কলকাতা, ১১ মার্চ- তাঁর বাড়িতে লুচি-আলুর দম খেতে গিয়েছিলেন মুকুল রায়। বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের বাড়িতে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সেই আগমন ঘিরে গত দুদিন ধরে তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। তিনি দাবি করেন, মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর দাদা-ভাইয়ের সম্পর্ক। জল্পনা উস্কে ওঠে লোকসভা ভোটের আগেই তৃণমূল ছাড়ছেন সব্যসাচী দত্ত? বারাসত থেকে বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন তিনি? এই পরিস্থিতিতে তাঁর তৃণমূ্ল ত্যাগ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন সব্যসাচী দত্ত। স্পষ্ট ভাষায় সাফ জানালেন, দলে ছিলাম, দলে আছি, দলে থাকব। এদিন বিকেল ৩টেয় শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে দলের তরফে বৈঠক ডাকা হয়। সেই বৈঠকের পর পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও দমকলমন্ত্রী তথা বিধাননগর বিধায়ক সুজিত বসুকে পাশে নিয়ে বিধাননগরের মেয়র সাফ খারিজ করে দেন, দলত্যাগের সম্ভাবনার কথা। স্পষ্ট জানান, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসে আছেন। তৃণমূল কংগ্রেসেই থাকবেন। এরপরই তিনি মিডিয়ার সামনে শুক্রবার সন্ধ্যার ফোনালাপ ও ঘটনাক্রম তুলে ধরেন। সব্যসাচী দত্ত জানান, ঠাকুরনগরে আড়াই রাত্রি দলের সঙ্গে জেগেছিলেন তিনি। আড়াই রাত্রি ঠাকুরনগরে জেগে কাজকর্ম করার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখন তাঁর কাছে একটা ফোন আসে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ফোনটা আসে। তাঁর বদদোষ, তিনি সবার ফোন-ই ধরেন। তাই সেই ফোনটিও তিনি রিসিভ করেন। ফোন ধরতেই ওপ্রান্ত থেকে একজন হ্যালো বলেন। পাল্টা হ্যালো বলেন সব্যসাচী দত্ত। তারপর কথোপকথন ঠিক এরকম এগোয়- আমি দাদা বলছি। কে দাদা? আমি মুকুলদা বলছি। কোথায় আছিস? আমি সল্টলেকে এসেছি। অনেকদিন তোদের সঙ্গে দেখা হয় না। তাই তোদের সঙ্গে একবার দেখা করতে যাব। মিডিয়াকে সব্যসাচী বলেন, স্বাভাবিকভাবেই পূর্ব পরিচিতির সুবাদে ও সৌজন্যতা এবং ভদ্রতার খাতিরে তিনি আপত্তি করেননি। মুকুল রায়কে আসতে না বলেননি। এরপর বাড়িতে এসে মুকুল রায় সবার খোঁজখবর নেন। তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রাণী দত্তের সঙ্গেও কথা বলেন। জানতে চান, ইন্দ্রাণী কেমন আছ? এরপরই খিদে পেয়েছে জানিয়ে ইন্দ্রাণীকে লুচি-আলুরদম বানাতে বলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। সব্যসাচী জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রাণী দত্ত যখন লুচি-আলুর দম বানাচ্ছিলেন, সেইসময় ইন্ডিয়া-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ চলছিল। বিরাট কোহলি আউট হন। খেলা নিয়েই কথা হচ্ছিল তাঁদের মধ্যে। পাশাপাশি, নানুর-চম্পাইতলা নিয়েও কথা হয়। কিন্তু, দল নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়নি। এরপর খাওয়া শেষে মুকুল রায়কে এগিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন সব্যসাচী দত্ত। বিধাননগরের মেয়র এদিন সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন, বাড়ির নীচে যে সেদিন সংবাদমাধ্যম দাঁড়িয়েছিল, তার বিন্দুবিসর্গ তিনি জানতেন না। তিনি কোনও মিডিয়াকে ডাকেননি। এমনকি ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও সুজিত বসুকে পাশে নিয়ে অত্যন্ত জোরের সঙ্গে সব্যসাচী দত্ত দাবি করেন, কেউ যদি বলতে পারেন আমি ডেকেছি, তাহলে যা শাস্তি দেবে দল, আমি মাথা পেতে নেব। এরপরই বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত জোর গলায় বলেন, দলে ছিলাম, দলে আছি, দলে থাকব।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HpDHRB
March 11, 2019 at 06:35AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top