ঠিক এই বিষযটিতে রাশ টানতে চাইছে। এছাড়াও ট্রাক, ট্র্যাক্টর বা পিকআপ ভ্যানের মতো গাড়িতে স্তূপ করে কাঁচা পাতা নিয়ে আসার পরিবর্তে পাতা বহনের ব্যাগে করে নিয়ে আসার নির্দেশ দেওযা হয়েছে। তাও ওই ব্যাগগুলি গাড়িতে তিনটি স্তরের বেশি রাখা যাবে না। প্লাকিং বা পাতা তোলার পর তা যথাসময়ে মধ্যেই যাতে ফ্যাক্টরিতে চলে আসে সেটাও সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। কাঁচা পাতার পরিবহণ যাতে ফ্যাক্টরিগুলির মাধ্যমেই করা হয়ে থাকে সেটাও জানানো হয়েছে। বটলিফ ফ্যাক্টরিগুলি যাতে বিবর্ণ, কোঁচকানো বা খুঁতযুক্ত পাতা না নেয় তেমন নির্দেশও দিয়েছে টি বোর্ড। ফুড সেফটি স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)-র গাইডলাইন মেনে চলা ও রাসায়নিক ব্যবহারের ওপর টি বোর্ড অনুমোদিত রাসায়নিক যাতে ব্যবহার করা হয়, তা মেনে চলার কথা স্মরণ করিয়ে দেওযা হয়েছে। পাবলিক নোটিশে বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে কোনো সময টি বোর্ড বাগানগুলি থেকে উৎপাদনের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠাবে। ওই খরচ বহন করতে হবে বাগানগুলিকেই। পরীক্ষায় যদি নির্দিষ্ট গুণগতমান পাস করতে না পারে তবে সংশ্লিষ্ট বাগান বা ফ্যাক্টরির বিরুদ্ধে টি বোর্ড আইন অনুযাযী পদক্ষেপ করবে। চা মালিকদের সংগঠন টি অ্যাসোসিয়েন অফ ইন্ডিয়ার (টাই) ডুয়ার্স শাখার সম্পাদক রামঅবতার শর্মা বলেন, উচ্চ গুণগতমানের উৎপাদন ছাড়া প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা মুশকিল। এজন্য টি বোর্ড যে সব অবস্থান নিচ্ছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে সব কিছু বাস্তবায়িত করতে গেলে পরিকাঠামোগত উন্নয়নেরও প্রযোজন। এজন্য কিছু সময় লাগবে। ডিবিআইটিএর সম্পাদক সুমন্ত গুহঠাকুরতা বলেন, টি বোর্ড যখন যেমন নির্দেশিকা দিয়েছে, আমরা সেটাই পালন করে এসেছি। এক্ষেত্রেও কোনো অন্যথা হবে না। জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, কাঁচা পাতা সহ তৈরি চায়ের মানোন্নয়নে বোর্ডের পদক্ষেপ এককথায় নজিবিহীন। তবে এক্ষেত্রে কড়া নজরদারি যাতে সারা বছর ধরেই থাকে সেই দাবি জানাচ্ছি। টি বোর্ডের জলপাইগুড়ি জোনের উপনির্দেশক চন্দ্রশেখর মিত্র বলেন, দেশের উৎপাদিত চায়ের গুণগতমান বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য। নয়া নির্দেশিকা তারই অঙ্গ।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal https://ift.tt/2UARdWr
March 14, 2019 at 01:19PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন